ইনসাইড পলিটিক্স

বুদ্ধিজীবী শূন্য হয়ে যাচ্ছে দেশ?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 22/09/2020


Thumbnail

 

একটা সময় ছিলো যখন মুক্তিবুদ্ধির চর্চা যারা করতেন, তাদের পছন্দের একমাত্র দল ছিলো আওয়ামী লীগ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের একমাত্র ঠিকানা ছিলো আওয়ামী লীগ। সমাজে সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বদের প্রায় সবারই সহানুভূতির জায়গা ছিলো আওয়ামী লীগ। তারা হয়তো সরাসরি আওয়ামী লীগ করতেন না। অনেক ক্ষেত্রে হয়তো আওয়ামী লীগের সমালোচকও ছিলেন। কিন্তু তারা যখন প্রগতির কথা বলতেন, মুক্তচিন্তার কথা বলতেন; মানুষের অধিকারের কথা বলতেন তখন তা আওয়ামী লীগের ঘরেই জমা হতো।

অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, বেগম সুফিয়া কামাল, সৈয়দ শামসুল হক, শামসুর রহমান- এই তালিকা অনেক দীর্ঘ। কিন্তু এখন সমাজে সর্বজন শ্রদ্ধেয় বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা যেমন কমছে, তেমনি আওয়ামী লীগও যেন বুদ্ধিজীবী শূন্য একটি রাজনৈতিক দলে পরিণত হচ্ছেন।

এখন দেশে বুদ্ধিজীবী হাতে গোনা। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, কিংবা ড. জাফর ইকবালের মতো মাত্র ক’জন মানুষ আছেন যাদের ‘আদর্শ’ মনে করতে পারে তরুণরা আর অধিকাংশ তথাকথিত জ্ঞানী, শিক্ষক এবং বুদ্ধিজীবীদের মনে করা হয় মতলব বাজ। এরা দুই ভাগে বিভজ্ঞ। এক ভাগ আওয়ামী পন্থী। অন্যভাগ বিএনপি-জামাত পন্থী।

আওয়ামী পন্থী বুদ্ধিজীবীরা গবেষণা করেন না, এদের কোন মৌলিক লেখা নেই। এরা এখন ‘টকার’। এদের যাবতীয় জ্ঞান এরা বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে বমি করেন। সেই বমির দূর্গন্ধ টেলিভিশনের পর্দা ছাড়িয়ে গোটা দেশকে দুর্গন্ধময় করে তোলে। এরা কথা বলেন কিছু পাওয়ার জন্য। কেউ ভিসি হতে চান। কেউ সরকারের কোন পদে যেতে চান। পদের জন্য এরা পথের ভিখারী।

আর এজন্য এরা টকশোতে গিয়ে তৈলমর্দনের প্রতিযোগিতায় নামেন। দু’চারজন যারা লেখাপড়া করেন, জ্ঞানবুদ্ধির চর্চা করেন তারা চাটুকারদের প্রবল স্রোতে হারিয়ে যাচ্ছেন ক্রমশ। সরকার বা দেশের সবচেয়ে বড় দলটি যে এইসব সত্যিকার জ্ঞানবুদ্ধির চর্চাকারীদের লালন করবে, সে চলও এখন আর নেই। এখনকার উপাচার্যগণ শুদ্ধ বাংলা উচ্চারণ করতে পারেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন নকল করেন শিক্ষকরা। তাই শুধু আওয়ামী লীগ নয়, এখন বুদ্ধিজীবীহীন হয়ে যাচ্ছে গোটা রাষ্ট্র।

আর বিএনপি পন্থী বুদ্ধিজীবীদের অবস্থা তো আরো শোচনীয়। ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদের পর এখন যারা বিএনপি পন্থী বুদ্ধিজীবী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেন তাদের কথা বার্তা শুনলে মনে হয়, পাড়ার মাস্তান। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক না হয়ে, পাড়ার বখাটে মাস্তান হলেই এদের ভালো মানাতো। আসলে, বাংলাদেশে দূবৃত্তায়ন এবং স্বজনপ্রীতির চাপে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হচ্ছে আদর্শের। তরুণদের সামনে আদর্শবান মানুষের সংখ্যা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। একটা জাতির জন্য এটা উদ্বেগের। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭