ইনসাইড টক

‘সবচেয়ে কার্যকরী ভ্যাকসিন কোনটা, সেটা আগে জানতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 15/08/2020


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন , ‘করোনা থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হলো ভ্যাকসিন। পৃথিবীর অনেক সংস্থা ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। কার আগে কে ভ্যাকসিন আনবে তা নিয়ে একটা প্রতিযোগিতা চলছে। অনেক বিজ্ঞানীই তাদের মেধা, সময় এবং দক্ষতা উজাড় করে দিয়ে ভ্যাকসিনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ভ্যাকসিন নিয়ে আমরা সুখবরও পাচ্ছি। রাশিয়া ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে, যদিও এটা নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন যথেষ্ঠ আশার বানী শুনিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মর্ডানার ভ্যাকসিনও চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে, চীনও কাজ করছে। এমনকি বাংলাদেশের একটি কোম্পানিও ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দৌড়ে আছে। যে দেশের ভ্যাকসিনই হোক না কেন, সেটা যে আমরা কয়েক মাসের মধ্যেই পেয়ে যাবো এটা আশা করাই যায়। তবে এ ব্যাপারে আমাদের একটু খেয়াল রাখতে হবে। এমন ভ্যাকসিন দেশে আনতে হবে যেটা সবচেয়ে কার্যকরী, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তুলনামূলকভাবে কম।’ বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে প্রতিদিনের আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন ডা. আব্দুল্লাহ।

তিনি বলেন, ‘যে দেশগুলো ভ্যাকসিন দৌড়ে এগিয়ে আছে, তাদের সবার সঙ্গেই আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। তবে শুধুমাত্র সুসম্পর্কের জোরে আজকাল বিশ্ব পরিমণ্ডলে সবকিছু পাওয়া যায় না। এজন্য লবিং, বুকিংয়ের প্রয়োজন হয়। কারণ ভ্যাকসিন বাজারে আসার সাথে সাথে ধনী দেশগুলোই হয়তো আগে কিনে নিয়ে নেবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ যেন ভ্যাকসিন পাওয়ার দৌড়ে পিছিয়ে না পড়ে সেজন্য লবিং বুকিংয়ের প্রক্রিয়া এখন থেকেই শুরু করতে হবে। তবে আমি মনে করি, আমাদের প্রথম কাজ হওয়া উচিৎ ভ্যাকসিনগুলো সম্পর্কে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা। কোন ভ্যাকসিনটা সবচেয়ে বেশি কার্যকরী এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত, সেটা আগে জানতে হবে। কারণ ভ্যাকসিন আনলেই তো হবে না, সেটা যেন প্রকৃতপক্ষেই মানুষের উপকারে আসে সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।’

দেশসেরা এই মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বলেন, কোন ভ্যাকসিনের ডোজ কতটি, অ্যান্টিবডি কতদিন পরে হবে, একটা ভ্যাকসিন কতদিন আমাদের সুরক্ষা দেবে- এ বিষয়গুলো নিশ্চিত হওয়া দরকার। রাশিয়াসহ ভ্যাকসিন দৌড়ে এগিয়ে থাকা সব দেশই বলছে, তাদের ভ্যাকসিন কার্যকর, কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তারা এখনও দেয় নি। আমাদের এসব তথ্যের বিষয়ে খোঁজ খবর করা দরকার। সব তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তবেই ভ্যাকসিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের একটা পরামর্শক কমিটি রয়েছে। তারাই এ বিষয়গুলো খোঁজ খবর নেবেন।

ডা. আব্দুল্লাহ বলেন, ‘চার, পাঁচটা ভ্যাকসিন শেষ পর্যায়ে আছে। সবগুলো তো আমরা নিতে পারবো না। যেই ভ্যাকসিনটি যথোপযুক্ত এবং ভালো মনে হবে আমাদের পরামর্শক কমিটি সেটা আনার বিষয়েই সুপারিশ করবে বলে আমি মনে করি। তবে সবার আগে ভ্যাকসিনের সমস্ত তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।’

প্রবীণ এই চিকিৎসক বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়মানুযায়ী, আমাদের বিনা মূল্যে ভ্যাকসিন পাওয়ার কথা। কিন্তু তারপরও এতে যদি কোনো জটিলতা দেখা দেয়, তাহলে কি করতে হবে সে ব্যাপারে এখনই সরকারের পরিকল্পনা এবং পদক্ষেপ থাকা উচিৎ। দেশের প্রত্যেকে যেন বিনা পয়সায় করোনার ভ্যাকসিন পায় এখন থেকেই সে ব্যাপারে চেষ্টা তদবির চালিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, ‘করোনার ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত আমাদের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলো মেনে চলতে হবে। যেমন- স্বাস্থ্যবিধি মানা, মাস্ক ব্যবহার করা, দিনে ২০ বার ২০ সেকন্ড ধরে হাত ধোয়া, শারীরিক দূরত্ব মেনে চলা। এসব ব্যাপারে আমরা যেন সচেতন থাকি। ভ্যাকসিন যখনই আসুক অবশ্যই বাংলাদেশ পাবে। আমিও সরকারকে আহ্বান জানাবো তারা এখন থেকেই যেন কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়, যেন ভ্যাকসিন বাজারে আসলেই আমাদের দেশের মানুষ তা পেয়ে যায়।

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭