ইনসাইড থট

‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিশন’ গঠনের যৌক্তিকতা স্পষ্ট হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 05/08/2020


Thumbnail

বাংলা ইনসাইডারে প্রকাশিত ৩ আগস্ট মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডাঃ সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী ও ৫ আগস্ট সিনিয়র সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুলের তথ্যনির্ভর রচনায় মূলত বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্র উন্মোচনে ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিশন’ গঠনের যৌক্তিকতা ও গুরুত্বই সামনে তুলে ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যে আরও অনেকে স্ব-উদ্যোগে এই বিষয়ে কাজ করেছেন যেগুলো এখন একসাথে সঙ্কলিত করে যাচাই-বাছাই করে নিলে সরকারের চিন্তাকে সহযোগিতা করতে পারবে।  

আমরা জানি গত বছর (২০১৯) ৩ জুলাই চীন সফররকালে বেইজিঙে একটি নাগরিক সংবর্ধনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, “বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে, এবার যারা মূল পরিকল্পনাকারী ছিল তাদেরও বিচার করা হবে” (সূত্রঃ ডিবিসি নিউজ অনলাইন, ৪ জুলাই, ২০১৯)। আমরা সবাই জানি এই দাবীটি বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের। শুধু দাবী নয় প্রত্যাশাও, কারণ যারা ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে তাদের কিছু সদস্যের বিচার হয়েছে, কেউ কেউ দণ্ডপ্রাপ্তও হয়েছে, আর কিছু সদস্য বিদেশে প্রকাশ্যে ও লুকিয়ে আছে, তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার চেষ্টা সরকারের পক্ষ থেকে অব্যাহত আছে। কিন্তু সাধারণের মনে একটি প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে এই কাজটি তো আর ওইদিন ভোর রাতেই হয়নি এর পেছনে দীর্ঘদিনের একটি পরিকল্পনা আছে। কিন্তু সে পরিকল্পনার পেছনের ও সামনের মানুষ কারা? এর আগে সে বছরের ২৪ এপ্রিল জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, “আওয়ামী লীগ চতুর্থবার সরকার গঠন করার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পূর্বে ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে অনেক তথ্য পায়। এসব তথ্য থেকে দেখা যায়, পরোক্ষভাবে দেশি-বিদেশি কিছু লোক ও সংস্থা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে অন্য পরিকল্পনাকারীদের চিহ্নিত করার জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়টি সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে”(সূত্রঃ একুশে টি ভি অনলাইন, ২৪ এপ্রিল ২০১৯)। 

২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট এক অনুষ্ঠানে মাননীয় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর আদালতে বিচার কার্যক্রম শেষ হলেও এখনো হত্যার পরিকল্পনাকারীদের বিচার হয়নি” (সূত্রঃ দৈনিক সমকাল, ১৮ আগস্ট ২০১৯)। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে এই বিষয়টি আলোচনায় আসছে কারা এই ঘটনার পেছনে ছিল, তাদের পরিচয় কি? ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের সংঘটনকালের তদন্ত ও বিচারের ফলে সংঘটনকারীদের সম্পর্কে জানা গেলেও এই কাজের মূল হোতারা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করে বেশ কিছু বাস্তবিক গবেষণা ও নানা পর্যায়ের অনুসন্ধানের ফলে যেসব তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে তাতে একটি ‘কমিশন’ গঠন করে সব তথ্য সংগ্রহ করে স্বতঃসিদ্ধ সিদ্ধান্তে আসা কঠিন নয়। 

একই অনুষ্ঠানে মাননীয় আইনমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারের প্রধান কৌঁসুলি হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতা বর্ণণা করে বলেন, “মামলা নিয়ে বিচারকদের বিব্রতবোধের বিড়ম্বনার পাশাপাশি তথ্য ও দলিলাদি সংগ্রহ করতে আমাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে সরাসরি হত্যাকারীদের আমরা বিচারের আওতায় আনতে পেরেছি। কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে মূল পরিকল্পনাকারীরা” (সূত্রঃ প্রথম আলো, ১৮ আগস্ট ২০১৮)। ফলে আমাদের উদ্বেগ, সময় যত যাবে পরিকল্পনাকারীদের তথ্য সংগ্রহে জটিলতাও হয়তো বাড়বে কারণ সে চক্রের উত্তরসুরীরা এখনও তথ্য মোচনে ও ইতিহাস বিকৃতিকরণে যথেষ্ট সক্রিয়, তাই ‘কমিশন’ গঠনের কাজ এখনই শুরু করা দরকার। আমার বিশ্বাস, এই কমিশনের মাধ্যমে শুধু দেশের জাতির পিতা হত্যার পরিকল্পনা নয়, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে ও পরিবারের স্বজনবর্গ-সহ নারী-শিশু হত্যার পরিকল্পনার পটভূমিও উন্মোচিত হবে।

--
রেজা সেলিম, পরিচালক, আমাদের গ্রাম গবেষণা প্রকল্প 
ই-মেইলঃ rezasalimag@gmail.com 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭