ইনসাইড পলিটিক্স

আইএসআই শীর্ষ এজেন্ডদের তালিকায় তারেক জিয়া?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 07/08/2020


Thumbnail

আইএসআই একটি দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা। বিশ্বের সেরা অপকর্ম সৃষ্টিকারী গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় আইএসআই- এর নাম প্রথম দিকেই রয়েছে। আইএসআই- এর কার্যক্রম নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল মিলিটারি জার্নাল বলেছে, তাদের কার্যক্রমের প্রধান লক্ষ্য হলো ভারত। ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উস্কে দেওয়া। ভারতে অশান্তি সৃষ্টি করা এবং ভারতে অস্থিরতা তৈরী করার জন্য সারাবিশ্বে যত বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং ভারত বিরোধী শক্তি আছে তাদেরকে এক করাই আইএসআই- এর প্রধান কাজ।

সম্প্রতি ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ একটি চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। অত্যন্ত গোপনীয় এই রিপোর্টটি ভারতের নীতিনির্ধারকদের কাছে ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে। আইএসআই- এর এই রিপোর্টটিতে আইএসআই এর সারাবিশ্বের নেটওয়ার্ক, এবং নেটওয়ার্কে কারা কারা এজেন্ট হিসাবে কাজ করে সেরকম একটি তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। ‘র’ এর এই রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, এই সমস্ত ব্যক্তিরা ভারত বিরোধী তৎপরতায় আইএসআইকে সমর্থন যোগায়, মদদ যোগায় এবং আইএসআই এর এজেন্ট হিসাবে তাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সহায়তা করে ও কাজ করে।

মজার ব্যাপার হলো, আইএসআই- এর শীর্ষ এজেন্টদের যে তালিকা ‘র’ এর হাতে এসেছে সেখানে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার নামও পাওয়া গেছে। আইএসআই- এর এই তালিকায় দাউদ ইব্রাহিমসহ একাধিক ব্যক্তির নাম পাওয়া গেছে। তবে তারেক জিয়ার নাম এই তালিকায় থাকাটা অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক এবং গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞরা। কারণ তারেক জিয়াই এই তালিকার মধ্যে একমাত্র ব্যক্তি যিনি একটি দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ নেতা।

উল্লেখ্য যে, তারেক জিয়ার সঙ্গে আইএসআই- এর সম্পৃক্ততা নিয়ে বিতর্ক নতুন কিছু নয়। ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে তারেক জিয়া ভারতের ‘র’- এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছিলো এমন তথ্য ভারতের গণমাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তারেকের নাম না নিয়ে অন্তত ৩টি বক্তৃতায় বলেছেন যে, ‘র’ এর সঙ্গে বৈঠক করে এবং ভারতকে মুচলেকা দিয়ে ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিলো। দ্যা হিন্দু, টেলিগ্রাফসহ একাধিক পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টের তথ্য থেকে জানা যায়, তারেক জিয়া সে সময় ক্ষমতায় আসার জন্য ‘র’ এর কর্মকর্তাদের সঙ্গে অন্তত ৩ দফা বৈঠক করেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পরই তারেক জিয়া তার অবস্থান বদল করেন। দ্যা টেলিগ্রাফ পত্রিকার অনুসন্ধানী রিপোর্ট অনুযায়ী এ সময় আইএসআই- এর সঙ্গে তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠতার খবর পাওয়া যায়। ২০০২ এবং ২০০৩ সালে দুবাইয়ে তারেক জিয়াসহ বিএনপির দুজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা আইএসআই- এর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই সময় ভারতে অস্থিরতা এবং সন্ত্রাস সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশকে করিডোর হিসাবে ব্যবহার করার উদ্যোগ গ্রহণ করে আইএসআই। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে অস্ত্র ভারতে পৌঁছে দেওয়া এবং ভারতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র ও অর্থ সহায়তার কাজে তারেক জিয়া আইএসআইকে সহায়তা করে এমন তথ্য প্রমাণ ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা বহু আগেই প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশে যে ১০ ট্রাক অস্ত্র পাওয়া যায় তা কোথা থেকে এসেছে সে সম্পর্কে ইন্ডিয়া টুডের অনুসন্ধানী রিপোর্টে বলা হয়েছিলো যে, তারেক জিয়ার প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে উলফাদের এই অস্ত্র সরবারহ করার জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে নামানো হয়েছিলো। এর পর থেকেই তারেক জিয়া আইএসআই- এর প্যারোলে রয়েছে। এখনো তিনি আইএসআই- এর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন বলে ‘র’ এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এই প্রতিবেদনে এটাও বলা হয়েছে যে, তারেক জিয়ার সঙ্গে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সম্পর্ক রয়েছে। তারেক আইএসআই এর সঙ্গে মিলে ভারত সরকারকে দুর্বল করা এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নষ্ট করার জন্যও অত্যন্ত সক্রিয় বলে এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

অবশ্য তারেকের আইএসআই- এর শীর্ষ এজেন্টদের তালিকায় থাকার অভিযোগ নতুন নয়। তারেক জিয়ার পক্ষ থেকেও এ ধরণের প্রতিবেদন, রিপোর্ট কিংবা গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ করা হয়নি।  

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭