ইনসাইড হেলথ

বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে ‘পৃথক’ করোনা হাসপাতাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 10/08/2020


Thumbnail

বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ প্রথম ধরা পড়ে ৮ মার্চ। এরপর সরকার করোনা প্রতিরোধের জন্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করা শুরু করে এবং এই প্রস্তুতির একটি অংশ হিসেবে করোনার জন্যে পৃথক হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার জন্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথমেই কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল এবং কুর্মিটোলা হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। আস্তে আস্তে যখন করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকলো তখন আরো কয়েকটি হাসপাতালগুলোকেও করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণার জন্যে সরকার নানারকম উদ্যোগ নেয়।

এর মধ্যে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল, মহানগর হাসপাতাল, মুগদা সরকারি হাসপাতালকে শুধুমাত্র করোনা চিকিৎসা পরিচালনার জন্যে নির্দশনা দেওয়া হয়। পাশাপাশি ঢাকা মেডিকেল কলেজে আলাদা করোনা ইউনিট করা হয়, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজেও করোনার পৃথক ইউনিট করা হয়েছে। ধারণা করা হয়েছিল যে, বাংলাদেশে যদি ক্রমাগত করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে তাহলে হাসপাতালের উপর চাপ পড়বে এবং অনেক হাসপাতালের দরকার পড়বে। রোগীর সংখা বাড়লে হাসপাতালে জায়গা পাওয়া যাবেনা।  স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কেবল সরকারি হাসপাতাল নয়, বেসরকারি হাসপাতালেও করোনা চিকিৎসার জন্যে উদ্বুদ্ধ করেন এবং চিকিৎসকদের জন্যে আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেন। অবশ্য বেসরকারি হাসপাতালের বেশিরভাগই একদিকে যেমন সরকারি টাকা গ্রহণের জন্য চুক্তি করে আবার অন্যদিকে রোগীদের কাছ থেকেও বিনামূল্যে চিকিৎসার নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়। আবার অনেক হাসপাতাল করোনা চিকিৎসার নামে নানারকম প্রতারণা করে বিতর্কিত হয়েছে, যেমন রিজেন্ট হাসপাতাল। এই অবস্থার প্রেক্ষিতে, বিশেষ করে রিজেন্ট হাসপাতালের ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পর মানুষের মধ্যে এক ধরণের আতঙ্ক তৈরি হয় এবং মানুষ করোনা চিকিসার জন্যে হাসপাতালে যাওয়ার ক্ষেত্রে এক ধরণের অস্বস্তিতে ভোগেন।

অবশ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, গত জুলাই মাস থেকেই করোনার রূপ প্রকৃতি পাল্টে গেছে। করোনার যে ভয়াবহ রূপ তা নেই। ৪০ ভাগের বেশি মানুষ উপসর্গহীন ছিলেন, যাঁদের মধ্যে করোনার কোনরকম উপসর্গ দেখা যায়নি এবং করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিরা মৃদু উপসর্গ নিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নিয়েই সুস্থ হয়ে ওঠেন। আস্তে আস্তে দেখা যায় যে, মানুষের হাসপাতাল নির্ভরতা কমে যায়, আক্রান্ত হলে বাড়িতে থেকে চিকিৎসার প্রবণতা বাড়তে থাকে। আর এই কারণে বাংলাদেশে আড়াই লক্ষের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হলেও হাসপাতালের উপর চাপ পড়েনি। বরং দেখা গেছে যে, সরকারি যে বিশেষায়িত হাসপাতালগুলো রয়েছে তাঁর অধিকাংশ বেডই খালি রয়েছে। আর ঢাকার বাইরে এই ধরণের হাসপাতাল নেই বললেই চলে। এই বাস্তবতায় আজ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বৈঠক করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশক্রমে যে সমস্ত হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা কম সেই সমস্ত হাসপাতালগুলো করোনা চিকিৎসা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। আগামী ২-১ দিনের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

শুধুমাত্র করোনার জন্যে না রেখে কুর্মিটোলা হাসপাতাল বা মুগদা জেনারেল হাসপাতালকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আদলে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এখানে করোনার বিশেষায়িত ইউনিট থাকবে এবং সেখানে অন্য চিকিৎসাও হবে। যখন করোনা রোগী আসবে তখন তাঁরা করোনার জন্যে পৃথক স্থানে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মনে করছে যে, এখন রোগীর চাপ কম সেজন্য হাসপাতালগুলোকে শুধুমাত্র করোনার জন্যে রাখার কোন প্রয়োজন নেই। এই জন্যে যে সমস্ত হাসপাতালগুলো শুধু করোনার জন্যে রয়েছে, যেমন বসুন্ধরা হাসপাতাল বা মহানগর হাসপাতাল- এই হাসপাতালগুলোর কার্যক্রম আস্তে আস্তে গুটিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং আগামী ২-১ দিনের মধ্যে এই গুটিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম চূড়ান্ত হবে বলে জানা গেছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭