ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ট্রাম্প যেভাবে বিশ্বকে বদলে দিয়েছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 25/10/2020


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি আর মাত্র দশ দিন। আসন্ন এই নির্বাচন নিয়ে দেশটির জনগণের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষেরও আগ্রহের শেষ নেই। আগ্রহীদের তথ্য দিতে প্রতিদিনই প্রকাশিত হচ্ছে নানা জরিপ আর বিশ্লেষণের ফলাফল। গতকাল পর্যন্ত প্রকাশিত সেইসব জরিপ আর বিশ্লেষণে রিপাবলিকান প্রার্থী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেনকেই এগিয়ে থাকতে দেখা গেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনে জরিপে বা জনপ্রিয়তায় পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত জয় পান ট্রাম্প। কিন্তু এবার তেমনটা ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম। এর অর্থ হচ্ছে এবার হয়তো হারতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। তবে গত চার বছরে ট্রাম্প বিশ্বকে যেটুকু বদলে দিয়েছেন তাতে নতুন করে তার জয়-পরাজয়ে কিছু যায় আসে না। বিবিসি অনলাইনের এক বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এই কথা।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের হার-জিতের চাইতে বড় কথা তিনি যা করেন তা আমাদের সবার জীবন বদলে দেয়। এতদিন সেটা হয়েছে। নতুন করে আর না হলেও তার প্রভাব থেকেই যাবে। যেমন হোয়াইট হাউজে আসার ছয় মাসের মধ্যে তিনি প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়ে বিজ্ঞানীদের হতাশ করেন। তারা বলছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি আবারও নির্বাচিত হন, তাহলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ঠেকানো অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে। তবে বিশ্লেষকদের ভাষ্য, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে তার দেশে তিনি যে ক্ষতি করেছেন তার প্রভাব রয়ে যাবে দীর্ঘদিন। 

গত নির্বাচনে জয়ী হওয়ার মাত্র সপ্তাহ খানেকের মধ্যে অভিবাসন বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বের সাতটি মুসলিম দেশের অভিবাসীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত বন্ধ করেন তিনি। বর্তমানে বিশ্বের অন্তত ১৩টি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর ভ্রমণ বিধি-নিষেধের আওতায় রয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শাসনামলে মেক্সিকোতে জন্মগ্রহণকারী মার্কিন অধিবাসীদের সংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে মানুষের স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য সংশ্লিষ্ট ভিসাতেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে; বিশেষ করে দেশটিতে যারা বসবাস করছেন তাদের স্বজনদের জন্য। ২০১৬ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্র অন্তত ৮৫ হাজার শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়। পরের বছর এই সংখ্যা ৫৪ হাজারে নেমে আসে। আর আগামী বছর এই সংখ্যা ১৫ হাজারে নেমে আসবে।

২০১৭ সালের অক্টোবরে এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প ভুয়া সংবাদের ব্যাপারে কথা বলেন। যদিও মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট ভুয়া সংবাদ টার্মটি আবিষ্কার করেননি। তারপরও এটি বলা যেতে পারে, ভুয়া সংবাদ টার্মটি জনপ্রিয় করে তুলেছেন তিনি।

গত মাসে বাহরাইন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ইসরায়েলের ঐতিহাসিক সম্পর্ক স্থাপনের চুক্তির মাধ্যমে নতুন মধ্যপ্রাচ্যের ভোরের উদয় হয়েছে বলে প্রশংসা করেন ট্রাম্প। ইসরায়েলের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

হোয়াইট হাউজে আসার প্রথম দিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে স্বাক্ষরিত ১২ দেশের বাণিজ্য চুক্তি ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপকে ভয়াবহ উল্লেখ করে তা বাতিল করেন। এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ায় লাভবান হয় চীন।

২০১৬ সালের ২ ডিসেম্বর ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পরপরই তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। ১৯৭৯ সাল থেকে পূর্বসূরিদের নীতি থেকে বেরিয়ে এসে তিনি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনা করেন।

২০১৯ সালের নববর্ষের সন্ধ্যায় এক টুইট বার্তায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, মার্কিনিদের প্রাণহানি অথবা আমাদের যেকোনও স্থাপনায় ক্ষয়ক্ষতির দায় পুরোপুরি ইরানকে নিতে হবে। তাদের বিশাল মূল্য চুকতে হবে। এ হুমকির পর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরানের অর্থনীতি চরম মন্দার মুখোমুখি হয়। গত বছরের অক্টোবরে দেশটির খাদ্যদ্রব্যের মূল্য ৬১ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এমনকি দেশটিতে তামাকজাত পণ্যের দাম ৮০ শতাংশ বেড়ে যায়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭