ইনসাইড টক

‘করোনা নয়, বন্যার্তদের মূল ভয় অন্য জায়গায়’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 07/08/2020


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বন্যা কবলিত এলাকার করোনা পরিস্থিতি এবং তাদের সার্বিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে আজ বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে কথা বলেছেন। এই আলাপচারিতায় তিনি বলেছেন, `আমাদের দেশে বর্তমানে বহু মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন এবং তারা অত্যন্ত দুর্দশার মধ্যে দিনযাপন করছেন। করোনা অবশ্যই এই মানুষগুলোর বিপদ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। তবে তাদের মূল ভয় এখন করোনা নিয়ে নয়। বিভিন্ন পানিবাহিত ও চর্মরোগসহ নানা ধরনের অসুখ বিসুখ এবং খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির অভাব এই মানুষগুলোর মূল ভয়ের কারণ।‘ বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে প্রতিদিনের আলাপচারিতায় অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বন্যার্তদের কেউ এখন আশ্রয়কেন্দ্রে, কেউ নিজেদের ঘরের চালের ওপর বা নৌকায় ভাসছেন। অনেকেই দেখা যাচ্ছে গবাদি পশু নিয়ে পাশাপাশি গাদাগাদি করে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। নিজের ঘরেও গাদাগাদি, আশ্রয়কেন্দ্রেও গাদাগাদি। এখানে সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার সুযোগ খুব কম। অনেকে মাস্কও ব্যবহার করতে পারছেন না। পরিষ্কার পানি দিয়ে হাত ধোয়া তো দূরের কথা তারা খাওয়ার জন্যই বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছেন না। এই অবস্থার মধ্যেই মানুষগুলো দিন কাটাচ্ছে।’

বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতে অসুখ বিশুখের ব্যাপারে প্রবীণ এই চিকিৎসক বলেন, ‘করোনার ভয় তো আছেই। তবে তাদের মূল ভয় হয়ে দাঁড়িয়েছে অন্য। টাইফয়েড, জন্ডিস, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস- এসব রোগ বেড়ে যাচ্ছে। চর্মরোগ, পেটের সমস্যা এগুলোতে ভুগছে প্রায় সব বন্যার্ত মানুষ। বন্যার্তদের এখন করোনা পরীক্ষার কোনো সুযোগই নেই। তারা সেরকম বাস্তবতায় নেই। জীবন জীবিকা বাঁচানোই তাদের জন্য কঠিন  হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা খেতে পারছে না, পরিষ্কার পানি নেই, স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের সুবিধা তো তাদের জন্য এখন অলীক কল্পনা। এমন অবস্থায় এই মানুষগুলো কীভাবে করোনা পরীক্ষা করতে ছুটবে? যদি কারও পজিটিভ এসেই যায় তারা তো আইসোলেশনেও থাকতে পারবে না।’

বন্যা দুর্গত এলাকায় করোনা পরীক্ষার জন্য আলাদা টিম করা যায় কিনা এ বিষয়ে ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘প্রশাসনের উদ্যোগে এমন টিম করা যেতেই পারে। তবে আমি মনে করি, যেটা সবচেয়ে জরুরী তা হলো, বন্যা দুর্গত এলাকায় প্রতিটি মানুষের কাছে খাবার, বিশুদ্ধ পানি বা পানি পরিষ্কার করার ট্যাবলেট পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা। এজন্য টিম করাটা সবার আগে দরকার। যে মানুষগুলো দু বেলা দু মুঠো খাবার পাচ্ছে না, তাদের সবার আগে খাবার দিতে হবে, পানি দিতে হবে। পানি আর খাবার দেওয়ার পর করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সাথে তাদের মাস্ক দেওয়া হোক। প্রত্যেকে যেন মাস্ক পড়ে সেটা জরুরী।’

তিনি এ বিষয়ে আরও বলেন, বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে বয়স্করা, শিশুরা আর গর্ভবতী নারীরা সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে আছেন। তাদের স্বাস্থ্যসেবাটা নিশ্চিত করাটা সবচেয়ে বেশি দরকার।

প্রধানমন্ত্রীর এই মুখ্য চিকিৎসক বলেন, `আমি সবাইকে অনুরোধ করছি, আপনারা যে যেভাবে পারেন এই মানুষগুলোকে একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। আমরা প্রত্যেকে যদি তাদের পাশে দাঁড়াই তবে তাদের দুর্দশা কিছুটা হলেও লাঘব হবে।`



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭