ইনসাইড আর্টিকেল

এশিয়ার বিভিন্ন দেশে কোরবানি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 09/07/2020


Thumbnail

পবিত্র ঈদুল আযহা মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসবগুলোর মধ্যে অন্যতম। পবিত্র এই ঈদে মহান রাব্বুল আলামীনের উদ্দেশ্যে কোরবানি করা হয়ে থাকে। তবে  দেশভেদে কোরবানির পদ্ধতি এক হলেও উৎসব পালনে খানিকটা বৈচিত্র্য দেখা যায়। একেক দেশে একেক ধরনের পশুর প্রাধান্য থাকে। পশু সংগ্রহের পদ্ধতিতেও রয়েছে ভিন্নতা। সেইসাথে কোরবানির ক্ষেত্রে প্রতিটি দেশের নিজস্ব কিছু স্বকীয়তা আছে। তাই চলুন এশিয়ার কিছু দেশে কোরবানির রীতি সম্পর্কে জেনে নেই।

সিঙ্গাপুর

সিঙ্গাপুরের মোট জনসংখ্যার ১৩ শতাংশ মুসলমান। সেখানে কোরবানির প্রায় তিন মাস আগে কোরবানির পশুর জন্য নিকটতম কোনো মসজিদের মাধ্যমে দরখাস্ত করতে হয়। সরকার অস্ট্রেলিয়া থেকে পশু এনে সেই মসজিদে হস্তান্তর করে। কোরবানি দাতা মসজিদের কাছে কোরবানি করে গোশতের কিছু অংশ নিজের জন্য নিয়ে আসে। বাকিটা অন্য মুসলমানদের জন্য মসজিদেই রেখে আসে। মসজিদ থেকেই এই গোশত গরিবসহ অন্য মুসলমানদের মধ্যে বণ্টন করা হয়।

ইন্দোনেশিয়া

আয়তনে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া। এখানে পশু কোরবানি করা হয় সামাজিকভাবে। সামর্থ্যবান ব্যক্তিরা হাট থেকে কোরবানির পশু কিনে মসজিদে দিয়ে আসে। মসজিদ এলাকায় কতগুলো পরিবার আছে তার হিসাব ইমামের কাছে থাকে। ঈদের নামাজের পর সবাই মিলে কোরবানির পশু জবাই করে। এরপর যত ঘর আছে মাংস তত ভাগে ভাগ করে সবার ঘরে দিয়ে আসা হয়। তবে যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো, তারা তা না নিয়ে গরিবদের দিয়ে দেয়।

মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়াতেও সমাজবদ্ধভাবেই কোরবানি করা সবার পছন্দ। স্থানীয় মসজিদে কোরবানি করে গোশতও একসঙ্গে বণ্টন করা হয়। ইদানিং মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াতে বিলাসী কোরবানির হাট গড়ে উঠেছে। এগুলোকে হাট না বলে কোরবানির পশুর শো রুমই বলা হয়! ধনী ক্রেতারা ওই সব শোরুমে ভিড় করে। ল্যাপটপ ও ট্যাব হাতে সেলসম্যান থাকে। চড়া দামে কেনে পশু। এ ছাড়া মাংস বণ্টন প্রক্রিয়া ইন্দোনেশিয়ার মতো মসজিদ থেকে পরিচালনা করা হয়।

কাতার

কাতারে বিলাসী ক্রেতাদের জন্য অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নিউজিল্যান্ড, ইরান ও তুরস্ক থেকে কোরবানির পশু আনা হয়। পশুর দাম প্রতিবছর প্রায় একই থাকে। মূল্যের তারতম্য খুব একটা হয় না। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোরবানির পশুর বাজার ও কোরবানি সংক্রান্ত অন্যান্য বাজার তদারকি করা হয়। কোরবানিকে কেন্দ্র করে রাজধানী দোহা, মদিনাতুল খালিফা, ওকরাহ প্রভৃতি শহরে ভিন্ন রকম তৎপরতা দেখা যায়।

সৌদি আরব

পবিত্র হজ ও কোরবানি এই দুইয়ে মিলে সৌদিতে ঈদুল আজহার উৎসব বেশ জমকালোভাবে পালিত হয়। প্রচলিত রীতি ও নিয়ম অনুযায়ী সৌদির জনগণ ও বহিরাগত হাজিরা ঈদুল আজহা পালন করেন। ঈদের নামাজের পর খুব সকালে পরিবারের সবাই মিলে কোরবানির জন্তু জবাই দেখে। জবাইয়ের পর সেখান থেকে অল্প কিছু কোরবানির গোশত বাড়িতে এনে রান্না করা হয়। নাশতা শেষে শিশুরা প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে যায়। সাধারণত পরিবারের প্রবীণদের সঙ্গে সবাই সাক্ষাৎ করে।

আরব আমিরাত ও কুয়েত

কাতার, আমিরাত, বাহরাইন, কুয়েত প্রভৃতি দেশে কোরবানির পশু কেনার আধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে। অনেকে ভিডিও কলের মাধ্যমে পশু দেখে ক্রয় করে। আবার অনেক বড়লোক আনন্দের সঙ্গে ঘটা করে কোরবানির হাটে যায়। ঈদুল আজহার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় মোট তিন দিন বেশ আনন্দ করে কোরবানির পশু জবাই করে এখানকার বাসিন্দারা। প্রতিবেশীদের কাছে গোশত বিতরণ করে। নিজেদের ঘরে-বাইরের মানুষকে দাওয়াত করে। যেসব প্রবাসী থাকে, তাদের জন্য এই তিন দিন বেশ আনন্দের।

লেবানন

ঈদ আসার আগে থেকেই শুরু হয় ধোয়া-মোছা, পরিচ্ছন্নতা, আসবাবের পরিবর্তন, সাজসজ্জা, সুগন্ধি বিতরণ ও মিষ্টান্ন খাবার তৈরির আবেশ। মসজিদগুলোতে নতুন বাতি, হজ ও ঈদের শুভেচ্ছা বাণীর প্ল্যাকার্ড ইত্যাদি লাগানো হয়। গ্রামাঞ্চলও নতুন করে সাজানো হয়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭