ইনসাইড বাংলাদেশ

জোর চেষ্টা আওয়ামী লীগের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 17/08/2017


Thumbnail

বগুড়া-৬ (সদর) আসন থেকে ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে সর্বোচ্চ ২ লাখেরও বেশি ভোটের রেকর্ড করেছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বলা হয়ে থাকে, ওই আসন থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কোনো নেতা প্রার্থী হতে তেমন আগ্রহী হন না।

এত ব্যাবধান সামনে রেখে হাল ছেড়ে দেয়নি ক্ষমতাসীন দলও। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার বগুড়ার উন্নয়নে নানামুখী প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এমনকি দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৬ মাসের ব্যবধানে দু`বার বগুড়া সফর করেছেন। বগুড়ার উন্নয়নের দায়িত্ব তিনি নিয়েছেন বলে সাধারণ মানুষকে তিনি আশ্বস্তও করেছেন। আওয়ামী লীগ মনে করছে, বগুড়ার মানুষ এখন তাঁদের ভুল বুঝতে পেরে বিএনপির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে।

আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশের মতো এখানেও গুঞ্জন চলছে, কোন দল থেকে মনোনয়ন পাচ্ছেন কে? তবে এ ক্ষেত্রে বিএনপির প্রার্থী খালেদা জিয়াই হচ্ছেন বলে অন্যদের তেমন দৌঁড়-ঝাঁপ নেই। আর এদিকে থেমে নেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।

আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এই আসন থেকে মূলত তৎপরতা চালাচ্ছেন জেলা সভাপতি মমতাজ উদ্দিন এবং সহসভাপতি ও বগুড়া পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মন্টুর নাম।

অবশ্য কোনো কারণে খালেদা জিয়া প্রার্থী না হলে জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম মনোনয়ন চাইতে পারেন বলেও জানা গেছে। আর বর্তমান সংসদ সদস্য মো. নূরুল ইসলাম ওমর নিজ দল জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন আশা করেন।

জানতে চাইলে বর্তমান সংসদ সদস্য বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, দল থেকে এখনো সবুজ সংকেত পাইনি। তবে যাঁরা বর্তমান সংসদ সদস্য, তাঁরাতো আশা করছেনই যে মনোনয়ন পাবেন। জাতীয় পার্টির (জাপা) বর্তমান সংসদ সদস্যদেরই দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া উচিত।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এই আসন থেকে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া মূলত গাবতলী আসনের প্রার্থী। কারণ ওখানেই জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান। সদর (বগুড়া-৬) আসন থেকে তিনি বারবার নির্বাচিত হলে একবার বাদে প্রতিবারই ছেড়ে দিয়ে এখানে উপ-নির্বাচন দিয়েছিলেন।

এ প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য বলেন, এখানে বিএনপির ভোট কমেছে অনেক। কারণ খালেদা জিয়া এখানকার সংসদ সদস্য থাকলেও এলাকার সাধারণ মানুষ বা দলীয় নেতা-কর্মীরা তাঁকে নেতা হিসেবে কাছে পান না। আসনটি চালায় অন্য কোন নেতা। আবার উপ-নির্বাচনের মাধ্যমেও বাহির থেকে অতিথি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি দাবি করেন, সব মিলে এবার স্থানীয় লোক হিসেবে তাঁকে সংসদ সদস্য হিসেবে পেয়ে সাধারণ মানুষ খুশী এবং এই ধারা তাঁরা অব্যাহত চান। তাছাড়া এখানে তাঁর সময়ে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সংসদ সদস্যের মতে, বিএনপির এক ভোট কমলে তাঁদের দুই ভোট বাড়ে। কারণ বিএনপি ও জাতীয় পার্টি জাতীয়তাবাদী রাজনীতি করে। সে কারণে বিএনপি ছেড়ে আসা ভোটার কাছাকাছি আদর্শের দল হিসেবে জাতীয় পার্টিতে যুক্ত হয়। অনেক দিন পর স্থানীয় কাউকে সংসদ সদস্য হিসেবে পাওয়ার কারণে এই ভোটাররা তাঁর সঙ্গেই যুক্ত হচ্ছেন। সে কারণে দল থেকে তাঁকেই মনোনয়ন দেওয়া উচিত হবে বলে মনে করেন তিনি। শুধু তাই নয়, শেষ পর্যন্ত যদি আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি জোটবদ্ধ নির্বাচন করে, তাহলেও আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়া উচিত হবে বলে মত তাঁর।

বগুড়া জেলার মোট সাতটি আসনের মধ্যে সদর আসনটি (বগুড়া-৬) অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এর প্রধান কারণ খালেদা জিয়া পরপর তিনটি নির্বাচনে এই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। বলা হচ্ছে, সাইফুল ইসলামকে এর আগে বগুড়া পৌরসভায় মেয়র পদে দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও তিনি রাজি হননি। সাইফুল ইসলামের অনুসারী নেতাকর্মীদের দাবি, জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার টার্গেট রয়েছে বলেই তিনি মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তবে প্রার্থিতা বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন তিনি। কৌশলে তিনি বলেছেন, আমরা এই আসনে ম্যাডামকেই (খালেদা জিয়া) চাই। বগুড়ার সর্বস্তরের নেতাকর্মীরাও তাই চান। আমরা সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।

এদিকে অন্যবারের মতো, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে নানামুখী বিচার-বিশ্লেষণ শুরু করেছেন এবারো। তাঁদের মতে, ভোটে জেতার রাজনীতিতে এই আসনটি আওয়ামী লীগের জন্য বেশ কঠিনই। এ কারণে দায়িত্বশীল নেতাদের অনেকেই এই আসনে নৌকার মাঝি হতে খুব বেশি আগ্রহী নন। তবুও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জেলা সভাপতি মমতাজ উদ্দিন এবং সহসভাপতি বগুড়া পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মন্টুর নামই ঘুরেফিরে সামনে আসছে। যদিও মমতাজ উদ্দিন বগুড়া-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেই বেশি আগ্রহী বলে জানা গেছে। তিনি জানিয়েছেন, দল তাঁকে যেখান মনোনয়ন দেবে, তিনি সেখানেই নির্বাচন করবেন। এ বিবেচনায় বগুড়া-১ আসনেও নির্বাচনের প্রস্তুতি রয়েছে তাঁর।

মমতাজ উদ্দিনও মনে করেন, বগুড়ায় ভোটের রাজনীতিতে বিএনপির সমর্থন আগের তুলনায় অনেক কমেছে। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এর প্রমানও দেখা গেছে।

বাংলা ইনসাইডার/এমএএম



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭