ইনসাইড এডুকেশন

করোনায় শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন বৈষম্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 12/07/2020


Thumbnail

প্রাণঘাতী করোনা সংকটের শুরু থেকেই চলছে শিক্ষা সংকট। স্কুল, কলেজ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়। কোথায় নেই এমন সংকট। অনেকেই এই সংকটকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করছেন। সংকটের সাথে এবার নতুন করে যুক্ত বৈষম্য। প্রাণঘাতী করোনা সংকটের কারণে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা ভেঙে শুরু হল অনলাইন ক্লাশ। অবশ্য এমন পাঠদান কার্যক্রম শুরু করার আগেই সংসদ টিভির মাধ্যমে দূরবর্তী শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়। অনলাইন ক্লাশ এবং দূরবর্তী শিক্ষা কার্যক্রম- এই দুই ব্যবস্থায় করোনাকালীন এই সময়ে তৈরি হয়েছে নতুন বৈষম্য। আর এতে করে শিক্ষার্থীদের মধ্যেও এক ধরণের হীনমন্যতা ও মানসিক চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে এমনটা নিশ্চিত হওয়া গেছে।

শিক্ষা বৈষম্য

করোনা সংকটের মাঝামাঝি সময়ে যখন অনলাইন ক্লাশ চালুর বিষয়ে কথা উঠে। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান অনলাইন ক্লাশে যাচ্ছেন না বলে জানান। তিনি প্রত্যন্ত গ্রামে থাকা শিক্ষার্থীরা অনলাইন পাঠদানে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না বলে উল্লেখ করেন। সেইসাথে অনেক শিক্ষার্থীদের এমন পাঠদান কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হওয়ার মতো প্রযুক্তি যন্ত্রপাতি নেই বলেও উল্লেখ করেন। উনার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ প্রশংসা পায়। কিন্তু সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন অনলাইনে ক্লাশ নিচ্ছে। ইন্টারনেট এক্সেস না থাকায়, ক্লাশ করতে পারছেন না এমন বেশ কয়েকজনের সাথে কথা হয়। তাদের অনেকেই বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকেও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে এই বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়ে পোষ্ট করতে দেখা যায়।

মানসিক চাপ

অনলাইন ক্লাশ নিয়ে কথা বলার সময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীদের উদ্বিগ্নতা লক্ষ্য করা যায়। তারা জানান, ভিডিও ফোন, কম্পিউটার বা ইন্টারনেট এক্সেস না থাকার কারণে তারা ক্লাশে অংশ নিতে পারছেন না। ফলে এই বিষয়ে একটা মানসিক অস্থিরতার মধ্যে আছে তারা। সেইসাথে ক্লাশে অংশ নিচ্ছে এমন কয়েকজনও এই ধরণের শিক্ষা কার্যক্রমের কার্যকারিতা নিয়ে যথেষ্ট দ্বিধান্বিত। তাদের একজন জানান, এভাবে দায়সারা অনলাইন ক্লাশের মাধ্যমে না হয় পাঠদান হল। কিন্তু পরীক্ষা হবে কিভাবে, সেইসাথে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন উঠছে কার্যকারিতা নিয়ে। সেইসাথে শিক্ষার মান নিয়ে। সেইসাথে আরও বেশ কিছু সমস্যার কথাও জানান তারা। এসবের মধ্যে দুর্বল ইন্টারনেট কানেকশন, অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা পরিবেশসহ আরও কিছু সমস্যা রয়েছে।

সুবিধা বঞ্চিত

সরকারি হিসেবে, প্রাথমিক স্কুল আছে ৬৪ হাজার। আর সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে মাধ্যমিক স্কুল আছে আরও ১৭ হাজারের মতো। আর কলেজ বা মহাবিদ্যালয় আছে প্রায় আড়াই হাজার। সব মিলিয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি। এর মধ্যে অল্প একটি অংশই এই করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইনে শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। আর টিভি দেখার সুযোগ আছে সব মিলিয়ে ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থীর। বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রমের আওতার বাইরেই রয়ে গেছে। তবে জানা যায়, কারা ইন্টারনেট ও টিভির আওতায় আছে। বাসায় কার কোন ধরণের ফোন আছে সে সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এটি ঠিক যে অনেকেই ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমের সুযোগ থেকে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। তবে এখানে সামর্থ্যের বিষয় জড়িত। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসেবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের অর্ধেকের মতো শিশু টিভি সুবিধার আওতায় আছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭