সোশ্যাল থট

ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন ঘটনাভিত্তিক করে লাভ কম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 06/10/2020


Thumbnail

`গ্রেফতার চাই`, `বিচার চাই`, `ক্রসফায়ার চাই` টাইপের একদিনের আন্দোলন করা সহজ। বিকেলে একটা জমায়েত ডাকলে এর আগে দুপুরেই  খবর পাওয়া যায় যে গ্রেফতার হয়েছে, রিমান্ড হয়েছে। ডাকার আগেই আন্দোলন সফল। তারপর আর কী হয় কেউ জানে না। সুবর্ণচরের ধর্ষক রুহুল আমিন কেন এক বছরের জামিন পাবে না, সেটা নিয়ে সে পাল্টা শোকজ করায় রাষ্ট্রপক্ষকে।

ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন ঘটনা ভিত্তিক করে লাভ কম।। এমসি কলেজে ঘটনা ঘটেছে, পুলিশ এরেস্ট করে ফেলেছে-আন্দোলন শেষ। নোয়াখালিতে ঘটনা ঘটেছে, এরেস্ট করে ফেলেছে-সুতরাং আন্দোলন আর কী নিয়া করা হবে!

এইসব বিচ্ছিন্ন আন্দোলন ধর্ষন কমাতে পারছে না। এখন প্রয়োজন দফা ভিত্তিক দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলন। নারী নির্যাতন বন্ধে রাষ্ট্র, সরকার, সমাজকে কী কী দায়িত্ব নিতে হবে সেগুলো চিহ্নিত করা প্রয়োজন এবং সেই মোতাবেক দীর্ঘ আন্দোলন তৈরি করে অর্জনে বাধ্য করা দরকার। নইলে হাওয়াই মিঠাই আন্দোলনে সমাজ পরিবর্তন হবে না।

১. আইন সংশোধন: প্রথমেই দাবি করতে হবে আইন পর্যালোচনা করে সংশোধন করা। বিদ্যমান আইন ধর্ষন প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছে, তা তো দেখাই যাচ্ছে। তাহলে আইনকে কীভাবে শক্তিশালী করা যায় সেই ধাপগুলো চিহ্নিত করতে হবে এবং  আইনে সেই পরিবর্তন আনতে সরকারকে চাপ প্রয়োগ করতে হবে। আইনে কী কী সংশোধন দরকার সে বিষয়ে বিজ্ঞ আইনজীবি, পুলিশ প্রশাসন, ভিকটিমদের সাপোর্ট প্রদানে অভিজ্ঞ মানবাধিকার কর্মীবৃন্দের মতামত নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব তৈরি করতে হবে। শুধু আইনমন্ত্রনালয়ের উপর নির্ভর করে ফাঁকা `সংশোধন করো` দাবিতে ফল হবে না।

২. নারী নির্যাতন দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল: শুধুমাত্র নারী নির্যাতন, যৌণ নির্যাতন এসবের দ্রুত বিচারের জন্য প্রতিটি জেলায় ডেডিকেটেড আদালত স্থাপনের দাবি করতে হবে। আমরা অবশ্যই চাই সব অপরাধের দ্রুত বিচার হোক, কিন্তু বাস্তবে হাজার হাজার মামলা বছরের পর বছর  ধরে ঝুলে থাকে। তাই আলাদা দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনার রায় পাওয়া গেলে সম্ভাব্য অন্যান্য অপরাধীরাও সতর্ক হবে।

৩. সামাজিক প্রচারণা: নারী মন্ত্রনালয় ( এইটার নাম মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়।) এর নাম বদলে নারী ও শিশু মন্ত্রনালয় করতে হবে। এই মন্ত্রনালয় এবং তথ্য মন্ত্রনালয়কে  নারী ও যৌণ নিপীড়ন বিরোধী জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচুর কাজ করতে বাধ্য করতে হবে। কেউ নির্যাতিত হলে কীভাবে দ্রুত পুলিশে রিপোর্ট করবে ( যেমন ৯৯৯ নম্বর) এগুলোর প্রচার দরকার।

৪. শিক্ষা ও সংস্কৃতি: শিক্ষা কারিকুলামে নারী অধিকার বিষয়ক বেসিক জ্ঞানকে কারিকুলামে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। নারীরাও যে মানুষ, পাওয়ার স্ট্রাকচারের কারনে যে তাঁদেরকে দমন করার রাজনীতিরই অংশ যৌণ হয়রানি, এসবের অন্তত একেবারে বেসিক জ্ঞান একজন কিশোর বা তরুণকে দিতে হবে।ফেসবুক থেকে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭