ইনসাইড আর্টিকেল

চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ ৩০ বৎসরের বয়সসীমা কি যৌক্তিক!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 13/07/2020


Thumbnail

চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি, বেলা শুনছো? এখন আর কেউ আটকাতে পারবেনা, সম্বন্ধটা এইবার তুমি ভেস্তে দিতে পারো, মা-কে বলে দাও বিয়ে তুমি করছো না। গানে গানে এভাবেই প্রেমিকাকে চাকরির খবর জানান শিল্পী অঞ্জন দত্ত। খুবই জনপ্রিয় বাংলা গান। হয়তো অনেকেই অঞ্জনের মতো চাকরির খবর জানাতে চান। চাকরি পাওয়ার আনন্দ ভাগ করে নিতে চান প্রিয় মানুষটির সাথে। কিন্তু চাইলেই তো আর অঞ্জন হওয়া যায় না। চাইলেও তো আর ত্রিশের পর চাকরি পাওয়া যায় না। চাকরি পাওয়া তো দূরের কথা বরং আবেদনের যোগ্যও বিবেচিত হওয়া যায় না। কিন্তু চাকরির বয়স ত্রিশ করার কি সত্যিকার অর্থেই কোন রকম যৌক্তিকতা আছে।


বিভিন্ন দেশে চাকরির বয়স
চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়স ৫৫ বছর রাখা হয়েছে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে। এ দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, আরব আমিরাত, বাহরাইন, অস্ট্রেলিয়া, মালায়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কাতার, ওমান, কুয়েতসহ বেশ কয়েকটি দেশ। সুইডেনে চাকরির বয়স ৪৭ বছর। চাকরির বয়স ৪৫ বছর যথাক্রমে ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলঙ্কা। আর উত্তর আমেরিকায় ৫৯ বছর বয়সেও একজন নাগরিক সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করতে পারেন। ভারতে এই বয়সসীমা ৩৫ বছর। ইতালি, কাতার ও তাইওয়ানেও এই একই বয়সসীমার মানুষ সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করতে পারেন। ইতালিতেও চাকরির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর। ফলে, বাংলাদেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ বছর কাম্য হতে পারে না। বর্তমানে সরকার নার্সদের চাকরিতে প্রবেশের বয়স যেমন ৩৫ বছরে উন্নীত করেছে। একইসাথে বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়েও চাকরিতে প্রবেশে কোন বয়সসীমা নেই।    


কর্ম ক্ষমতা
বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু এখন ৭০ বৎসরের উপরে। আর গড় আয়ুর সাথে তাল মিলিয়ে বাড়ছে অবসরের বয়সসীমা। কিন্তু চাকরিতে প্রবেশে রেখে দেওয়া হয়েছে প্রতিবন্ধকতা। ৩০ বৎসরের পর চাকরিতে প্রবেশ করতে না পারার মানে অর্থ কি? ত্রিশের পর কি আমাদের কর্মক্ষমতা থাকে না! বিষয়টা কি এই রকম। আর যদি এই রকম নাই হয়। তাইলে এমন প্রতিবন্ধকতা কেন? এই বয়সসীমার কারণে তরুণরা হতাশ হয়ে পড়ছে। তারা তাদের ইচ্ছে মতো ভালোলাগার পেশায় বা জীবিকায় যেতে পারছে না।


শিক্ষায় বয়স
চাকরিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ বৎসর। যদিও এর পিছনে যুক্তি কি? তা জানা যায় না। সেইসাথে জানা যায় না, এর ভালো দিকও। ত্রিশ বৎসরের অনেক বড় একটা অংশ কেটে যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের গড়ে ২৪ থেকে ২৫ বৎসর লেগে যায়। এর বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড টাইম, সেইসাথে ডিপার্টমেন্টে ড্রপ খাওয়া থেকে শুরু করে শিক্ষা বিরতি ও সেশন জটে আরও অনেক বেশি সময় কেটে যায়। তাছাড়া, বিশেষ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এই সমস্যা যেন আরও প্রকট। ফলে এই অল্প সময়ের মধ্যে ক্যারিয়ার গুছাতে গিয়ে অনেকেই ভেঙে পড়েন। আর মানসিক চাপের মধ্যে তো কম বেশি সবাই থাকেন। এভাবে আমাদের তারুণ্যের মুল্যবান সময় কাটছে এখন হতাশায়। অথচ শুধু বয়সটা তুলে নিলেই তারা প্রত্যেকে নিজেদের মনের মতো চাকরিতে প্রবেশ করতে পারছে। সেইসাথে দেশের কর্মসংস্থান ও অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারছে। চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন করতে দেখা গেছে। অবশ্য চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা একটা সময় বাড়তে পারে বলে জানা যায়।      



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭