ইনসাইড আর্টিকেল

বঙ্গবন্ধু ভবনে ফ্রিডম পার্টির হামলা: কী ঘটেছিল সেদিন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 10/08/2020


Thumbnail

বাংলাদেশকে ছায়া পাকিস্তান বানানোর স্বপ্ন থেকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। দেশের বাইরে থাকায় সেসময় বেঁচে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। কিন্তু স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির প্রতিনিধি হওয়ায় বারবার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। এরমধ্যে একটি প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল ১৯৮৯ সালের আজকের দিনে অর্থাৎ ১০ আগস্টে। খুনির দল ফ্রিডম পার্টি ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের বঙ্গবন্ধু ভবনে হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনার কণ্ঠ স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল।

১০ আগস্ট দিবাগত মধ্যরাতে চালানো হয়েছিল ওই হামলা। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তখন ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের বঙ্গবন্ধু ভবনের দোতলার কক্ষে অবস্থান করছিলেন। ভবনের বারান্দা, নিচতলার বিভিন্ন কামরা ও বাগানে ছিল অসংখ্য নেতা-কর্মী। কেউ ছিলেন ঘুমিয়ে। কেউ আবার রাজনৈতিক আলাপে ছিলেন মশগুল।  এসময় হঠাৎ বোমার বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে বঙ্গবন্ধু ভবন। মূল ফটকের সামনেই দেখা যায় ধোঁয়ার কুণ্ডলী। এরপর মুহুর্মুহু গুলির শব্দ। ভবনের ভিতর থেকে দেখা যাচ্ছিল সামনের সড়কটি। সেখানে ১৫/২০ জন অস্ত্রধারী। প্রত্যেকের হাতেই চকচকে অত্যাধুনিক অস্ত্র। একটু খেয়াল করতেই চেহারাগুলো চিনে ফেললেন অনেকে। এরা ফ্রিডম পার্টির অস্ত্রবাজ। ততক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবনের নিরাপত্তা রক্ষীরা প্রাণপণ যুদ্ধ শুরু করেছে। নেতা-কর্মীরাও অস্ত্রধারীদের ধাওয়া করতে শুরু করলো। পালাতে বাধ্য হলো ফ্রিডম পার্টির অস্ত্রবাজরা। পালিয়ে এসে অস্ত্রধারিরা আশ্রয় নিয়েছিল ধানমন্ডি-২৬ এর ফ্রিডম পার্টির অফিসে। দলের নেতা-কর্মী আর নিরাপত্তাবাহিনীর সাহসিকতায় সেদিন প্রাণে রক্ষা পেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

ওই ঘটনার পর ধানমণ্ডি থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। ১৯৯৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সিআইডির তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার খালেক উজ্জামান ১৬ জনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়।

চার্জশিটভুক্ত ১৬ আসামি হলেন- ফারুক রহমান (বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ফাঁসি কার্যকর), আবদুর রশীদ, বজলুল হুদা (বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ফাঁসি কার্যকর), রেজাউল ইসলাম খান ওরফে ফারুক ওরফে ফারুক রেজা, হুমাউন কবীর, গাজী লিয়াকত ওরফে কালা লিয়াকত, মিজানুর রহমান, জর্জ, শাজাহান ওরফে বালু, গোলাম সারোয়ার ওরফে মামুন, সোহেল ওরফে ফ্রিডম সোহেল, জাফর আহমেদ মানিক, নাজমুল মাকসুদ মুরাদ, গাজী ইমাম হোসেন ওরফে ইমাম, হুমায়ুন কবীর  ও খন্দকার আমিরুল ইসলাম ওরফে কাজল। 

এই মামলার বিচার কাজ বারবার বাধাগ্রস্ত করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন ঝুলে থাকার পর  ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জাহিদুল কবির দুই দফায় ২০১৭ সালের ২৯ অক্টোবর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।  ফ্রিডম পার্টির ১১ নেতা-কর্মীর সাজা দেয় আদালত। এর মধ্যে হত্যাচেষ্টা মামলায় প্রত্যেককে ২০ বছর করে এবং বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭