ইনসাইড বাংলাদেশ

সিনহা হত্যা কি জামাত-শিবিরের ব্লু প্রিন্ট?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 14/08/2020


Thumbnail

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার তদন্ত করছে র‍্যাব। ইতিমধ্যে এই ঘটনা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাঁদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে এই মামলার যারা সাক্ষী ছিল তাঁদেরকেও র‍্যাব গ্রেপ্তার করেছে। র‍্যাবের সূত্রে বলা হয়েছে যে, কেন, কীভাবে, কোন পরিস্থিতিতে এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে এটা নিয়ে তাঁরা অনুসন্ধান করছে। ইতিমধ্যে এই ঘটনার অনুসন্ধানের জন্যে যে সরকারি তদন্ত কমিটি হয়েছে সেই তদন্ত কমিটিও ৭ দিনের সময় বাড়িয়েছে। আবার নাগরিকরাও এই নিয়ে তদন্ত এবং গণশুনানির আয়োজন করেছে।

নিশ্চয়ই এই সমস্ত তদন্ত থেকে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। তবে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের সময় এবং তাঁর পূর্ব এবং পরের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে এর সম্বন্ধে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর এবং সন্দেহজনক প্রশ্নের উদ্বেগ ঘটেছে। সিনহা হত্যার তদন্তে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর মীমাংসিত হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষত এই ঘটনার সঙ্গে যে সমস্ত পুলিশ কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে তাঁদের অতীত রাজনৈতিক অবস্থান এবং দায়িত্ব পালনের তাঁদের ভূমিকার কারণে এই প্রশ্নগুলো উঠেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সিনহা হত্যা কি কেবল নিছক একটি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড? নাকি এটা ঐ অঞ্চলের কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাদের অপরাধপ্রবণ মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ- সেই প্রশ্নের উত্তর নিশ্চয়ই তদন্তে পাওয়া যাবে। তবে এই ঘটনার বিশ্লেষণে যে প্রশ্নগুলো উত্থাপিত হয়েছে সেই প্রশ্নগুলোর মীমাংসা হওয়া দরকার। যেমন-

১. সিনহা হত্যার ঘটনার আগে থেকেই টেকনাফ এবং কক্সবাজার এলাকায় একাধিক ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটেছে এবং প্রায় সময়েই ভিকটিমকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বা চিহ্নিত অপরাধী হিসেবে প্রতিপন্ন করে ওই সমস্ত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডগুলোকে জায়েজ করার একটা চেষ্টা ছিল। অর্থাৎ ওইখানে সরকারের ইমেজ নষ্ট করার জন্যেই কি পরিকল্পিতভাবে এই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডগুলো সংঘটিত হয়েছিল?

২. যে পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে একজনের জামাত সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, আরেকজন বিএনপির আমলে পদকপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এছাড়াও কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করেছে বিভিন্ন মহল। তাহলে তাঁরা কি সম্মিলিতভাবে সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলার জন্যে পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে?

৩. অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা সেখানে গিয়েছিল একটি ডকুমেন্টরির শুটিংয়ের জন্যে। সেখানে তিনি কিছুদিন ছিলেন এবং অনেকগুলো চেকপোস্ট পার করেই তাঁদের বিভিন্ন স্থানে যেতে হতো। কাজেই পুলিশ তাঁর সম্পর্কে জানতো না বা তাঁর সম্পর্কে কোন তথ্য ছিলোনা এমন ভাবার কোন কারণ নেই। বরং সিনহা অবসরপ্রাপ্ত একজন সেনা কর্মকর্তা এবং এই ধরণের একটি ঘটনা ঘটার ঘটলে তা সরকারের উপরে একটি বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করবে- এই ধরণের চিন্তা থেকেই কি এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে?

সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে যে, এই রহস্যগুলো উদঘাটন করা উচিত। কারণ এর আগেও দেখা গেছে যে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে অপকর্মগুলো ঘটেছে সেগুলোকে প্রথমে নিছক ব্যক্তির অপরাধ হিসেবে দেখা হলেও পরবর্তীতে দেখা গেছে এগুলোর পেছনে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি ছিল। এখন সিনহার ঘটনাতেও এই ধরণের কোন রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি ছিলো কিনা, বিএনপি-জামাতের কোন ব্লু প্রিন্ট আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার। কারণ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পর থেকেই জামাত-শিবির গোষ্ঠী বিভিন্নভাবে দেশে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ফায়দা হাসিলের নীলনকশা করে আসছে এবং সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নাশকতা, হামলার চেষ্টা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা দৃঢ়তার সঙ্গে রুখে দিয়েছে। এখন এই ঘটনার সঙ্গেও সেই ধরণের কোন ষড়যন্ত্র আছে কিনা তদন্তে সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে।

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭