টেক ইনসাইড

আউটসোর্সিং এক সম্ভাবনার নাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 14/08/2017


Thumbnail

পলাশ চাকরি করেন রাজধানীর একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে। থাকেন ধানমণ্ডি এলাকায়। যে বেতন পান তা দিয়ে সংসার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয় তাঁকে। কোনোভাবেই খরচের সঙ্গে মানিয়ে উঠতে পারছিলেন না তিনি। পলাশ কম্পিউটারের সাধারণ কাজগুলো জানেন। এক বন্ধুর মাধ্যমে পলাশ প্রথম জানতে পারেন আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে টাকা উপার্জন করা যায়। তিনি আউটসোর্সিংয়ের ওপর একটি প্রশিক্ষণনিয়ে কাজ শুরু করে দেন। শুরুর দিকে তেমন উর্পাজন না হলেও হাল ছাড়েননি পলাশ। এক পর্যায়ে তাঁর উপার্জন ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। চাকরি ছেড়ে নিজেই ছোট একটা আউটসোর্সিং ফার্ম গড়ে তোলেন। কিছু লোকের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করেন পলাশ।

এভাবেই পলাশের মতো লাখো  যুবক গৎবাঁধা চাকরিতে বসে না থেকে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। আর এই তরুণদের ওপর ভর করেই দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এগিয়ে যাচ্ছে যুবসমাজ। ঘরে বসেই এখন স্বপ্নদেখছে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার।

আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যম মিলিয়ন ডলার আয় করার সম্ভব। আর এমন সম্ভাবনার কারণেই এর ওপর সব বয়সের মানুয়ের আগ্রহ দিন দিন বেড়ে চলছে। ফ্রিল্যান্সিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছেন অনেকেই। এসব ফ্রিল্যান্সাররা আউটসোর্সিং কাজ করে জীবিকা নির্বাহের পাশাপাশিদেশের মোট জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। একদিকে বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাচ্ছে লাখো চাকরি না পাওয়া শিক্ষিত বেকার।

আউটসোসিং এর সম্ভাবনা নিয়ে কয়েকজন সফল ফ্রিল্যান্সারের সঙ্গে কথা হলে তারা জানায়, বাংলাদেশেই এখন অনেক ফ্রিল্যান্সার তৈরি হচ্ছে। নিজ নিজ বিষয়ে কাজ করছে তারা। এটা ভালো দিক। দেশের চাকুরির যে অবস্থা তাতে বেকার তরুণ-তরুণীরা ফ্রিল্যান্সিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছে।

বাংলাদেশে আউটসোর্সিং এর ক্ষেত্রে কী রকম প্রতিবন্ধকতা রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তাঁরা বলেন, দেশে এখনো দক্ষ ফ্রিল্যান্সারের বড্ড অভাব। এজন্য দরকার ভালমানের প্রশিক্ষক। তাহলেই গড়ে উঠবে বিশ্বমানের ফ্রিল্যান্সার। এ বিষয়ে সরকারি নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। তবেই দেশে দক্ষ ফ্রিল্যান্সার তৈরি হবে। আর ফলে দেশের অর্থনৈতিক আয় বাড়বে।

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকার দক্ষ ফ্রিল্যান্সার তৈরির লক্ষে ‘লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং’নামর একটি বিশেষ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তারা জানান, ‘লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় ৫৫ হাজার দক্ষ ফ্রিল্যান্স তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য দক্ষ ফ্রিল্যান্স তৈরির মাধ্যমে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং আউটসোর্সিং বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো। প্রকল্পটির প্রধান কার্যক্রম হবে, ইউনিয়ন পর্যায়ে ২০ হাজার নারীকে বেসিক আইটি লিটারেসি প্রশিক্ষণ প্রদান এবং ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে ২৫ হাজার মানুষকে আউটসোর্সিং ফ্রিল্যান্স হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বেসিক আইটি শিক্ষা দেওয়া।

প্রকল্পের আওতায় উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে ১০ হাজার জনবলকে বিশেষায়িত আউটসোর্সিং কাজে ফ্রিল্যান্স হিসেবে গড়ে তোলার জন্য উচ্চতর আইটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এখন স্বপ্ন নয়, এখন সত্যি। বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি খাতে ৫ বিলিয়ন ডলার অর্জিত হবে। দক্ষ মেধাবী জনশক্তি, মানবসম্পদ আমাদের অহংকার। সেটাকে কাজে লাগাতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশরূপকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যকে সামনে রেখে সরকার একুশ শতকের উপযোগী দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিশ্বমানের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি করা হচ্ছে।

প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে অনলাইন আউটসোর্সিং প্রসারের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন ধরনের  প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।  এগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে দেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে এবং ইন্টারনেট ভিত্তিক কার্যক্রমের এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।

বাংলা ইনসাইডার/এসএ/ জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭