ইনসাইড আর্টিকেল

বিশ্বের মোস্ট ওয়ান্টেড যত অপরাধী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 11/08/2020


Thumbnail

গত বছর অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে আইএস নেতা আবু বকর আল বাগদাদির মৃত্যুর সঙ্গেই শেষ হয় পৃথিবীর সবচেয়ে মারাত্মক ম্যানহান্ট। ইউরোপিয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই সংস্থা মাঝে মাঝেই পৃথিবীর মোস্ট ওয়ান্টেড অপরাধীর তালিকা প্রকাশ করে থাকে। ভারতে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সি (এনআইএ) ২০১৮ সালে তাদের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকা প্রকাশ করেছে। সেইসাথে ২০১১ সাল পর্যন্ত ফোর্বস পত্রিকা ‘ওয়ার্লড’স মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকা প্রকাশ করত। এখনো বেশ কিছু ব্যক্তিকে বিভিন্ন সংস্থা পাকড়াও করতে বা হত্যা করতে খুঁজে চলেছে। এমনকি তাদের সন্ধান দিতে পারলে পুরষ্কারেরও ঘোষণা দিয়েছে।


আল-জাওয়াহিরি

আয়মান আল জাওয়াহিরির মাথার দাম আড়াই কোটি টাকা। যুক্তরাষ্ট্রের আরএফজে’ র ওয়েবসাইটে তাকে আল কায়েদার বর্তমান নেতা এবং ইজিপ্সিয়ান ইসলামিক জিহাদ গোষ্ঠীর প্রাক্তন নেতা বলে বর্ণনা করা হয়েছে। ১৯৯৮ সালের কেনিয়া ও তানজানিয়ার মার্কিন দূতাবাসে বিস্ফোরণের জন্য জাওয়াহিরি দায়ী বলে উল্লেখ করেন। ২০০০ সালে ১২ অক্টোবর ইয়েমেনে ইউএসএস কোল হানার পরিকল্পনাতেও জাওয়াহিরি ছিল এক চক্রী। সেইসাথে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের নাশকতাতেও তার হাত ছিল বলে জানা যায়। এই হামলায় প্রায় ৩ হাজার মানুষ মারা যায়। আর এই সমস্ত তথ্য উল্লেখ করা হয় আরএফজে ওয়েবসাইটে। সেখানে বলা হয়, আল জাওয়াহিরি প্রভাবশালী কয়েকজনের একটি গোষ্ঠীর নেতা, যা আল কায়েজা কোর বলে পরিচিত। এই গোষ্ঠী ছড়িয়ে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্য। জানা যায়, এছাড়া আল-জাওয়াহিরি নিজের বার্তা রেকর্ড করে এবং তা ছড়িয়ে দেয়। আল কায়েদা ক্রমাগত চাপের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও কিছু হামলার পরিকল্পনা চালিয়ে যেতে সক্ষম, যা থেকে বোঝা যায় তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর ঘরে-বাইরে আরও আক্রমণের ফন্দি আঁটছে।


সিরাজুদ্দিন হাক্কানি

সিরাজুদ্দিন হাক্কানি হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা। এই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের উদ্দেশ্য আফগানিস্তানে তালিবানি শাসন ফিরিয়ে আনা। আরএফজে ওয়েবসাইট উল্লেখ করেন, ২০০৮ সালে আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের উপর প্রাণঘাতী হামলার চেষ্টার কথা সে স্বীকার করেছে। এছাড়া আফগানিস্তানে কোয়ালিশন বাহিনী ও মার্কিন বাহিনীর উপর একাধিক হামলার ছক কষা ছাড়াও সে সব হামলায় অংশগ্রহণ করেছিল তারা। হাক্কানিতে পাকিস্তানের উপজাতি এলাকায় দেখা গিয়েছে বলে মনে করা হয়। তারও মাথার দাম এক কোটি টাকা।


হাফিজ সঈদ

পাকিস্তানের জঙ্গি হাফিজ সঈদ ভারতে একাধিক সন্ত্রাসবাদী হামলার মাস্টারমাইন্ড বলে জানা যায়। তার মাথার দাম এক কোটি টাকা। কিন্তু তাসত্ত্বেও সে শুধু স্বাধীন হয়ে ঘুরেই বেড়াচ্ছে না। নির্বাচনে প্রার্থী দিচ্ছে এবং বিশাল জনসমাবেশে বক্তব্য রাখছে। আরএফজে-র ওয়েবসাইটে তার সম্পর্কে বলা হয়, হাফিজ মহম্মদ সঈদ আরবী ও প্রকৌশল বিষয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক। সেইয়াথে তিনি ইসলামী আল-এ-হাদিত সংগঠন জামাত উদ-দাওয়ার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন অংশে তারা ইসলামি শাসন চালুর জন্য কাজ করছে। তাদের সামরিক শাখা লশকর-ই-তাইয়েবা ২০০৮-এর মুম্বাই হামলাসহ অসংখ্য হামলার সাথে জড়িত।


মুপাল্লা লক্ষ্মণ রাও

ভারতের এনআইএ তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে তেলেঙ্গানার মাওবাদী নেতা মুপাল্লা লক্ষ্ণণ রাও গণপতির মাথার দাম সবচেয়ে বেশি। বছর দুয়েক আগে ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ও বার্ধক্যের কারণ দেখিয়ে তিনি নিষিদ্ধ সিপিআই (মাওবাদী) সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরে দাঁড়ান। গত সেপ্টেম্বর মাসে দলের নিষিদ্ধ মুখপত্র পিপলস মার্চে গণপতি বলেন, গত ৮ বছরে ভারতের বিপ্লবী আন্দোলন দুর্বল হয়েছে।


নাম্বালা কেশব রাও

নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজ সিপিআই (মাওবাদী) সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। জানা যায়, আইইডি বিষয়ে তিনি একজন বিশেষজ্ঞ এবং সামরিক কৌশলে দক্ষ বলে পরিচিত তিনি। দলের বর্তমান পদের দায়িত্ব নেবার আগে তিনি সিপিআই (মাওবাদী)-র কেন্দ্রীয় মিলিটারি কমিশনের শীর্ষপদে ছিলেন। বাসবরাজের মাথার দাম ১০ লক্ষ টাকা।


আহমেদ আবদুল্লা

আবদুল্লা আহমেদ আবদুল্লা আল-কায়েদার সিনিয়র নেতা এবং তাদের নেতৃ পরিষদ মজলিস আল-শুরার সদস্য। তাকে ২০০৩ সালে ইরানে গ্রেফতার করা হয়। ২০১৫ সালে ইরানের এক কূটনীতিবিদের বিনিময়ে আরও কয়েকজন জঙ্গির সঙ্গে তাকেও ছেড়ে দেওয়া হয়। তারও মাথার দাম এক কোটি টাকা।


সইফ আল-আদল

আল কায়েদার সামরিক বাহিনীর মাথা সইফ আল আদল। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইরানে যে সব জঙ্গিকে মুক্ত করে দেওয়া হয়, তাদের অন্যতম ছিল সে। তার মাথার দামও এক কোটি টাকা। আরএফজে ওয়েবসাইটে বলা হয়, ১৯৯০-এ আল-আদল এবং আল কায়েদার অন্যরা আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং সুদানসহ বিভিন্ন দেশে সামরিক এবং গোয়েন্দা প্রশিক্ষণ দিত। তা  কাজে লাগাত আল কায়েদা এবং ইজিপশিয়ান ইসলামিক জিহাদসহ বিভিন্ন সংগঠন।
তাছাড়া, এনআইএ-র তালিকার ২৫৮ টি নামের মধ্যে ১৫টি নাম ছিল পাকিস্তানের। এর মধ্যে ছিল জাকির-উর-রহমান লকভি, আবদুর রহমান হাশিম সৈয়দ এবং সাজিদ মজিদের নামও। এনআইএ-র তালিকায় কয়েকজন মাওবাদী নেতার নামও ছিল।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭