লিভিং ইনসাইড

যৌন সুখ কি পুরুষের একচেটিয়া অধিকার?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 06/10/2020


Thumbnail

 

শাহিনা রহমান (ছদ্মনাম)। পেশায় একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। বয়স ত্রিশের কোটায়। বিয়ে করেছেন পারিবারিকভাবে। তাও ১০/১২ বছর হয়েছে। দাম্পত্য জিবনে দুই সন্তানের জননী। সংসার আর অফিস সামলাতেই কেটে যায় তার সময়। শাহিনার স্বামীও একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। বাসায় ফিরতে প্রায়ই সন্ধ্যে হয়ে যায় তার। ফলে শারীরিক ক্লান্তি থাকে দু’জনেরই। এতে করে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও হয় অনেক কম। একদম হাতে গোনা। কিন্তু শাহিনা তার শারীরিক অতৃপ্তির বিষয়টি বুঝতে পারেন। বুঝতে পারেন বঞ্চিত হওয়ার বিষয়টি। আকারে-ইঙ্গিতে তার স্বামীকে বিষয়টি বুঝাতেও চেষ্টা করেন। কিন্তু তার স্বামী সাড়া দানে ব্যর্থ। আর এভাবে দীর্ঘ দিন চুপ ছিলেন শাহিনা। কিন্তু একটা সময় জৈবিক প্রয়োজনে ভিন্ন পথ বেছে নেন।

শাহিনার মতো আরেকজন নারী ঠিক একই কারণে ডিভোর্স নেন। অবশ্য সবাই জানেন তারা মিউচুয়ালি ডিভোর্সড। কিন্তু সত্যটা কাউকে জানতে দেননি। কাউকে বলেনও নি তিনি। বিবাহিত সম্পর্কে শাহিনার মতো যৌন সুখ থেকে বঞ্চিত নারী এই সমাজে অনেক। কিন্তু সমাজে যৌনতা একটা সংকোচের বিষয়। তাই সহজাতভাবেই কেউ এসব নিয়ে মুখ খুলেন না। তবে অনেকেই তা পেতে পা বাড়ান নিষিদ্ধ পথে। শুধু একটু জৈবিক সুখের আশায়।

শাহিনার মতো অসংখ্য নারীর প্রশ্ন একটাই, যৌন সুখ কি পুরুষের একচেটিয়া অধিকার? নাকি এই অধিকার নারী-পুরুষ দু’জনেরই। শাহিনা জানান, ‘আমিও এই রকম বেশ কয়েকজনকে চিনি। যারা স্বামীর কাছ থেকে কার্যকর সাড়া পান না। আবার মুখ ফুটে অধিকারও চাইতে পারেন না’। তিনি আরও বলেন, ‘অবশ্য চাইলেও সব সময় পাওয়া যায় না’।

বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকজনের নারীর সাথে কথা হয়। কিন্তু এদের বেশিরভাগই সংকোচে এসব বিষয়ে কথা বলতে চাননি। তবে দু’এক জানান, এসব তো মুখে বলার বিষয় নয়। তবে এটা সত্যি অনেক সময় ইঙ্গিত করলেও কোন সাড়া পাওয়া যায় না। আর এটা অনেকের ক্ষেত্রেই হয়। তবে অধিকারের বিষয়ে বললে জানান, যৌন সুখে নারীরও অধিকার থাকতে পারে, এই রকম ভাবনা পুরুষের মধ্যে এখনো তৈরি হয়নি। এটা একান্তই দু’জনের মধ্যে ভাব-ভালোবাসার বিষয়।

নারী অধিকার ও জেন্ডার সংবেদনশীলতা নিয়ে কাজ করেন, এমন একজন নারী জানান, পুরুষের যৌন সুখের জন্য একাধিক সুযোগ রয়েছে। কোন পুরুষ চাইলেই খুব সহজে ইন্টারনেটের নীল জগৎ থেকে ঘুরে আসতে পারে। ঘুরে আসতে পারে পাড়া মহল্লার কোন এক পট্টি থেকে। ভাসমান নারী যৌন কর্মীর সংখ্যাও কম নয়। এসবের বাইরে শত শত বিকল্প সুযোগ রয়েছে। কিন্তু আমাদের সমাজে নারীর যৌন সুখ তো একজনের হাতেই। আর তা সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় দিক থেকেও বৈধ। কিন্তু তারপরও নারীরা এই অধিকার থেকে দীর্ঘদিন ধরেই বঞ্চিত। অবশ্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে বঞ্চনা বলা না গেলেও, অধিকারটা পুরুষের দিকে একপেশে।      

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭