ইনসাইড এডুকেশন

মেডিকেল শিক্ষার্থীদের দাবি ও কর্তৃপক্ষের দায় এড়ানো কতটুকু যুক্তিযুক্ত?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 13/11/2020


Thumbnail

দীর্ঘ সেশন জটের কথা মাথায় রেখে চলতি ডিসেম্বরে তৃতীয় সপ্তাহে করোনা মহামারির মধ্যেই পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনে নামে মেডিকেলের এমবিবিএস শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অন্যতম দাবির মধ্যে রয়েছে আটো প্রমোশন। এছাড়া পরীক্ষাকালীন কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে মেডিকেল কর্তৃপক্ষ দায়ভার নিবে না বলে জানানো হয়েছে। তবে অটো প্রমোশন ও কর্তৃপক্ষের দায় এড়ানো কতটুকু যুক্তিযুক্ত?    

ইতিমধ্যেই করোনাভাইরাসের সেকেন্ড ওয়েভ মোকাবেলায় সতর্কতা নেয়া হচ্ছে। যেহেতু শীত প্রধান দেশে করোনার সংক্রমণ বেশি তাই শীত বাড়ার সাথে সাথে আমাদের দেশে করোনার প্রভাবও বাড়ার সম্ভাবনার আশঙ্কা করা হচ্ছে। মূলত, ডিসেম্বরে শীতের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই করোনার সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কার মধ্যেই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসাটা কতটুক যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

তাছাড়া এরইমধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সময় বন্ডে সই করে তাদের পরীক্ষায় বসতে হবে। ফলে কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে এর দায়ভার কর্তৃপক্ষ নিবে না। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বলছেন, এতো বড় ঝুঁকি নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে গিয়ে যদি কেউ করোনায় আক্রান্ত হয় তাহলে তারা এই সেশনে আর পরীক্ষা দিতে পারবেনা। তাদের ৬ মাস পিছিয়ে পরবর্তী সেশনের পরীক্ষায় বসতে হবে। যেটি পুরোপুরিভাবে অমানবিক।    

সুতরাং এই সব পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে পরীক্ষাকালীন সময়ে জীবনের অনিশ্চয়তার সাথে সাথে শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ারও হুমকির সম্মুখীন।

তবে শিক্ষার্থীদের দাবী অটো প্রমোশনও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছে, পরীক্ষা ছাড়াই অটো প্রমোশনের দাবী অযোক্তিক কারণ পরীক্ষা ছাড়া অটো প্রমোশন পেলে মেডিকেল শিক্ষার্থীরা দক্ষ চিকিৎসক হতে পাড়বেন না।

মেডিকেল শিক্ষার্থী এবং কর্তৃপক্ষের এমন পাল্টাপাল্টি অবস্থান এখন আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রের জন্য মঙ্গলকর নয়। কারণ করোনাকালীন শিক্ষা ব্যবস্থা বহুমুখী সংকটের মধ্যে রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের দাবী অনুযায়ী অটো প্রমোশন কিংবা করোনায় আক্রান্ত হলে কর্তৃপক্ষের দায় এড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টি কোনটিই যুক্তিযুক্ত নয়।  

বিকল্প ব্যবস্থাই কেবল এই পরিস্থিতির উত্তরণের পথ হতে পারে বলে মনে করছে বিশ্লেষকরা। চট্রগ্রাম মেডিকেলের শেষ বর্ষের ছাত্রী সাদিয়া বলেন, করোনাকালীন শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি নিতে হবে কর্তৃপক্ষকে। যদি কোন শিক্ষার্থী পরীক্ষাকালীন সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয় তবে তাকে ১৪ দিনের কোরেন্টাইনে রাখতে হবে এবং সুস্থ হবার পর আক্রান্ত ব্যক্তিদের আলাদাভাবে পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে যেন তারা ৬ মাস পিছিয়ে না পরে। তাদের অনেকেই অটো প্রমোশনকে কোন সমাধান মনে করেছে না। তবে অটো প্রমোশনের বিকল্প হতে পারে সীমিত সিলেবাসে পরীক্ষা নেয়া। এছাড়া শুধু লিখিত অথবা শুধু ভাইভা পরীক্ষা বিবেচনায় উত্তীর্ণ করাও একটি বিকল্প ব্যবস্থা হতে পারে।

এছাড়া তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রফেশনাল পরীক্ষার কথাই বার বার উঠে আসছে কিন্তু আমরা যারা লাস্ট প্রফ বা শেষ প্রফেশনাল পরীক্ষা দিব তাদের পরীক্ষা নিয়ে কোন সমাধান আসছেনা। আমাদের ফাইনাল ইয়ারে বেশির ভাগ বিষয় ওয়ার্ডে গিয়ে প্রাকটিক্যালি করতে হয়। যেহুতু করোনার কারণে আমরা ওয়ার্ডে গিয়ে কাজ শিখতে পারছিনা তাই প্রাকটিক্যালি বিষয় না শিখেই পরীক্ষা নিলে আমরা কিছুই শিখতে পারবোনা তাই এখন আমাদের পরীক্ষা নেয়া যুক্তিযুক্ত নয়।’

 
 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭