টেক ইনসাইড

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা: মানবতার জন্য কতটা হুমকির?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 02/08/2017


Thumbnail

ফিঙ্গারপ্রিন্ট মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে অফিসে ঢুকলাম। কম্পিউটার চালু করে একটি বিষয়ে সার্চ দিতে গিয়ে একটি অক্ষর চাপলেই কাঙ্ক্ষিত বিষয়ের শব্দটি চলে এল। সার্চ দিয়ে এর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ই পাওয়া গেল। ভিন্ন ভাষার একটি লেখা ট্রান্সেলেটরে দিতেই অনুবাদ হলো কাঙ্ক্ষিত ভাষায়। ওয়ার্ডে লিখতে গিয়ে ভুলটা শুধরে দিলো কম্পিউটার নিজেই। কাজের ফাঁকে স্মার্টফোন জানান দিলো আজ দিনের বিশেষ কাজগুলো। একই সঙ্গে জানাল কোন কোন বন্ধুর জন্মদিন। কথা বলতেই স্মার্টফোনে থাকা ভয়েস সফটওয়্যার ‘কর্টানা’ জানাল কাঙ্ক্ষিত উত্তর।
 
এভাবেই আমাদের জীবনে প্রতিনিয়ত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ছোট খাট ব্যবহার হচ্ছে। আর এমন ব্যবহার আমাদের জীবনকে করেছে সহজ ও সাবলীল। বিজ্ঞানের অগ্রগতির এই যুগের নতুন উদ্ভাবন এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কম্পিউটারের এই ব্যবস্থা মানুষের বুদ্ধিমত্তার মতোই কাজ করে। এর সহজ উদাহরণ হলো, কথা বুঝতে পারা, দেখে চিনতে পারা, সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় অনুবাদ করার ক্ষমতা।
 
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই ক্রমাগত উন্নতি নিয়ে শঙ্কিত অনেকেই। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীল বদৌলতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে অনেকের মনে নেতিবাচক একটি ধারণা তৈরি হয়েছে। কিন্তু আসলেই কি এটি মানবতার জন্য নেতিবাচক। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যদি মানুষের বুদ্ধিমত্তাকেও ছাড়িয়ে যায় তবে এটি মানবসভ্যতার জন্য কতটা হুমকির?
 
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা অনেক আগেই গবেষণা করছেন। এর মধ্যেই এই প্রযুক্তির ব্যবহারে করছে বিভিন্ন বড় বড় প্রযুক্তিনির্ভর কোম্পানিরা। ইনটারনেটে ব্যবহারকারীরা কোন ধরনের ওয়েবসাইটে যাচ্ছেন, কী পোস্ট দিচ্ছেন এসব তথ্য নিয়ে একটি সিদ্ধান্তে পৌছে যাচ্ছে। খেয়াল করে দেখবেন, আপনি যে ধরনের ওয়েবসাইটে যাচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করেই কিন্তু গুগল আপনাকে বিজ্ঞাপন দেখাচ্ছে। আপনার আগ্রহ কোন কোন ক্ষেত্রে রয়েছে তা সহজেই বুঝতে পারছে এই সার্চ ইঞ্জিন।
 
পশ্চিমা দেশের ঋণ দেওয়ার অনেক প্রতিষ্ঠান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার করে খুব সহজেই সিদ্ধান্ত নেয় কাউকে ঋণ দেওয়া হবে কিনা।
 
অনেক বিশেষজ্ঞ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসার নিয়ে শঙ্কিত। তাদের ধারণা, ভবিষ্যতে মানুষের স্থান নিয়ে নেবে এই প্রযুক্তি। বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিক, কাস্টমার ম্যানেজার, টেলিমার্কেটার এবং ব্যাংকটেলারদের স্থান নিয়ে নেবে এই প্রযুক্তি। এতে একটি বড় অংশ বেকার হয়ে যাবে। এমনকি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালিত গাড়ি এবং রোবট নিবে নির্মাণ শ্রমিক, গাড়িচালক, ডেলিভারিম্যানের দায়িত্ব পালন করবে।
 
আধুনিক বিশ্বে বিশেষ কিছু শ্রেণির মানুষের কাছে আছে অঢেল সম্পদ এবং অন্যান্যদের মধ্যে অধিকাংশই বেকার। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসার মানুষকে আরও দরিদ্র করবে। কারণ এসব ক্ষেত্রে তাঁদের আয় করার জন্য কোনো পথ খোলা থাকবে না। সম্পদের সুষম বন্টন হবে না। পুঞ্জীভূত সম্পদের পরিমাণ বেড়ে যাবে। সম্পদ বন্টনে এই অসামাঞ্জস্যতা দূর করতে সরকারকে তখন বড় বড় লাভজনক প্রতিষ্ঠানের ওপর মোটা অংকের কর আরোপ করতে হবে। যে কর আদায় হবে তা সাধারণ মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করতে হবে। যারা হতদরিদ্র তাঁদের উন্নয়নে ব্যবহার করতে হবে।
 
বাংলা ইনসাইডার/আরএইচবি




প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭