লিভিং ইনসাইড

শারীরিক সম্পর্ক: প্রেম, টাইম পাস নাকি আসক্তি?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 01/10/2020


Thumbnail

 

বাংলাদেশে এখন বিপদজ্জনক হারে বাড়ছে ধর্ষণ এবং নারী নির্যাতনের ঘটনা। প্রায় প্রতিদিনই পত্রিকায় নানা রকম ধর্ষণের ঘটনা আমরা দেখছি। এই ধর্ষণের ঘটনাগুলো প্রকাশিত হচ্ছে; নির্যাতিত নারীরা আইনের আশ্রয় নিচ্ছেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে যে, ধর্ষণ নয়; বরং উভয়পক্ষের সম্মতিতে বিয়ে বর্হিভূত শারীরিক সম্পর্ক বাড়ছে। শারীরিক সম্পর্কের প্রতি তরুণ প্রজন্ম থেকে শুরু করে প্রোঢ়দের মধ্যেও নানা রকম আর্কষণ এবং উদ্দীপনা আমাদের সমাজে আরেকটি ভয়ংকর চিত্র।

গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক যেটিকে আমরা সহজ বাংলায় বলি পরকীয়া, তা বাড়ছে। পরকীয়ার কারণে অনেক খুন ও অপরাধও হচ্ছে। তরুণ-তরুণীরা এখন প্রেম ভালবাসা মানে রাস্তায় বসে বাদাম খাওয়া কিংবা ফুচকা খাওয়া বা রিক্সায় করে অন্ধকার গলিতে ঘনিষ্ঠতা বোঝায় না। এখন তরুণ-তরুণীদের কাছে প্রেম মানেই হলো শরীর। তাদের শারীরিক সর্ম্পকটা যেন প্রেমের পথকেই প্রশস্ত করে। প্রেমে যেন অনিবার্য উপকরণ হলো- শারীরিক সম্পর্ক।

বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কের যৌক্তিকতা বা নৈতিকতা কী- সে প্রশ্ন আমাদের নয়। সেই বির্তকে আমরা যাবো না। কিন্তু বাংলাদেশে এখন বিয়ে বর্হিভূত শারীরিক সম্পর্কের হার অনেক বাড়ছে। এ নিয়ে যদি কোন গবেষণা হতো, তাহলে বোঝা যেত এই হারটি আসলে কত। শুধু মাত্র স্ত্রীর সঙ্গে সর্ম্পকেই সন্তুষ্ট, এমন মানুষের সংখ্যা এখন উদ্বিগ্নজনক ভাবেই কমে যাচ্ছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

আর এই যে, শারীরিক সম্পর্ক সেই শারীরিক সর্ম্পকের কোন বয়স ভেদও দেখা যাচ্ছে না। টিনএজ থেকে শুরু করে বৃদ্ধরা সবাই নানা রকম শারীরিক সম্পর্কে আগ্রহী। একজন পুরুষ এবং নারীর মধ্যে আবেগ, ভালবাসা, প্রেম কাজ করবে- এটাই স্বাভাবিক। এই প্রেমের অনিবার্যতায় তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হতেই পারে। কিন্তু এখন যেই শারীরিক সম্পর্কগুলো হচ্ছে তার কতটুকু প্রেম? নাকি এটা শুধু টাইম পাস।

অনেকেই স্বীকার করেছেন যে, একাকিত্বের জীবনে তাদের টাইম পাস করার জন্য শারীরিক সম্পর্ক জরুরী। এই শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে তারা সজীব হন, সতেজ হন। তাদের তারুণ্যকে ধরে রাখতে পারেন। অবসর থেকে তারা মুক্ত হোন। আবার অনেকেই বলছেন যে, শারীরিক সম্পর্কের প্রধান কারণ হলো প্রেম। প্রেমের থেকেই প্রিয় মানুষকে কাছে পাওয়ার জন্য; প্রিয় মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই তাদের মধ্যে শারীরিক সর্ম্পক হয়। তারা মনে করেন যে, বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোন বাধা নেই। পুরুষ এবং নারী যদি একমত হন, তাহলে সেই শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে কোন বির্তক থাকার কথা নয়।

আবার অনেকে বহুগামিতার পথেও আকৃষ্ট হচ্ছেন। এক নারী বা এক পুরুষ নয়, বহু নারী বহু পুরুষের সঙ্গে বিচিত্র বহুগামি সম্পর্কে আকৃষ্ট হচ্ছেন অনেকেই। এটা যে, শুধু পুরুষের বেলায় প্রযোজ্য তা না। পুরুষ এবং নারী দু’জনেরই বহুগামিতা দেখা যাচ্ছে। একজন পুরুষের অনেকগুলো মেয়ে বান্ধবী। দিন তারিখ নির্ধারণ করে তারা শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করেন। আবার অনেক মেয়েরও একাধিক বয়ফ্রেন্ড এবং একাধিক সর্ম্পক তাদের রয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে মিন্নির ঘটনাটি আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। মিন্নি শুধু একা না মিন্নির মতো এ রকম বহু ঘটনা ঘটছে। প্রশ্ন হলো এই যে, বেশুমার শারীরিক সর্ম্পক তৈরি হচ্ছে এটির নৈতিকতার প্রশ্ন না হয় আমরা উঠিয়ে রাখলাম। কিন্তু এটি আসলে কি- এটি কি প্রেম, আসক্তি, নাকি টাইমপাস। এটি যাই হোক না কেন- এই অনৈতিক, অযৌক্তিক শারীরিক সম্পর্কের কারণে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। এবং নানা রকম অস্বস্তি এবং প্রতিহিংসা সৃষ্টি হচ্ছে সমাজে এবং সংসারে।

কাজেই, আমরা যদি আমাদের নৈতিকতার ন্যূনতম জায়গাটা বজায় না রাখি তাহলে আমাদের এই শারীরিক সর্ম্পক সমাজে যেমন একটা অস্বস্তি তৈরি করবে; তেমনি ভাবে আমাদের সম্পর্কের পবিত্রতা গুলোকেও নষ্ট করবে।    



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭