কুয়েতে নতুন অভিবাসী আইন

অভিবাসী শ্রমিক নিয়ে সম্প্রতি কুয়েতের পার্লামেন্টে সর্বসম্মতিক্রমে নতুন একটি আইন পাস হয়েছে। নতুন এই আইনের ফলে দেশটিতে অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা কমিয়ে আনতে দেশটির সরকারকে এক বছরের সময় দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে সেখানে থাকা বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের লাখ লাখ শ্রমিক বিপাকে পড়েছেন।

বিশ্বে অভিবাসী শ্রমিকনির্ভর দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম কুয়েত। দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা ৪৮ লাখ। আর সেখানে পাড়ি জমানো দক্ষ ও অদক্ষ অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৩৪ লাখ। দেশটির তেলনির্ভর অর্থনীতির গতিশীলতা ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন তারা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে করোনা মহামারির কারণে তেলের দাম কমে যাওয়ায় কুয়েতের অর্থনীতিতে ধস নেমেছে।

অর্থনীতি সক্রিয় রাখতে এবং দেশে অভিবাসীদের সংখ্যায় ভারসাম্য রাখতেই নতুন আইন জারি করা হয়েছে। অভিবাসীর সংখ্যা ৩০ শতাংশে কমিয়ে আনতে চাইছে কুয়েত সরকার। এছাড়া বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে কুয়েতের জনগণই যেন বেশি সুযোগ-সুবিধা পান সে বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। নতুন এ আইনের কারণে তাই অনেক অভিবাসী শ্রমিককেই এখন বাধ্য হয়ে কুয়েত ছেড়ে দেশে পাড়ি জমাতে হবে।

কুয়েতে অভিবাসী ইস্যু অনেক পুরনো বিষয়। দেশটির আইনপ্রণেতারা সম্প্রতি অভিবাসী শ্রমিক কমানোর জন্য সরকারের ওপর চাপ দিচ্ছিলেন। কোটা ব্যবস্থা চালুর পাশাপাশি সরকারি চাকরিতে কর্মরত অভিবাসীদের কুয়েতিদের দিয়ে প্রতিস্থাপনেরও দাবি তুলেছেন তারা।

কুয়েতের জাতীয় সংসদে গত জুলাই মাসে একটি আইন পাস হয়। ওই আইন অনুযায়ী, দেশটিতে ভারতীয় অভিবাসীর সংখ্যা ১৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। অপরদিকে, মিসর, ফিলিপাইন এবং শ্রীলঙ্কার অভিবাসীর সংখ্যা ১০ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। নতুন আইনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল এবং ভিয়েতনাম থেকে আসা অভিবাসীর সংখ্যা ৫ শতাংশের ওপরে যেতে পারবে না।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে থাকা লাখ লাখ অভিবাসীর জীবনের অনিশ্চয়তা নেমে এসেছে। বিভিন্ন দেশের কঠোর পদক্ষেপের কারণে কাজ হারিয়ে বাধ্য হয়ে নিজের দেশে ফিরতে আসতে হচ্ছে তাদের।