ইনসাইড আর্টিকেল

স্টার্ট-আপে বেকারত্বের সমাধান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 20/09/2020


Thumbnail

আমাদের দেশ জনবহুল হওয়ায় চাকরির বাজারে এক ধরনের সংকট লেগেই থাকে সবসময়। এর পেছনে বড় কারণ হল, জনসংখার তুলনায় অপর্যাপ্ত সরকারি বেসরকারি শিল্প কারখানা ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। যে কারণে, শিক্ষিতদের একটি বড় অংশই থেকে যাচ্ছে বেকার। যারা শিক্ষিত হওয়ার কারণে তুলনামূলক ছোট চাকরি বা কাজ করতে বাধে মানসিকতায়। তবে তারা হয়তো শুনলে অনুপ্রাণিত হবেন যে- সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে হাইস্কুলে পড়াকালীন সময়ে প্রতি শনিবারে একটি বেকারিতে কাজ করে নিজের হাত খরচ চালাতেন।  
আশার কথা হল সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশর তরুণদের মধ্যে একটি জনপ্রিয় শব্দ হচ্ছে start-up। এক সময় যেখানে তরুণদের লক্ষ্য থাকতো লেখাপড়া শেষ করে ভাল চাকরি পাওয়া, সেখানে এখন অনেকে স্বপ্ন দেখেন একটি স্টার্টআপ গড়ার। স্টার্ট-আপ কী?  ব্যবসার ও স্টার্ট-আপের মধ্যে পার্থক্য, বাংলাদেশ ও বিশ্বের সফল স্টার্ট-আপ এবং স্টার্ট-আপের বিভিন্ন ধাপ নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন।

প্রথমে আসা যাক start-up কী? আভিধানিক অর্থে স্টার্ট-আপ হলো “নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগ বা বাণিজ্যিক প্রকল্প”। যা চলমান ব্যাবসায়িক পুরনো ধ্যান ধারনার গণ্ডি পেরিয়ে জনসেবায় যোগ করবে নতুন মাত্রা।  উদাহরণ হিসেবে বলা যায় - আপনি যদি আপনার এলাকায় একটি রেস্টুরেন্ট দেন, সেটি হবে ব্যবসা। এখন আপনি যদি আলাদা করে রেস্টুরেন্ট রিজার্ভেশন, খাবার ডেলিভারি বা অন্য কোন ধরনের সার্ভিস চালু করেন, সেটিই হবে স্টার্ট-আপ।

বিখ্যাত মার্কিন চশমার ব্যান্ড “Warby Parker” এর co-founder Neil Blumenthal স্টার্ট-আপের একটি চমৎকার সংজ্ঞা দেন। তিনি বলেন, ‘Start-up হলো এমন একটি কোম্পানি যারা একটি সমস্যার সমাধান করতে চাচ্ছে, কিন্তু সমাধান স্পষ্ট নয় এবং সাফল্যও সুনিশ্চিত নয়’।

যদিও আয়, লাভ বা কর্মসংস্থানের ভিত্তিতে স্টার্ট-আপকে আলাদা করার কোনো ধরাবাধা নিয়ম নেই। তবে স্টার্ট-আপের ক্ষেত্রে আমরা কিছু আলাদা বৈশিষ্ট্য দেখতে পাই। ফোর্বসের মতে, যদি আপনার কোম্পানীর বাৎসরিক আয় হয় ২০ মিলিয়ন ডলারের কম, কর্মচারীর হয় সর্বোচ্চ ৮০ জন এবং কোম্পানির সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আপনার হাতে থাকে, তাহলেই আপনি একটি স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতা। স্টার্ট-আপ ও ছোট ব্যবসার মধ্যে মূল পার্থক্যের জায়গাটা হলো -ব্যাবসায়িক বৃদ্ধি সম্ভাবনা। যদিও সম্পদ, বিনিয়োগ ইত্যাদির কারণে স্টার্ট-আপের সূচনা করতে হয় ক্ষুদ্র পরিসর থেকে, এবং লক্ষ্য থাকে প্রবৃদ্ধির চূড়ায় পৌঁছানোর।

গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের স্টার্ট-আপের পরিধি ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। প্রতি বছর অসংখ্য নতুন স্টার্ট-আপের প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। যদিও এর মধ্যে খুব কম সংখ্যকই টিকে থাকতে পারছে। তবে আশার কথা হল, কিছু সফল স্টার্ট-আপও আমরা গত কয়েক বছরে দেখতে পেরেছি, যেমন - বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাইড শেয়ারিং সার্ভিস “পাঠাও” সম্প্রতি কয়েকটি বৈদেশিক কোম্পানির বিনিয়োগের পর এখন এই কোম্পানিটির মার্কেট ভ্যালু প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার বা  ৮০০ কোটি টাকায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে।

যদিও বাংলাদেশে এখনও যথাযথ স্টার্ট-আপের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি হয় নি। বিনিয়োগদাতাদের এ খাতে বিনিয়োগ করার আগ্রহ কম। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সরকারের বেশকিছু উদ্যোগে স্টার্ট-আপের ক্ষেত্রে অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে । এর মধ্যে রয়েছে  iDEA (innovation, design and entrepreneurship academy) এবং ICT Ministryer প্রজেক্টের অধীনে প্রায় ২০০ স্টার্ট-আপে অর্থ যোগান দেয়া হয়।

অর্থাৎ, আমরা আশা করতেই পারি নিকট ভবিষ্যতে Airbnb, Whatsapp এর মতো সফল স্টার্ট-আপ উঠে আসবে বাংলাদেশ থেকে। দেশ থেকে ঘুচে যাবে বেকারত্তের অভিশাপ। এবং বাংলাদেশ পরিনত হবে একটি স্বপ্নের দেশে ।  



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭