ইনসাইড টক

‘বেসরকারি হাসপাতালকে ১১ ধরনের লাইসেন্স নিতে হয়, এটা অসম্ভব’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 09/08/2020


Thumbnail

আগামী ২৩ আগস্টের মধ্যে বেসরকারি হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন না করলে তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এই প্রেক্ষাপটে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর অবস্থান ও প্রতিক্রিয়া জানতে বাংলা ইনসাইডার কথা বলে ল্যাবএইড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এম এ শামীমের সঙ্গে। ল্যাবএইড বাংলাদেশের প্রথম জেনারেশনের বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে অন্যতম।

ডা. এম এ শামীম বলেন, ‘একটি বেসরকারি হাসপাতালকে ১১ ধরনের লাইসেন্স নিয়ে তবেই হাসপাতাল চালাতে হয়। বাস্তবে এটা কেবল অযৌক্তিক নয়, অসম্ভবও বটে। তিনি বলেন, ‘আমাদের কথা হচ্ছে আমরা তো আর সাহেদ বা সাবরিনা নই। আমাদের এখানে অভিযান চালানোর আগে আমাদের জানানো হোক। ধরুন আমাদের ২-৩ দিন আগে জানাবে, ডিজি অফিস থেকে একজন কর্মকর্তা আর একজন চিকিৎসক নিয়ে আসুন। এর মধ্যে আমরা সবকিছু চেক করে একটি অডিটের মতো করি। এরপর তাঁরা এসে সাবধান করে ৭ দিন পর আবার এসে চেক করুক। আমরা যদি সেগুলো সংশোধন না করতে পারি তাহলে জরিমানা করুক। কিন্তু এখন যদি মেশিনগান নিয়ে এসে আমাদের ২০-২২ লাখ টাকা জরিমানা করে দেওয়া হয় এবং হাসপাতাল কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে মানুষ চিকিৎসা কোথায় পাবে?’

ল্যাবএইডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘মানুষকে তো বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কিন্তু এখন যদি রাজউক এসে আমাদের মারে, পরিবেশ এসে মারে তাহলে আমরা চিকিৎসা দিবো কিভাবে? আমরা আসলে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে আটকে গেছি। যার কোন প্রতিষ্ঠান নেই সে তো রাজা। আমরা সাহেদকে বাঁচাতে চাই না, সাবরিনাকে বাঁচাতে চাই না, আমরা জেকেজি’কে বাঁচাতে চাই না। আমাদের কাছে আপনারা আসেন, আমাদের ৩ দিনের সময় দেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে হেলথের একটি লোক নিয়ে এসে আমাদের সমস্যাগুলো দেখিয়ে দিয়ে যান। আমরা সেগুলো সংশোধন করবো।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের থেকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে আগে ১ টি লাইসেন্স নিতে হলেও সেই সংখ্যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ টিতে- এমন তথ্য জানিয়ে ডা. শামীম বলেন, ‘আগে আমাদের ডিজি অফিসের ১ টি লাইসেন্স লাগতো, এখন আমাদের ৯টি লাইসেন্স লাগে। ব্লাড ব্যাংক, অটোমিক এনার্জি, ফায়ার, পরিবেশ, ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াও রয়েছে বহু কিছু। এবং ব্লাড ব্যাংকের জন্য লাগে বার্ষিক ৩ লক্ষ টাকা। এখন যে ছোট্ট ক্লিনিক যারা বছরে ১০০, ২০০ বা ৩০০ টি ব্লাড দেয়। এখন একজন মানুষের কাছ থেকে ২০০ টাকা নেওয়া যায় রক্তের জন্যে, আর লাইসেন্স ফি দিতে হয় এর দশ গূণ। হলি আর্টিজেন ঘটনার পরে যত রেসিডেন্সিয়াল স্থান ছিল, সবগুলো ট্রেড লাইসেন্স আর রিনিউ করে না। রিনিউ না করার কারণে এখন হাসপাতালের লাইসেন্সও রিনিউ করা হয়না। কারণ প্রথমে হচ্ছে ট্রেড লাইসেন্স চায়। আর এখন তো সবই হচ্ছে প্রায় রেসিডিন্সিয়াল। এর জন্যে তো হাজার তিনেক হাসপাতাল আটকে গেছে। ওদেরতো একটা ইনভেস্টমেন্ট আছে, ওদের ওখানে তো লোকজন কাজ করে, ৫০ টা বেড আছে। আমার কথা হলো ১৯৯৭ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত চলছে। কিন্তু ২০১৪ সালের পর হাসপাতালগুলো রিনিউ করেনি। সেটা এখন কেন বন্ধ হবে? এটা তো পারবে না। বাংলাদেশে ক্লিনিক হাসপাতাল আছে ১০ হাজার। এগুলো রিনিউ করা কিন্তু এত সোজা না। আজকে যদি অ্যাপ্লাই করি এক বছরে ওনারা নবায়ন দিতে পারবে না। ওদের এমন জনবল নেই।

সমাধান কী? এমন প্রশ্নের উত্তরে ডা. এ এম শামীম বলেন, ‘সমাধান একটাই। আমাদের নিয়ে ওনারা বসবেন। বসে চিঠি দেবেন। লোক বাড়িয়ে ওয়ান টু ওয়ান ভ্যারিফাই করতে হবে। আমাদের সঙ্গে বসে ওনারা পথ বের করুক। হাসপাতাল অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের মতো ‘এক্সিডেশন’ পদ্ধতি চালু করা হোক। সুনির্দিষ্ট কিছু শর্ত থাকতে হবে। এই শর্তগুলো যারা পূরণ করতে পারবে তাঁরা এক্সিডেশন পাবে। যাঁদের এই শর্ত পূরণ হবে না তাঁদের সময় দেওইয়া হবে। কিন্তু বন্দুক নিয়ে হাসপাতাল ঠিক করা যাবে না।’



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭