ইনসাইড টক

‘ধর্ষণরোধে থানা নারীবান্ধব করতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 07/10/2020


Thumbnail

সম্প্রতি ধর্ষণ বেড়ে যাওয়া, ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন এবং ধর্ষণরোধে করনীয়সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে কথা বলেছেন মানবাধিকার নেত্রী অ্যাডভোকেট এলিনা খান। পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজস্ব প্রতিবেদক জুয়েল খান

বাংলা ইনসাইডারঃ ধর্ষণ বাড়ছে কেন?

এলিনা খানঃ তরুণ প্রজন্ম এখন কর্মবিমুখ হয়ে পড়ছে, অন্যদিকে দুর্নীতি বেড়ে যাওয়ার ফলে তরুণদের মধ্যে শটকটে বড় হওয়ার প্রবণতা দেখ দিচ্ছে। তারা দেখছে, গাড়িচালক থেকে শুরু করে কর্মচারী, রাজনতীবিদরা শটকটে অনেক টাকার মালিক হয়েছে। তখন তারা শটকট রাস্তার ধরতে যায়। এতে করে সন্ত্রাসী কিংবা প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় এসে ঔদ্বত্যপূর্ণ আচরণ করতে থাকে। এভাবে ধর্ষণ, অত্যাচার, সন্ত্রাসহ নানা ধরনের অপকর্মে যুক্ত হয়ে পড়ে।

বাংলা ইনসাইডারঃ ধর্ষণের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে কিছু বলেন।

এলিনা খানঃ ধর্ষণের বিচার বলতে শুধু আদালতের মাধ্যমে নয়, বিচার শুরু হয় থানা থেকে। থানা থেকেই নারী শিশু নির্যাতনের অনেক মামলা মিথ্যা হয়ে যায়। এই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ভিকটিম কিন্তু আইন সম্পর্কে জানেন না তাই থানা থেকে সুযোগ নিয়ে নারী শিশু নির্যাতন মামলা দূর্বল করে দেয়া হয় ফলে সঠিক বিচার হয় না। এই কারণে ধর্ষকরা বিচারের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে আরো ঔদ্বত্যপূর্ণ আচরণ করে। ওই নারীর পরিবার আরো বেশি লাঞ্ছিত হয়ে থাকে।

বাংলা ইনসাইডারঃ আইনের পাশাপাশি আর কোনো প্রতিবন্ধকতা?

এলিনা খানঃ রাজনীতির মধ্যে এক ধরনের দূবৃত্তায়ন, রাজনীতির মধ্যে ধ্বস নেমেছে। রাজনীতি বলতে এখন পেশিশক্তির মাধ্যদিয়ে অবস্থান শক্ত করা। এতে করে রাজনীতিবিদদের ছত্রছায়ায় অনেকেই অপকর্ম করার সাহস পাচ্ছে। এছাড়া প্রশাসনকে আরো বেশি জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে। প্রশাসনের এতো সোর্স থাকা সত্বেও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ধর্ষণের ঘটনা কীভাবে এতোদিন চাপা থাকলো। সামাজিক মাধ্যমে মানুষ জানলো কিন্তু প্রশাসন কেন জানতে পারলো না, এই জায়গাতে আরো বেশি দ্বায়িত্বশীল হতে হবে প্রশাসনকে। এছাড়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আরো বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। কোনো ঘটনা ঘটলে জনপ্রতিনিধিরা সবার আগে জানে তারাই পারে ধর্ষণরোধে বড় ভূমিকা নিতে।

বাংলা ইনসাইডারঃ ধর্ষণরোধে করনীয় কী হতে পারে?

এলিনা খানঃ পরিবার থেকে সন্তানদের নৈতিকতা ও মূলবোধের শিক্ষা দেয়া হচ্ছে না। ফলে সন্তানরা কাকে সম্মান করতে হবে, কার সঙ্গে কি ধরনের ব্যবহার করতে হবে সেই বিষয়টা তারা জানে না। বর্তমানে শিশুরা মারামারির ভিডিও গেম খেলায় তাদের মধ্যে এক ধরনের হিংস্রতার জন্ম হচ্ছে। একটা সময় তারা বড় হয়ে অনেক বেশি অমানবিক হয়ে উঠছে। তাই পারিবারিক শিক্ষা এবং নৈতিক শিক্ষার প্রতি জোর দিতে হবে। এছাড়া সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়রোধে রাজনীতিবিদদের মধ্যে সচ্ছতা আনতে হবে। তাদের মধ্যে আদর্শ ধারণ করতে হবে যাতে করে কোনো অপরাধী কারো ছত্রছায়ায় এসে পার পেতে না পারে। এছাড়া আর কোনো দেলোয়ার যাতে তৈরি না হয় সেজন্য রজনীতিবিদদের আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে এখন থেকেই দেলোয়ারদের প্রতিরোধ করতে হবে।

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭