ইনসাইড আর্টিকেল

অবাক বাংলাদেশ, বিস্ময়ে তাকিয়ে রয় বিশ্ব

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 16/10/2020


Thumbnail

সাল ১৯৭১, মার্চের ২৫ তারিখ। জন্ম নিল এক শিশু। কিন্তু ওই রাতেই শুরু হল যুদ্ধ। তাও একটানা ৯ মাস। সারা বিশ্ব তাকিয়ে ছিল এই শিশুর দিকে। কি হয়! বাঁচবে তো! কিন্তু সকলের শঙ্কা কাটিয়ে নিজের অস্তিত্ব জানান দিল শিশুটি। দেখতে দেখতে ’৭১ এর এই যুদ্ধ শিশু আজ পরিণত। সুঠাম ও রিষ্টপুষ্ট হয়ে সে আজ বিশ্বের বিস্ময়। একটা সময় যে শিশুটির বেঁচে থাকা নিয়ে শঙ্কা ছিল, ভয় ছিল। সেই শিশুই আজ পরিণত হয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে কোটি কোটি মানুষকে। কি চিনতে কষ্ট হচ্ছে! বুঝতে পারছেন না, কে ওই শিশু! থাক, আর ঘুরিয়ে পেচিয়ে কাজ নেই। ‘৭১ এর ওই শিশুটিই আজকের বাংলাদেশ। আপনার, আমার, আমাদের সবার প্রিয় মাতৃভূমি, জননী স্বর্গভুমি বাংলাদেশ।

ভাবছেন, হটাৎ করে বাংলাদেশ নিয়ে এতো আবেগ আপ্লুত কেন! করোনা প্রাদুর্ভাবের এই অস্থিরতার মধ্যে কি এমন করল বাংলাদেশ। সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার যে দেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে উল্লেখ করেছে; সেই দেশটিকেই এখন বিশ্বের বিস্ময় বলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের আইএমএফ। আইএমএফ’র তথ্য মতে, চলতি বছরে অর্থাৎ ২০২০ সালে সবচেয়ে বেশি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জন করা, বিশ্বের শীর্ষ তিন দেশের একটি হবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে থাকবে শুধু গায়ানা ও দক্ষিণ সুদান। মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) প্রকাশিত আইএমএফ ‘র ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

করোনা সংকটের কারণে বিশ্বের বড় বড় অর্থনীতির দেশগুলো যখন হাবুডুবু খাচ্ছে। তখন বাংলাদেশের এমন অর্জনে বিস্মিত সারা বিশ্ব। বিশেষ করে আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতেই এই নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। দেশটির গণমাধ্যম থেকে শুরু করে নীতিনির্ধারকরা, সকলেই সরব হয়ে উঠেছে। ভারতীয় টেলিভিশন এনডিটিভি খবরে এমনটাই জানা যায়। ভারতীয় এই ইলেকট্রনিক মাধ্যমটির খবরে বাংলাদেশ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বলা হয়, আইএমএফ এর প্রতিবেদন বলছে ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি হবে ১ হাজার ৮৮৮। আর ভারতের মাথাপিছু জিডিপি হবে ১ হাজার ৮৭৭ ডলার। বাংলাদেশের এই অর্জন কি শুধু করোনাকালীন; নাকি সামনের দিন গুলোতেও এমন অর্জন আর অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে। আর এই বিষয়ে ভারতের অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকদের নিকট এমন প্রশ্নও তুলে ধরা হয়।

বাংলাদেশের যে কোন অর্জন আর অগ্রগতি নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের এমন বিস্ময় প্রকাশ, নতুন কিছু নয়। তবে ভারতীয় অনেক বিশেষজ্ঞই বাংলাদেশের অর্জনকে ইতিবাচকভাবে দেখেন। গত বছর ভারতীয় বাঙালি নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো বেশ কিছু সূচকে ভারতের চেয়ে অনেক এগিয়ে গেছে। এমনটা যে, শুধু ভারতীয় এই অর্থনীতিবিদের দাবি, তা নয়। বছর দুয়েক আগে, একজন পাকিস্তানী সাংবাদিকও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এক ভিডিও বার্তায় দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমরান খানকে উদ্দেশ্যে করে এমন কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানকে ইউরোপ আমেরিকা বানানোর দরকার নেই, শুধু বাংলাদেশের মতো বানিয়ে দিন। তাইলেই হবে’।

আর কথা বাড়াবো না। শেষ করব কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘দুর্মর’ কবিতার কয়েকটি লাইন দিয়ে...

হিমালয় থেকে সুন্দরবন, হঠাৎ বাংলাদেশ
কেঁপে কেঁপে ওঠে পদ্মার উচ্ছাসে,
সে কোলাহলের রুদ্ধস্বরের আমি পাই উদ্দেশ
জলে ও মাটিতে ভাঙ্গনের বেগ আসে।

হঠাৎ নিরীহ মাটিতে কখন
জন্ম নিয়েছে সচেতনতার ধান,
গত আকালের মৃত্যুকে মুছে
আবার এসেছে বাংলাদেশের প্রাণ।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭