ইনসাইড ক্যারিয়ার

বিসিএস ক্যাডার চয়েস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 07/08/2017


Thumbnail

৩৮তম বিসিএসের জন্য ফরম পূরণের সময় প্রায় শেষ। এখনো অনেকেই আবেদনের কথা ভাবছেন। দুই হাজার ২৪টি শুন্য পদের নিয়োগের আবেদন করার শেষ সময় আগামী ১০আগস্ট। যাদের মনে ক্যাডার চয়েস নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে তাদের জন্য কিছু কথা। 

অ্যাডমিন

পররাষ্ট্র সচিব ছাড়া সকল সচিবই অ্যাডমিন থেকে নিয়োগের ইতিহাস আছে। অর্থাৎ প্রায় ৯০শতাংশ সচিব অ্যাডমিন ক্যাডার থেকে হয়।

অ্যাডমিন ক্যাডারে চান্স পাওয়ার পর প্রথমে ডিসি অফিসে কাজ করতে হয় হবে সহকারী কমিশনার হিসেবে। ২/৩ বছর পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি), জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে দায়িত্ব পাবেন। পাশাপাশি মন্ত্রণালয়েও সহকারী সচিব, উপসচিব হিসেবে অনেকে কাজ করতে পারবেন। তাই যাঁরা ভবিষ্যতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজ করতে চান তাঁদের জন্য অ্যাডমিন ক্যাডার ভালো চয়েস।

অ্যাডমিন ক্যাডারের সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে ভ্যারিয়েশন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও মন্ত্রণালয়ে কাজ করার সুযোগ থাকে। চাকুরি শেষ হলে যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগেরও সুবিধা থাকে।

পররাষ্ট্র

জয়েন করার পর থেকে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পোস্টিং, এরপর বিদেশে পোস্টিং হতে অন্তত ৬-৭ বছর বা কাছাকাছি লাগে। বিদেশে পোস্টিং হলে কূটনৈতিক সুবিধাসমূহ পাওয়া যায়। এই ক্যাডারে প্রমোশন গ্রোথ অনেক ভাল কারণ কম লোক নেয়া হয় আর বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মিশন সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

পুলিশ

যারা সরকারি চাকরি করে পরিচিতজনের কাছে কেন্দ্রবিন্দু হতে চান তাদের জন্য পুলিশ সবচেয়ে বেশি উপযোগী। মানুষকে সরাসরি সাহায্য করা, দেশের সুরক্ষায় ঝুঁকি নেওয়া যাদের মনোভাব তারা পুলিশ চয়েস করতে পারেন।

উপরের দিকে (অ্যাড. ডিজিআই থেকে আইজিপি পর্যন্ত) পোস্ট কম হওয়ায় প্রমোশন গ্রোথ একটা লেভেলে গিয়ে আটকে যায়। তবে পুলিশের এএসপিদের অধীনে কনস্টেবল থেকে শুরু করে অনেক পুলিশ সদস্য থাকে, তাই দেশের যেখানেই যাবেন, লজিস্টিক সাপোর্ট থাকবে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও পুলিশ অফিসারদের অনেকে সুযোগ থাকে। 

অডিট

অডিট ক্যাডারে সব সময়ই অল্প শূণ্য পোস্ট থাকে, এজন্য অনেকে আবেদন করতে দ্বিধায় ভোগেন। তবে অল্প পোস্ট বলে কিন্তু পদোন্নতিও দ্রুত হয়। মোটামুটি বিভাগীয় শহরগুলিতেই পোস্টিং হয়ে থাকে, তবে ঢাকায় পোস্টিং বেশি। এই ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ সিএজি একটি সাংবিধানিক পদ। 

ট্যাক্স ও কাস্টমস

কাস্টমস ক্যাডাররা অর্থ মন্ত্রণালয়ের আইআরডি এর একটি ডিভিশন এনআরবি এর একটি উইং (কাস্টমস উইং)হয়ে কাজ করে। 

সরকারের রেভিনিউ আদায়ের উৎস এই দুই ক্যাডার। দেশ যতো ধনী হচ্ছে, রেভিনিউ অফিসারদের গুরুত্ব তত বাড়ছে। তাই এই দুটোই অনেক আকাঙ্ক্ষিত ক্যাডার। রেভিনিউ আদায়ের জন্য আর্থিক ইনসেনটিভ সুবিধা আছে। প্রমোশন গ্রোথ অতিরিক্ত কমিশনার হওয়া পর্যন্ত মোটামুটি দ্রুত। 

অর্থনীতি

এই ক্যাডারের অফিসাররা প্লানিংয়ের কাজ করেন। সরকারের প্রোজেক্টের প্লানিং। তাই যারা রিসার্চ রিলেটেড কাজে ইচ্ছুক, তাঁদের জন্য এটা ভাল চয়েস। ইকনমিক ক্যাডারে ফরেন ক্যাডারের পর সবচেয়ে বেশী বাইরে যাওয়ার সুযোগ থাকে। সচিবালয়ে বা পরিকল্পনা কমিশনে অফিস, তাই পোস্টিং হয় ঢাকায়। 

তথ্য

মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীগণের পাবলিক রিলেশন্স অফিসার (পিআরও), বিদেশে দূতাবাসে তথ্য কর্মকর্তা, এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির অফিসেও তথ্য কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করার সুযোগ থাকে।

শিক্ষা ক্যাডার

শিক্ষকতা সম্মানের এবং উপভোগ্য ক্যারিয়ার। যারা শিক্ষকতায় পেশা করতে চান, রিসার্চ করতে চান তাদের জন্য এই ক্যাডার। 

টেকনিক্যাল ক্যাডার

টেকনিকাল জ্ঞানকে দেশের কাজে বিশেষত সরকারের নীতিমালায় যারা কাজে লাগাতে চান, তাঁদের জন্য সঠিক জায়গা হচ্ছে টেকনিক্যাল ক্যাডারগুলো।

আনসার

এই ক্যাডারে কাজের চাপ তুলনামূলক কম। চাকুরির প্রথম থেকেই গাড়ি ও বাসস্থান সুবিধা থাকে। সর্বোচ্চ ডিজি পর্যন্ত হওয়া যায়।

অল্প পোস্ট আছে এমন ক্যাডারে কি চয়েসে দিবেন?

পোস্ট বেশি থাক আর কম থাক নিজে যেই চাকরিটা করতে চান সেভাবেই চয়েস দিন। যোগ্যতা থাকলে আপনার টিকে যাওয়ার সম্ভাবনা ভালো থাকবে। তাই পছন্দ অনু্যায়ী সিরিয়ালে চয়েস দিয়ে দিন। 


মোট কয়টা চয়েস দিব?

যেই চাকরি হলে আপনি অবশ্যই করবেন, শুধু সেগুলোই চয়েস দিন। এক্ষেত্রে ২টা ইস্যু। যারা যে কোনো ক্যাডার হলেই চাকরি করবেন, তাঁরা এপ্লাই করতে পারবেন, এমিন সবগুলোকে চয়েস করুন। 

আর যারা মনে করেন - আরেকটি ক্যাডার না হলে চাকরি করবেন না, তাঁরা অন্য ক্যাডার চয়েস দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ চাকরি হলো আর আপনি জয়েন করলেন না বা কিছুদিন পরে ছেড়ে দিলেন, সেটা সবার জন্যই খারাপ। এক্ষেত্রে বিভিন্ন আইনি জটিলতায়ও পড়তে হয়।

বাংলা ইনসাইডার/এমএ/জেডএ




প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭