কালার ইনসাইড

নতুন পরিচয়ে বাজিমাত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 09/07/2020


Thumbnail

সুশান্ত সিং মারা গেলেন সেটা বলিউডের এই সময়ের সবচেয়ে আলোচ্য বিষয়। কাঁদা ছোড়াছুড়ি করে অনেকেই আলোচনায় এসেছেন। তাছাড়া হুটহাট লাইভে এসে কিছু বলে আলোচনায় আসা তো রয়েছেই। তবে এই করোনাকালে ঘরবন্দি থেকেও অনেকে তার কাজের মাধ্যমেও আলোচনায় এসেছেন। এই তারকারা নিজেদের নতুন পরিচয় দাঁড় করিয়েছেন। বলিউডের এমন আলোচিত কয়েকজনকে নিয়েই আজকের আয়োজন।

আনুশকা শর্মা

অভিনেত্রী হিসেবে পুরোমাত্রার বাণিজ্যিক ছবি করলেও প্রযোজক আনুশকা শর্মা ব্যতিক্রম। ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’,‘জব তক হ্যায় জান’-এর মতো বাণিজ্যিক ছবির অভিনেত্রী আনুশকা শর্মা ২০১৫ সালে ‘এনএইচ১০’ বানিয়ে চমকে দিয়েছিলেন। ছোট বাজেটের ছবিটি ছিল একেবারেই ভিন্ন ঘরানার। ব্যবসার সঙ্গে সমালোচকদের ব্যাপক তারিফ পেয়েছিল। প্রযোজক আনুশকার পরের দুই ছবি ‘ফিল্লাউরি’ ও ‘পরী’ হরর ঘরানার। প্রযোজক হিসেবে আনুশকার ‘পাতাল লোক’ পেয়েছে অন্যমাত্রা। প্রচারের পর থেকেই ভারতের অন্যতম আলোচিত ওয়েব সিরিজে পরিণত হয়েছে।

‘পাতাল লোক’ দিয়ে ভারতীয় ওয়েবের ইতিহাস নতুন করে লিখেছেন আনুশকা শর্মা। আমাজন প্রাইমে প্রচারিত তাঁর প্রযোজিত সিরিজটি অনেকের মতে ভারতের সেরা ওয়েব সিরিজ। মাস ঘুরতেই নতুন কাজ নিয়ে হাজির আনুশকা। তাঁর প্রযোজিত ওয়েব ছবি ‘বুলবুল’ ২৪ জুন নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে। অতটা আলোচনায় না আসলেও প্রশংসিত হয়েছে ওয়েব সিরিজটি।

বছরের শুরুতেই নেটফ্লিক্স ঘোষণা দিয়েছিল, তাদের সঙ্গে ৯টি প্রজেক্টের চুক্তি হয়েছে আনুশকার।

কীর্তি সুরেশ

দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার দর্শকদের কাছে কীর্তি সুরেশ পরিচিত নাম। হালে নায়িকা হিসেবে নাম কুড়ালেও কীর্তির শুরুটা শিশুশিল্পী হিসেবে। বাবা ছিলেন প্রযোজক, মা অভিনেত্রী। সেই সূত্রেই ২০০০ থেকে বছর পাঁচেক শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করেন। এরপর পড়াশোনার জন্য ছাড়েন সিনেমার কাজ। ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে পড়া শেষে ২০১৩ সালে প্রিয়দর্শনের হরর-সিনেমা ‘গীতাঞ্জলি’ দিয়ে নায়িকা হিসেবে অভিষেক।  অভিনেত্রীর নতুন ছবি ‘পেঙ্গুইন’। ইশাভার কার্তিকের ছবিটি সরাসরি প্রিমিয়ার হয়েছে আমাজন প্রাইম ভিডিওতে। থ্রিলার ছবিটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। জাতীয় পুরস্কার পাওয়া ‘মহন্তি’র সাফল্য এই সিনেমায়ও ধরে রেখেছেন। এটা এক মায়ের হারানো সন্তান খোঁজার গল্প। খুবই চ্যালেঞ্জিং চরিত্র। একজন প্রেগনেন্ট নারীর চরিত্রে তিনি দারুণ অভিনয় করেছেন। কম বাজেটের সিনেমা এই প্রথম তার। এই গল্পটি ছিলো তাকে ঘিরেই।

তৃপ্তি দিমরি

নিয়মিত যাঁরা বলিউড ছবির খোঁজ রাখেন তাঁরা হয়তো তৃপ্তিকে চিনেছেন ‘লায়লা মজনু’ দিয়ে। ইমতিয়াজ আলীর চিত্রনাট্যে ছবিটিতে তৃপ্তির অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয়েছিল। তৃপ্তি বলিউড পরিবারের কেউ নন, সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে। অভিনয়ের দিকে বাবার ঝোঁক ছিল। সেটিকেই কাজে লাগিয়ে এই জগতে আসেন তৃপ্তি। ২০১৭ সালে ‘পোস্টার বয়েজ’ সিনেমায় ছোট একটি চরিত্র করেন। তবে মূল চরিত্র পান ‘লায়লা মজনু’তে। বলিউডের পরিচিত গীতিকার ও চিত্রনাট্যকার অনভিতা দত্তর পরিচালনা ও আনুশকা শর্মার প্রযোজনায় ‘বুলবুল’ ওয়েব সিরিজে অভিনয় করে দারুণ প্রশংসিত হয়েছেন। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকেই শক্তিশালী নারী চরিত্র পাওয়ায় ভীষণ খুশি তৃপ্তি। আর আনুশকার সঙ্গে কাজ করে তো গর্বের শেষ নেই।

অদিতি রাও হায়দারী

হায়দরাবাদের মেয়ে। ক্যারিয়ারও শুরু দক্ষিণে। ২০০৬ সালে প্রথম ছবি মালয়ালাম। পরের ১৪ বছরে তামিল, তেলেগু, মারাঠি, হিন্দিসহ নানা ভাষায় ছবি করেছেন। শুরুর দিকে ততটা সাফল্য না পেলেও হালে অদিতি রাও হায়দারির সিনেমা ভালোই ব্যবসা করেছে দক্ষিণে। তবে কখনোই ব্যাপক আলোচিত হতে পারেননি। অনেক সমালোচকই তাঁকে সেই সব দুর্ভাগা অভিনেত্রীর একজন বলেই মনে করেন, যাঁরা যোগ্যতার চেয়ে কম স্বীকৃতি পান। এক যুগেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে সুধীর মিশ্র, রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরা, সঞ্জয়লীলা বানসালি, মণিরত্নমদের মতো পরিচালকের ছবিতে কাজ করেছেন। বলিউডে বেশির ভাগ সময়ই অভিনয় করেছেন পার্শ্বচরিত্রে। ‘দিল্লি ৬’, ‘খুবসুরত’, ‘রকস্টার’, ‘ফিতুর’ বা ‘পদ্মাবৎ’ প্রশংসিত হলেও সেসব প্রশংসার কমই জুটেছে অদিতির কপালে। সঞ্জয় দত্তর সঙ্গে ‘ভূমি’ করলেও ছবিটি তেমন চলেনি। অদিতির ভাগ্য কিছুটা বদলাতে থাকে ২০১৭ থেকে। অভিষেক তামিল ছবি ‘কাটরু ভেলিইডাই’ দিয়ে সিমা [সাউথ ইন্ডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল মুভি অ্যাওয়ার্ড] পুরস্কার জেতেন। ছবিতে কার্থির সঙ্গে প্রধান নায়িকার চরিত্র করেন। পরের বছর তেলেগু ‘সাম্মোহনম’ ও ‘অ্যান্টারিকসম ৯০০ কেএমপিএইচ’-এও ছিলেন প্রধান চরিত্রে। টানা তিন ছবির সাফল্যের পর একক নায়িকা হিসেবে অনেক ছবি পান। এ বছরের শুরুতে তামিল সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার ‘সাইকো’তে রেডিও জকির চরিত্র করে প্রশংসা পান।

অভিনেত্রীর নতুন ছবি ‘সুফিয়ুম সূর্যতায়ুম’। মালয়ালাম ছবিটি মুক্তির কথা ছিল আগেই। করোনার কারণে শেষ পর্যন্ত ৩ জুলাই প্রিমিয়ার হয়েছে। মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো প্রেমের গল্প আছে এখানে। অদিতির অভিনয় বেশ আলোচনায় এসেছে। নারানিপূজা শানাভাসের ছবিটিতে অদিতির সঙ্গে আছেন জয়সূর্য। এ ছাড়া এ বছর অতিদির ‘দ্য গার্ল অন দ্য ট্রেন’-এর হিন্দি রিকেম মুক্তি পাওয়ার কথা।

অভিষেক ব্যানার্জি

বাঙালির ছেলে অভিষেক বড় হয়েছেন দিল্লিতে। অভিনয়ের কোনো প্রথাগত শিক্ষা নেই, তবে কলেজ থেকেই করছেন থিয়েটার। বছর দশেক ধরে টুকটাক কাজ করছেন বলিউডে। পরে ক্যারিয়ার গড়েন কাস্টিং ডিরেক্টর হিসেবে। কিন্তু ‘স্ত্রী’ ছবিতে মজার চরিত্র করে নজরে পড়ে যান অন্য কাস্টিং ডিরেক্টরদের। এরপর আরো কয়েকটি ছবিতে ছোটখাটো চরিত্র করেন। সেখান থেকে একেবারে ‘পাতাল লোক’-এ। এই ওয়েব সিরিজে সিরিয়াল কিলার ‘হাতোড়া ত্যাগী’ রাতারাতি তাঁকে বলিউডের অন্যতম আলোচিত ব্যক্তিতে পরিণত করেছে।

অভিনয়ের সঙ্গে কাস্টিং ডিরেক্টরের কাজটাও সমান তালে করতে চান ‘কলঙ্ক’, ‘টয়লেট-এক প্রেমকথা’, ‘দ্য ডার্টি পিকচার’সহ অনেক ছবির কাস্টিং ডিরেক্টর অভিষেক।

কীর্তি কুলহারি

পার্শ্ব চরিত্র করেও আলোচনায় কীর্তি কুলহারি। এখন সুযোগ পাচ্ছেন প্রধান চরিত্রেও। আমাজন প্রাইমের ওয়েব সিরিজ ‘ফোর মোর শটস প্লিজ!’ করে এখন তিনি আলোচনায়। মুম্বাই শহরের চার নারীর গল্প নিয়ে সিরিজটি, যেখানে সিঙ্গল মাদার অঞ্জনা মেননের চরিত্র করেছেন কীর্তি। এবারের সিজনে অঞ্জনাকে দেখা গেছে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে। কীর্তি কুলহারি সম্পর্কে ভালো খবর হলো, গেল কয়েক বছরের আলোচিত তিন ছবি ‘পিংক’, ‘উরি-দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’, ‘মিশন মঙ্গল’-এ তিনি ছিলেন। কিন্তু এসব ছবিতে তিনি ছাড়াও অন্য তারকারা ছিলেন। তবে ছোট চরিত্র করেও ঠিকই নজর কাড়েন কীর্তি। একই ব্যাপার গেল বছরের ওয়েব সিরিজ ‘বার্ড অব ব্লাড’-এর ক্ষেত্রেও। ইমরান হাশমির মতো তারকা থাকলেও সমালোচকদের মতে সিরিজের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি কীর্তির অভিনয়। সমালোচকদের এ আস্থা অর্জনে অনেক সময় লেগেছে। ২০০২ সালে ওড়িয়া সিনেমা দিয়ে অভিষেকের পর বলিউডে প্রথম কাজ ২০১০ সালে। এরপর বিজ্ঞাপন করেছেন, কিন্তু বড় পর্দায় মনে রাখার মতো কোনো কাজ নেই। কীর্তি চমকে দেন ২০১৬ সালে, ‘পিংক’ দিয়ে। এই সিনেমার সাফল্য দিয়েই প্রথমবারের মতো কেন্দ্রীয় চরিত্র পান। করেন মধুর ভাণ্ডারকরের ‘ইন্দু সরকার’।

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭