ইনসাইড পলিটিক্স

ডা. জাফরউল্লাহঃ রাজনীতিবীদ না সুশীল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/09/2020


Thumbnail

 

ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী। বীর মুক্তিযোদ্ধা, চিকিৎসক, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা। কিন্তু এসব পরিচয় ছাপিয়ে তিনি যেন রাজনীতির চোরাগলিতে নিজেকে বন্দী করেছেন। একজন রাজনীতিবিদ না হয়েও, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা তিনি। বিএনপির শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে বাইরে পরিচিত তিনি। কিন্তু বিএনপির নেতারাই তাকে নিয়ে বিব্রত থাকেন। আড়ালে আবডালে বিএনপি নেতারা তাকে ‘আপদ’ বলেন। নিজেই অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্কে জড়িয়ে ফেলেন। নিজেই নিজের নামের প্রতি অবিচার করেন।

ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী অনেক কারণেই বাংলাদেশে একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব হতে পারতেন। ‘৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন যুক্তরাজ্যে। চিকিৎসা শাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রী নিতে গিয়েছিলেন। কিন্ত দেশপ্রেমের এক অনন্য নজির গড়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তাদের অন্যতম ডা. জাফর উল্লাহ। মুক্তিযুদ্ধের পর দেশে ফিরে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথা বিরোধী এই চিকিৎসা কাঠামো বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে ব্যতিক্রম ধর্মী অবদান রেখেছে। তবে ডা. জাফর উল্লাহর সবচেয়ে বড় অবদান সম্ভবত জাতীয় ঔষধ নীতি প্রণয়ন। এই ঔষধ নীতি বাংলাদেশকে বহুজাতিক ঔষধ আগ্রাসন থেকে মুক্তি দেয়। এর ফলেই দেশীয় ঔষধ কোম্পানী গুলো বিকশিত হয়। আজকে যে বাংলাদেশ ঔষধ খাতে অনন্য সাফল্য অর্জন করেছে তার ভিত্তি স্থাপন করেছেন জাফর উল্লাহ।

বাংলাদেশে বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান যেন পৈত্রিক সম্পত্তি। একটি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান যেন প্রতিষ্ঠাতাদের চিরস্থায়ী সম্পত্তি। গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ রাখতে ড. মুহম্মদ ইউনুস নাকি কান্নাকাটি করলেন। প্রশিকার কাজী ফারুক তো মারামারি, কোটকাচারী করলেন। সেদিক থেকেও বিরল ব্যতিক্রম ডা. জাফর উল্লাহ। গণস্বাস্থ্যের চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে দিয়ে তিনি এক নজির স্থাপন করেছিলেন। যদিও তিনি গণস্বাস্থ্যের ‘প্রাণভোমরা’। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি গণস্বাস্থ্যের একজন ট্রাষ্টি মাত্র।
একদা বাম রাজনীতিতে বিশ্বাসী ডা. জাফর উল্লাহ, ২০০৮ এর পর থেকে আস্তে আস্তে বিএনপির দিকে ঝুকতে থাকেন।

বিশেষ করে ২০১৮ তে বেগম জিয়া গ্রেপ্তার হবার পর তিনি যেন ‘স্বঘোষিত’ বিএনপির উপদেষ্টায় পরিণত হন। এর মধ্যে আবার তারেককে নেতৃত্ব ছাড়তে বলে বিএনপির অনেক নেতার চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছেন তিনি। যদিও যা বলেন স্পষ্ট বলেন। কিন্তু কিডনি রোগী এই অসম্ভব প্রাণশক্তির মানুষটি এখন বার্ধক্যের বিড়ম্বনায় ভোগেন। খেই হারানো কথা বলা, অযাচিত অভিযোগ করে তিনি নিজেই নিজেকে বিতর্কিত করেন। এখনকার জাফর উল্লাহকে দেখলে অপরাহ উইনফ্রে’র কথাটি মনে হয়-‘কোথায় থামতে হবে, এটা জানাটা খুবই জরুরী।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭