নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 15/07/2020
তেরো-চৌদ্দ বৎসরের ছেলের মতো পৃথিবীতে এমন বালাই আর নেই। ‘ছুটি’ গল্পে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই উদ্ধৃতি আমরা প্রায়ই দিয়ে থাকি। কৈশোর মানেই জীবনের একটা ধাপ থেকে আরেকটা ধাপে যাওয়ার প্রস্তুতি। ইংরেজিতে থার্টিন থেকে নাইন্টিন পর্যন্ত প্রতিটি শব্দের শেষে টিন কথাটি রয়েছে। এই টিন মানেই কৈশোর বা বয়ঃসন্ধি কাল। এই সময়ে ছেলে মেয়েরা একটা শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের ভিতর দিয়ে যায়। এই সময়টা জীবনে এক রুপান্তরের সময়। শৈশবের খোলস ছাড়িয়ে কৈশোরে ডানা মেলার সময়। এই পরিবর্তন কন্ঠস্বর ও দৈহিক থেকে শুরু করে প্রভাব ফেলে মনোজগতেও। এই আলোড়নে আমরা কখনো ভুল করে ফেলি। গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে স্রেফ অজ্ঞতাবশত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। যা পরবর্তীতে দারুনভাবে ভুগায়। তাই এই সময়ে সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হয় অভিভাবকদের। সেইসাথে সকলেরই রয়েছে অল্প বিস্তর করণীয়।
শারীরিক পরিবর্তন
কৈশোরে ছেলেমেয়ে সকলেই একটা শারীরিক পরিবর্তনের ভিতর দিয়ে যায়। এই সময়ে ছেলেদের দাঁড়ি গোঁফ গজাতে শুরু করে। সেইসাথে কণ্ঠস্বরে একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। অনেক সময় গম্ভীর বা রুক্ষ মনে হয়। কিংবা এই বয়সে তাদের কণ্ঠস্বর শুনলে মনে হতে পারে আপনার সাথে বেয়াদবি করছে। কিন্তু বিষয়টা সত্যিই এমন নয়। এখানে তাদের ইচ্ছেকৃত কোন বিষয় থাকে না। বরং যা ঘটে তা পুরোটাই জৈবিক বিষয়। সেইসাথে এই সময়ে ছেলেদের শুক্রাণুও তৈরি হতে শুরু করে। শারীরিক এই পরিবর্তনগুলো এই সময়ে খুব স্বাভাবিকভাবেই ঘটতে শুরু করে।
মানসিক পরিবর্তন
বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শারীরিক পরিবর্তনগুলোই মানসিক পরিবর্ত নের কারণ হয়। ফলে এই অল্প বয়সেই একজন শিশু মানসিকভাবে অনেকখানি ভেঙে পড়ে। যেমন যখন ছেলেদের দাঁড়ি গোঁফ কিংবা শরীরের নিন্মাঙ্গে লোম গজাতে শুরু করে। তখন সে অনেকটাই বিমর্ষ হয়ে পড়ে। শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া শুক্রাণুর ক্ষয় কিংবা স্বপ্নদোষ হলে ভয় পেয়ে থাকে। একই সমস্যা দেখা যায় ঠিক বিপরীত লিঙ্গের ক্ষেত্রে। এই সময়ে মেয়েরা আর আগের মতো আঁটসাঁট জামা পড়তে পারে না। স্বাভাবিক সংকোচের কারণে সেইসাথে বক্ষবন্ধনী কিংবা ওড়না ব্যভার শুরু করে। অথচ এই ধরণের পোশাকে সে কিন্তু আগে অভ্যস্ত ছিল না। আর এই সকল কারণে ছেলে এবং মেয়ে উভয়েরই একটা সহজাত ও স্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটে। মনো বিজ্ঞানীদের মতে এই সময়ে শারীরিক পরিবর্তনের চেয়ে মানসিক পরিবর্তনটা সবচেয়ে ক্ষতিকর। কারণ এই সময়ে লজ্জা, ভয়, সংকোচ, আত্মসম্মানবোধ, সাহস ইত্যাদি বিষয়গুলো ব্যাপকভাবে কাজ করে। তাই অভিভাবকদের সতর্ক থাকা উচিত।
খেয়াল সবার আগে
এই সময়ে নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে স্থির রাখতে হবে। সেইসাথে নেতিবাচকতা ঝেড়ে ফেলে দিতে হবে। মনের উদ্যমের জন্য যা করা দরকার, করতে হবে। নিজেকে গুটিয়ে রাখা চলবে না। নিয়মিত হাঁটা, সময়মতো খাওয়া দাওয়া, নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করতে হবে। সুস্থ শরীর, সুন্দর ও কর্মচঞ্চল মন বজায় থাকলে নিজের অন্যান্য কাজও ভালোভাবে হবে। এই বয়সে চেষ্টা করতে হবে নতুন কিছু শেখার। সাঁতার, ড্রাইভিং বা কোন বাদ্যযন্ত্র। সামনে আসা সুযোগগুলোকে নিজের মতো করে কাজে লাগাতে হবে। সবসময় নিজের খেয়াল রাখতে হবে।
বন্ধু হয়ে ওঠা
এই সময়ে অভিভাবকদের উচিত সন্তানের বন্ধু হয়ে উঠা। সন্তানের কৈশোরকালীন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা। তাঁকে সবকিছু বুঝিয়ে বলা। বন্ধুর মতো পাশে থাকা।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭