ইনসাইড আর্টিকেল

কারাগারের আচরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 24/09/2020


Thumbnail

 

জেলখানা বা কারাগার, আক্ষরিক অর্থে সাজা ভোগের স্থান। অর্থাৎ কোন মানুষ যদি কোন ধরনের অন্যায় বা অপরাধ করে থাকে যা রাস্ট্র, সমাজ ও সমাজে বসবাসকারী সকল মানুষ বা প্রানীকূলের জন্য ক্ষতিকর, তাহলে তাকে যে নির্দিষ্ট স্থানে, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য, শাস্তি স্বরুপ আটকে বা বন্দী করে রাখা হয় সেটাই জেলখানা বা কারাগার। আজকের পৃথিবীতে যত নিয়ম কানুন ও বিচারিক ব্যবস্থা চালু আছে তা পৃথিবীকে সুশৃঙ্খল রাখবার জন্য। ভালো এবং মন্দ এই দু`য়ে মিলে আমাদের সমাজ। তাহলে প্রশ্ন হলো ভালো বা মন্দ নির্দিষ্ট হয়ে কোন মানুষ কি পৃথিবীতে আসেন ? নাকি সমাজ ও পারিপার্শ্বিকতা একজন মানুষের অপরাধী হয়ে ওঠার জন্য দায়ী ? তবে হ্যা, সমাজ ও পারিপার্শ্বিকতার বাইরেও কিছু মানুষের উচ্চাকাঙ্ক্ষা, তাদেরকে অপরাধের দিকে ঠেলে দেয়। তাহলে এখানে আরও একটি প্রশ্ন এসে দাড়ায়, সেটা হলো যাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয় তারা সবাইকি প্রকৃত অর্থে অপরাধী? এই প্রশ্নের উত্তরে ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের তিহার জেলের কথা না বললেই নয়।

কয়েদীদের কাছে তিহার জেল নয়,তিহার আশ্রম। তিহার কেন্দ্রীয় কারাগার, তিহার জেল বা তিহার আশ্রম ভারতের বৃহত্তম কারাগার। নতুন দিল্লির চাণক্যপুরী অঞ্চল থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে তিহার গ্রামে এই কারাগার অবস্থিত। কারাগারের পার্শ্ববর্তী অঞ্চল হরিনগর নামে পরিচিত। কারেকশনাল ইনস্টিটিউট এই কারাগারের রক্ষণা বেক্ষণের কাজে নিযুক্ত। এই সংস্থার উদ্দেশ্য কারাবন্দীদের হাতের কাজ, শিক্ষা ও নিয়মনীতি সম্পর্কে অবহিত করে তাদের সমাজের সাধারণ নাগরিকে পরিণত করা। এই কারাবন্দীদের দ্বারা উৎপাদিত দ্রব্যের ব্র্যান্ডের নাম তিহার। সরকারিভাবে সর্বোচ্চ ৫২০০ বন্দী রাখার অনুমোদন থাকলেও, এই জেলের মোট বন্দীর সংখ্যা প্রায় ১২,০০০।

তিহার গ্রামে তিহার জেল নির্মিত হয় ১৯৫৮ সালে। প্রথম দিকে এটি ছিল পাঞ্জাব রাজ্য পরিচালিত একটি সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কারাগার। ১৯৬৬ সালে জাতীয় রাজধানী দিল্লি অঞ্চলের হাতে এই জেলের মালিকানা তুলে দেওয়া হয়। ১৯৮৪ সাল থেকে এই জেলে কিছু অতিরিক্ত সুযোগসুবিধার ব্যবস্থা করা হয় এবং এই জেলের ইংরেজি নাম পরিবর্তন করে তিহার প্রিজনস রাখা হয়। আদি তিহার জেলটি ছিল তেবাতিয়া জাটদের সম্পত্তি।

কারা-অধীক্ষক থাকাকালীন যখন এই জেলের এক্তিয়ার কিরণ বেদির হাতে ছিল, তখন তিনি এই জেলের একাধিক সংস্কার সাধন করেছিলেন। এই সময় জেলের নাম রাখা হয় তিহার আশ্রম। এছাড়াও তিনি জেলরক্ষী ও বন্দী উভয়ের জন্য বিপশ্যনা ধ্যান অনুষ্ঠানের প্রবর্তন করেন। এই জেলের এক বন্দী ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস নামক ভারতের সর্বোচ্চ জনকৃত্যক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

অপর দিকে গুয়ান্তানামো কারাগার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি কারাগার যা বন্দীদের ওপর অমানুষিক নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত। এই কারাগারে বন্দীদের বিনাবিচারে আটকে রাখা হয় এবং তথ্য আদায়ের জন্য তাদের উপর চালানো হয় অমানুষিক শারীরিক, মানসিক ও যৌননির্যাতন।

যেহেতু ভালো এবং মন্দ মিলিয়ে আমাদের সমাজ, তাই অঞ্চল ভেদে আইনের প্রয়োগ ও বিচার ব্যবস্থাও ভিন্ন। তাই বলবো বন্দীদের সাথে এমন আচরণ করা উচিৎ নয় যা তাদেরকে আরো ধংসের দিকে নিয়ে যায়। বরং বন্দীদের ভালো দিক গুলোকে মূল্যায়ন করে তাদের সাথে এমন আচরণ করা উচিৎ যেনো তারা সমাজের উপযোগী  মানুষিকতার মানুষ হয়ে আবার সমাজে ফিরে আসতে পারে।

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭