যৌনতার ভিন্ন সাজ: যাত্রা পালা আর পুতুল নাচ

পুতুল নাচ শব্দটা শুনলেই শৈশবের পুতুল খেলা, বিটিভি’র সিসিমপুর অনুষ্ঠানে রশি টেনে পুতুলের নড়াচড়ার কথা মাথায় আসে। আর একটা বিষয় মাথায় আসে। তাহলো মানিকের লেখা পুতুল নাচের ইতিকথা। কিন্তু আজকের গল্পে তুলে ধরব, এক ভিন্ন পুতুল নাচ সম্পর্কে। সেইসাথে থাকবে যাত্রা পালার গল্পও।

ঢাকার খুব কাছেই আশুলিয়ার অবস্থান। শিল্প এলাকা। নগরায়নও গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিতভাবে। আশুলিয়া, সাভার এলাকায় যে শুধু দেশের ৬৪ জেলার মানুষ পাওয়া যায়, তা নয়। বিদেশিদের যাতায়াতও সেখানে কম নয়। যাই হোক, বন্ধুর কাছে শুনলাম কাছেই কোথায় পুতুল নাচ হচ্ছে। আগে কোন দিন দেখিনি, তাই দেখার আগ্রহ দেখালাম। বন্ধুর কল্যাণে গেলাম কাঙ্ক্ষিত প্যান্ডেলের নিচে। দেখতে শুরু করলাম পুতুল নাচ। ঢোল, তবলা আর বাহারি বাদ্য যন্ত্রের তালে তালে শো শুরু হল।

কিছু ক্ষণ পরপর বিরতি দিয়ে বাদ্যযন্ত্রের তাল পরিবর্তিত হয়। আর সেই তালে সঙ্গতি রেখে একের পর এক জামা খুলতে থাকে যৌন পসারিণীরা। হ্যাজাক লাইটের আলোয় চারদিকে ছেলে ছোকরাদের শিষ আর হাততালি। সবকিছু মিলিয়ে এক ভিন্ন রকম পরিবেশ। স্টেজে থাকা নারীকে বখশিস দিয়ে চাইলে যে কেউ স্পর্শ করতে পারছে পছন্দসই অঙ্গ। সেখানে কেউ খুলছে ব্রা এর হুক, কেউ স্পর্শ করছে নাভি, আর কেউ কেউ...।

আর বখশিশের পরিমাণ বেশি হলে রয়েছে পেছনের তাবুতে গিয়ে যৌন সম্ভোগের সুযোগ। পুতুল নাচের নামে এসবই চলছে এখন। তবে এই ধরণের পুতুল নাচ হয়ে থাকে বিভিন্ন মেলার নামে। বিশেষ করে নগরায়ন এলাকায়। যেখানে ভাড়াটিয়া ও শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা বেশি। ঢাকার আশেপাশের বেশ কয়েকটি জেলায় এই ধরণের পুতুল নাচ সংস্কৃতি গড়ে উঠছে। যেখানে প্রকাশ্যভাবেই চলছে যৌনতা। আর এতে অনিরাপদ যৌন সম্পর্ক যেমন বাড়ছে। তেমনি বাড়ছে যৌন সম্পর্কিত অপরাধ।

পুতুল নাচের মতো যাত্রা পালাতেও এখন যৌনতা চলছে। অথচ এককালে গ্রামের মানুষের বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম ছিল এই যাত্রা পালা। কিন্তু কালের পরিক্রমায় এই যাত্রা পালাই আজ যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। পাড়া মহল্লায় যাত্রা পালার নামে চলে যৌনাচার। এতে করে সামাজিক অস্থিরতার পাশাপাশি নৈতিক স্খলনজনিত ঘটনাও বাড়ছে।