ইনসাইড টক

‘ভ্যাকসিনের জন্য এখনই লবিং-বুকিং শুরু করা উচিৎ’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 03/08/2020


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, ‘এ বছরের মধ্যেই করোনার ভ্যাকসিন এসে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন যে, ভ্যাকসিন চূড়ান্তভাবে যখন মানুষের ব্যবহারের জন্য ছাড়া হবে, তখন উন্নত বিশ্বের বড় বড় দেশগুলোই হয়তো আগে আগে ভ্যাকসিন নিয়ে নেবে। আমরা এই ভ্যাকসিন পাবো কি পাবো না তা নিয়ে একটা সংশয় তৈরি হয়েছে। তবে আমি বলবো যে, ভ্যাকসিন আমরা পাবো, এ নিয়ে সংশয়ের কিছু নেই। সরকারের কাছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আমার আবেদন ভ্যাকসিনটা যেন আসার সাথে সাথে আমরা পাই সেজন্য যেন এখন থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। লবিং বা বুকিং যেটারই দরকার হোক না কেন এখন থেকেই যেন সেটা শুরু করা হয়। বাজারে আসার পরপরই আমরা যেন ভ্যাকসিনটা পেয়ে যাই।’ বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিদিনের আলাপচারিতায় অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশ এবং সংস্থাই করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে ২২টি মোটামুটি চূড়ান্ত ধাপে আছে। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনটি রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মর্ডানা আছে, চীন এবং রাশিয়ার ভ্যাকসিনও ফাইনাল ট্রায়াল চালাচ্ছে। এই ভ্যাকসিনগুলো নিয়ে আমরা আশাবাদী।`

চীনের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল বন্ধ হওয়ার বিষয়ে ডা. আব্দুল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশে একটা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চালাতে চেয়েছিল চীন। বিএমআরসি অনুমোদনও দিয়েছিল। কিন্তু একটা পর্যায়ে আমরা দেখলাম এই ট্রায়ালটা আর হচ্ছে না। এটা দুটো রাষ্ট্রের বিষয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়টা দেখছে। সবদিক বিবেচনা করেই তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনটি নিয়ে আশাবাদী। যেহেতু তারাও ফাইনাল স্টেজে রয়েছে। পাশাপাশি মর্ডানাও আছে। তারাও ৩৫ হাজার মানুষের উপর ট্রায়াল চালাবে। চীন রাশিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশ আছে। সবগুলো ভ্যাকসিনের বিষয়েই বলা হচ্ছে, সেগুলো ভালো ফল দিচ্ছে। যদিও ফাইনাল ট্রায়ালের ফলাফল পাওয়ার আগে চূড়ান্তভাবে কিছুই বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা আশাবাদী যে এবছরই ভ্যাকসিন পেয়ে যাবো। বিশেষ করে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের কথা বলা হচ্ছে যে, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যেই বাজারে এসে যাবে। শেষমেশ এতটা দ্রুত সম্ভব না হলেও এই বছরের শেষ নাগাদ ভ্যাকসিনটি হয়তো মানুষের হাতে চলে আসবে।’

ডা. আব্দুল্লাহ বলেন, ‘যেসব দেশের মাথাপিছু আয় ৪ হাজার মার্কিন ডলারের কম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুসারে তাদের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাওয়ার কথা। যেহেতু বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ৪ হাজার ডলারের কম তাই বাংলাদেশও বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাবে বলে আশা করি। তবে যদি টাকা খরচ করেও কিনতে হয়, তবেও খুব বেশি চিন্তিত না হলেও চলবে। কারণ অক্সফোর্ড জানিয়েছে মাত্র এক কাপ কফির দামে তাদের ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। অর্থাৎ তাদের ভ্যাকসিনের দাম খুবই কম। তাই ভ্যাকসিন নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।`

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সবাইকে সতর্ক করে বলেন, `ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত জনগণ যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, সচেতন থাকে। এমনকি ভ্যাকসিন আসার পরেও কেউ যেন গা ছাড়া ভাব না দেখায়। কারণ একটি ভ্যাকসিনের শতভাগ কার্যকারিতা নিশ্চিত হতে কয়েক বছরও লেগে যেতে পারে। তাই আমি বলবো ভ্যাকসিন নয়, বরং আপনার সুরক্ষা আপনার হাতে। আপনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। সচেতন থাকুন।’

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭