ইনসাইড টক

‘করোনায় আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 13/10/2020


Thumbnail

চলমান করোনা পরিস্থিতি, করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ ও করোনায় আমাদের করনীয়সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ এবিএম আব্দুল্লাহ। পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজস্ব প্রতিবেদক জুয়েল খান। 

বাংলা ইনসাইডারঃ আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআরবির এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার ৪৫ শতাংশ ও ঢাকার বস্তির ৭৪ শতাংশ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং তাদের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। আপনি বিষয়টা কীভাবে দেখছেন?

এবিএম আবদুল্লাহঃ ওই গবেষণা প্রতিবেদন আমার মনে হয় সত্য। আমি আরো ৩/৪ মাস আগেই বলেছি, করোনা টেস্টের যে সংখ্যাটা বলা হচ্ছে সেটা প্রকৃত সংখ্যা নয়। প্রকৃক সংখ্যা অনেক বেশি। বিশেষ করে অল্প সংখ্যক মানুষ টেস্টের আওতায় আসার ফলে প্রকৃত সংখ্যা আমাদের জানার বাইরে থেকে যাচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০ হাজার লোকের টেস্ট করা হয় কিন্তু প্রতিদিন ৫০ হাজার টেস্ট করা হত তাহলে প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা সামনে আসতো। টেস্ট কম হচ্ছে ফলে শনাক্ত কম হচ্ছে।

বাংলা ইনসাইডারঃ লক্ষণছাড়া করোনার ঝুঁকিগুলো কি কি?

এবিএম আবদুল্লাহঃ ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আক্রান্তের ৮২ শতাংশের কোনো উপসর্গ নেই। আসলে লক্ষণ ছাড়া করোনার ঝুঁকিটা তেমন বেশি না। অনেক রোগী লক্ষণছাড়া করোনায় আক্রান্ত হতে পারে। লক্ষণ ছাড়া আক্রান্তের একটাই ঝুঁকি সেটা হচ্ছে, আক্রান্তরা না জানার কারণে মানুষের মধ্যে চলাফেরা করে আরো বেশি মানুষকে সংক্রমিত করছে। এতে করোনা ছড়ানোর পরিমাণ বাড়তে পারে।

বাংলা ইনসাইডারঃ ঢাকা শহরে ৪৫ শতাংশ আক্রান্তের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, এটা কি ইতিবাচক? 

এবিএম আবদুল্লাহঃ জিনিসটা ভাল কিন্তু এটা ভেবে মানুষ যেন উদাসীন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই। নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার দিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

বাংলা ইনসাইডারঃ অ্যান্টিবডি তৈরি হলে পূণরায় আক্রান্তের ঝুঁকি কতটা?

এবিএম আবদুল্লাহঃ অবশ্যই আবার আক্রান্তের ঝুঁকি রয়েছে। কেউ যদি মনে করেন যে অ্যান্ডিবডি তৈরি হয়েছে তাই তিনি আর আক্রান্ত হবেন না এটা ভুল ধারণা। একবার আক্রান্ত হওয়ার পরেও পূণরায় আক্রান্তে ঝুঁকি থেকেই যায়। তাই মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোয়, জনসমাগম এড়িয়ে চলার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

 বাংলা ইনসাইডারঃ এই গবেষণা করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ মোকাবেলায় কি ভূমিকা রাখবে?

এবিএম আবদুল্লাহঃ আমার মনে হয় না এই তথ্য করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ মোকাবেলায় কোনো ভূমিকা রাখবে। যেহেতু সামনে শীত তাই করোনার ঝুঁকি বাড়তেই পারে। সুতরাং স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে আরো বেশি যত্নবান হওয়া দরাকার। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের ঢিল দেয়া চলবে না।

বাংলা ইনসাইডারঃ অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করোনা প্রভাব কম কেন?

এবিএম আবদুল্লাহঃ আমার মনে হয় অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। অন্যদিকে আমাদের দেশে যে ভাইরাস পাওয়া যাচ্ছে সেটা রুপ বদল করে হয়তো তুলনামূলক কম শক্তিশালী, যার কারণে মানুষের ওপরে কম প্রভাব বিস্তার করছে।

সবচেয়ে বড় বিষয় হলো আমাদের দেশর মানুষ গ্রামে মাঠে ঘাটে কাজ করে এবং শহরের রাস্তাঘাটে চলাচলের কারণে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি পায়। যার কারণে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। বিশেষ করে যারা বস্তিতে থাকেন তাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। এতে করে তাদের আক্রান্তের ঝুঁকি অনেক কম।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭