ইনসাইড হেলথ

যে রোগগুলোর সাথে আমাদের নিয়মিত বসবাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 12/07/2020


Thumbnail

সারা বিশ্ব জুড়ে চলছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন করোনাকে নিয়েই আমাদের বসবাস করতে হবে। কারণ খুব সহসা ভাইরাসটির ভ্যাক্সিন আসছে না। কমপক্ষে আগামী বৎসর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এই নিয়ে আমাদের উৎকণ্ঠার যেন কোন শেষ নেই। কিন্তু এই সমস্ত সংক্রামক ব্যাধীর বাইরে বেশ কিছু রোগের সাথে অনেকেরই নিয়মিত বসবাস। এই রোগগুলো নিয়েই বেঁচে থাকছি আমরা। তবে চিকিৎসকরা এসব বিষয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। চলুন এমন কিছু রোগের সম্পর্কে জেনে নেই।


মাইগ্রেন
মাথা ধরার নানা রকমভেদ আছে। যে মাথা ধরাতে বিবমিষা বা বমি হয় কিংবা আলোর দিকে তাকাতে খুব অসুবিধা হয়, তাকে মাইগ্রেন বলা হয়। মাইগ্রেনে মাথা টন টন করে। অনেক সময় সেই টন টনে ব্যথাটা মাথার একদিকে হয়। মাইগ্রেন সাধারণত হঠাৎ করেই শুরু হয়। তবে সেটা কেউ কেউ আগে থেকেই টের পায়। সাধারণত ছোট বয়স থেকে মাঝ বয়সের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দেয়। আরও কয়েকটা লক্ষণীয় বিষয় হল। মাইগ্রেন ছেলেদের থেকে মেয়েদের বেশী হয়। সেইসাথে অনেক সময় এর পারিবারিক সূত্র থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মেয়েরা গর্ভবতী অবস্থায় কম মাইগ্রেনে ভোগে। ফলে সবকিছু মিলিয়ে অনেকেই মাইগ্রেন নিয়ে বসবাস করে।


গ্যাস্ট্রিক
গ্যাস্ট্রিক ‘গ্যাস্ট্রোইন টেস্টাইনাল ট্র্যাক্টের’ প্রদাহ যা পাকস্থলী এবং ক্ষুদ্রান্ত্রের সাথে জড়িত। গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণগুলির মধ্যে ডায়রিয়া, বমি ও পেটে ব্যথা থাকতে পারে। এমনকি জ্বর, শক্তির অভাব এবং পানিশূন্যতা ঘটতে পারে। এটি সাধারণত দুই সপ্তাহের কম সময় থাকে। এটি পাকস্থলীর ফ্লু নামে অভিহিত হলেও ইনফ্লুয়েঞ্জার সাথে সম্পর্কিত নয়। গ্যাস্ট্রিক ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, পরজীবী এবং ছত্রাকের দ্বারা সংক্রমণের কারণ হতে পারে। তবে সাধারণত ভাইরাসের মাধ্যমেই গ্যাস্ট্রিকের সংক্রমণ হয়। অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, দূষিত পানি পান করা বা সংক্রমিত ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করতে পারে। সাধারণত রোগ নির্ণয় করার জন্য কোন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হয় না। অনেক সময় নিজেরাই বুঝতে পেরে ট্যাবলেট খেয়ে নেন। ফলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যাও অনেকে দীর্ঘমেয়াদে বহন করে চলে।


জ্বর, সর্দি
জ্বর সর্দিকে অনেক ক্ষেত্রেই রোগ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। এগুলোকে বিভিন্ন রোগের উপসর্গ হিসেবে দেখা হয়। অনেকেই সর্দি সর্দিতে আক্রান্ত হন। অনেক সময় সর্দি তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে গেলেও কাশি সহজে ভালো হতে চায় না। অনেক ক্ষেত্রে জ্বর নেই, কফ বের হওয়া নেই। বুকে ঘড়ঘড় নেই, কিন্তু খুকখুক কাশি। বিরক্তিকর ও যন্ত্রণাদায়ক একটি ব্যাপার। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বারবার শুকনো কাশির কারণ ফুসফুসে সংক্রমণ, নিউমোনিয়া, যক্ষ্মা ইত্যাদি নয়, বরং অন্য কিছু। তবে কারণ যাই হোক। শীতে ঠান্ডা লাগলে এর তীব্রতা কয়েক গুণ বেড়ে যেতে পারে। অনেক সময় কাশতে কাশতে গলায়, বুকে ব্যথা হয়ে যায়। এই রকম জ্বর সর্দির আমাদের অনেকেরই সবসময়ের জন্য লেগে থাকে। এগুলো নিয়েই বসবাস করতে হয়।


হাইপারটেনশন
হাই ব্লাড প্রেশার হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ নামে পরিচিত। এমন অবস্থার তখনই সৃষ্টি হয় ।যখন আর্টারিতে রক্তের অনেক প্রেশার থাকে। একজন ব্যক্তির ব্লাড প্রেশার রিডিং যখন ১৪০/৯০ mm Hg বা এর চেয়েও বেশি হয়। তখন তাকে বলা হয় হাইপারটেনশন। একে সাইলেন্ট কিলারও বলা হয়ে থাকে। কেননা যদি সঠিক সময়ে এর চিকিৎসা করা না হয় তাহলে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হতে পারে। এমনকি কিডনি ফেইলিওরও হতে পারে। সেইসাথে কোন সিম্পটম্প দেখা যাবে না। কিন্তু তারপরও অনেকেই এই সমস্যা নিয়ে সচেতন থাকেন না।


এলার্জি, এ্যাজমা ও শ্বাসকষ্ট
এলার্জি, এ্যাজমা/হাপানি এবং শ্বাসকষ্ট এই বিষয়গুলি একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠ। এলার্জির তীব্রতা বাড়লে এ্যাজমা আক্রান্ত রোগীদের অনেক সময় শ্বাসকষ্টও বেড়ে যায়। তাই এমন সমস্যায় থাকা ব্যক্তিদের নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করাই উচিত। অনেক ক্ষেত্রে শুধু নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করলেও এ সমস্যার তীব্রতা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। এই সংক্রান্ত রোগীদের চলাফেরা, ওঠাবসা, খাবার-দাবার এক কোথায় জীবনযাত্রার সকল বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি। এই সমস্ত রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা আরও বেশি সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। চিকিৎসকদের মতে, এসব রোগ একটা সময় বড় ধরণের স্বাস্থ্য ঝুঁকির সৃষ্টি করে থাকে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭