ইনসাইড থট

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য র্কীতিসমূহ-৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 14/11/2020


Thumbnail

বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (Least developed countries, LDCs) থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উত্তোরণ হয়েছে। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নীতি সংক্রান্ত কমিটি (সিডিপি) এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণের জন্য মাথাপিছু আয়, মানব সম্পদ সূচক এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক এ তিনটি সূচকের যে কোন দুটি অর্জনের শর্ত থাকলেও বাংলাদেশ তিনটি সূচকের মানদন্ডেই উন্নীত হয়েছে। ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে আজকের এই উত্তরণ-যেখানে রয়েছে এক বন্ধুর পথ পাড়ি দেওয়ার ইতিহাস’ । সরকারের রুপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের এটি একটি বড় অর্জন। এটি সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,  আপনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাহসী এবং অগ্রগতিশীল উন্নয়ন কৌশল গ্রহণের ফলে যা সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কাঠামোগত রূপান্তর ও উল্লেখযোগ্য সামাজিক অগ্রগতির মাধ্যমে বাংলাদেশকে দ্রুত উন্নয়নের পথে নিয়ে এসেছে।বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে (বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তিতে) মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ জন্মের ৫০ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মতো সফলতা দেখিয়েছে। দেশমাতৃকার নিরাপত্তায় নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সমুদ্রতলে সাব-মেরিন এর সংযোজন করেছে। উন্নয়নের দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা, এমডিজি অর্জন, এসডিজি বাস্তবায়নসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, লিঙ্গ সমতা, কৃষি, দারিদ্র্যসীমা হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, রপ্তানীমূখী শিল্পায়ন, ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, পোশাক শিল্প, ঔষধ শিল্প, রপ্তানী আয় বৃদ্ধিসহ নানা অর্থনৈতিক সূচক। শিক্ষাকে সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেবার জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো-শতভাগ ছাত্রছাত্রীর মাঝে বিনামূল্যে বই বিতরণ কার্যক্রম। নারী শিক্ষাকে এগিয়ে নেবার জন্য প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত চালু করা হয়েছে উপবৃত্তি ব্যবস্থা। আরও ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে নতুন করে জাতীয়করণ করেছে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষকের চাকরি সরকারীকরণ করা হয়েছে। ১৯৯০ সালে বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিশুর সংখ্যা ছিল ৬১%, বর্তমানে তা উন্নীত হয়ে প্রায় শতভাগে উন্নিত হয়েছে। শিক্ষার সুবিধাবঞ্চিত গরিব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে “শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট আইন, ২০১২ প্রণয়ন করা হয়েছে, গঠন করা হয়েছে "শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট”।

শিশুদের টিকাদান কর্মসূচির সাফল্যের জন্য, এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম আদর্শ দেশ হিসেবে তার স্থান করে নিয়েছে।  আগুনে দগ্ধ মানুষের জন্য আধুনিক বিশেষায়িত হাসপাতাল ‘শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন  এ্যন্ড প্লাস্টিক ইনস্টিটিউট‘ সহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে অত্যাধুনিক হাসপাতাল স্থাপন ও গ্রামে-গঞ্জে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ঘরে ঘরে চিকিৎসা সুবিধা পৌঁছে দিয়েছেন। তৃণমূল পর্যায়ের দরিদ্র মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে গড়ে তোলা হয়েছে ১২ হাজার ৭৭৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক। ৩১২টি উপজেলা হাসপাতালকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নীত করা হয়েছে। মেডিকেল কলেজ ও জেলা হাসপতালগুলোতে শয্যা সংখ্যা ২ হাজারএ বৃদ্ধি করা হয়েছে। মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার এবং জন্মহার হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবার লক্ষ্যকে সামনে রেখে নির্মাণ করা হয়েছে নতুন ১২টি মেডিকেল কলেজ, নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ৪৭ হাজারেও বেশি জনশক্তি।

বিশ্বশান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ এখন এক অনন্য নাম। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তি মিশনে প্রথম যোগদানের পর এ পর্যন্ত বিশ্বের ৩৯টি দেশের ৬৪ শান্তি মিশনে পেশাদারিত্ব, দক্ষতা, খ্যাতি ও সফলতার সাথে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এ যাবৎকালে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী ১১৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বাগ্রে। হতদরিদ্রদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি বিস্তৃত করতে বয়স্ক, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্ত ও দুঃস্থ মহিলা ভাতা, অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা, মাতৃকালীন ভাতাসহ ভাতার হার ও আওতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের পাশাপাশি প্রসার ঘটেছে আবাসন, জাহাজ, ঔষুধ, ও প্রক্রিয়াজাতকরণ খাদ্য শিল্পের। বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের তালিকায় যোগ হয়েছে জাহাজ, ঔষুধ এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসামগ্রী। বাংলাদেশের আইটি শিল্প বহির্বিশ্বে অভূতপূর্ব সুনাম কুড়িয়েছে।


মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সাম্প্রতিক সময়ে করোনা মোকাবেলায় যে দূরদর্শিতা এবং মেধার পরিচয় দিয়েছেন, ফলে মানুষের আস্থা আরো বেড়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর নেতা। সারাবিশ্বে চলমান করোনা সংকটকালে ভিডিও কনফারেন্স-এর মাধ্যমে সার্ক নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে করোনা মোকাবেলায় সার্ক তহবিল গঠনের প্রস্তাব দেন, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে দারিদ্র্য ও বৈষম্য দূর করতে পাঁচ দফা প্রস্তাবনা পেশ করেছেন যা সর্বত্র প্রশংসিত হয়েছে। যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈশ্বিক টিকা সম্মেলনে যোগ দিয়ে ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের জন্য ‘গ্লোবাল সিটিজেন’ তহবিলে ৫০ হাজার ডলার প্রদানের ঘোষণা আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। ২০২০ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৫ তম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে বিশ্বে প্রথম সরকার প্রধান হিসেবে আপনিই করোনা ভ্যাকসিনকে বৈশ্বিক সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘ভ্যাকসিন বৈষম্য যেন না হয়, ভ্যাকসিন যেন আসে এবং সেই ভ্যাকসিন যেন প্রান্তিক এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠী পায়’। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা, আপনার সঠিক সময়ে বাস্তবমুখী পদক্ষেপের কারণে পৃথিবীর যেকোন দেশের থেকে বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যুহার সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে নিয়মিত দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি দুর্গত মানুষের খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের বিষয়টি সরাসরি মনিটরিং করছেন। তিনি নিজেই ১০টি বিভাগ ও ৬৪টি জেলার সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দলীয় নেতাকর্মী, মাঠ প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। দলমত নির্বিশেষে সঠিক তালিকা তৈরি করে প্রকৃত অসহায় মানুষের কাছে সরকারের সহযোগিতা পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে দেশের প্রতিটি জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন। দেশের নিম্ন আয়ের ৫০ হাজার পরিবারকে তিনি ঈদ উপহার পৌঁছে দিয়েছেন।

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ভাসমান মানুষ, রিক্সাওয়ালা, দিনমজুর, দুস্থদের খাদ্য সহযোগীতার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঢাকা মহনগর (উত্তর-দক্ষিণ) এর প্রতিটি ওয়ার্ডে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ১৪০০ পরিবারকে পর্যাপ্ত পরিমান ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। এরপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণভান্ডার থেকে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রতি ওয়ার্ডে আরও ১২০০ পরিবারের জন্য ত্রাণ  দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর সভানেত্রী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আপনার নির্দেশে, সারাদেশে প্রতিটি গ্রাম, ওয়ার্ড, ইউনিয়নসমূহে এবং ঢাকা মহানগরের প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ নিজস্ব অর্থায়নে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্যদ্রব্য পৌছে দিয়েছেন।

মানুষের জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি জীবিকা নিশ্চিতকরণের জন্য নিম্নবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্তের প্রায় ৫ কোটি লোককে রেশনের আওতায় এনে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রায় ১ কোটিরও বেশি পরিবারকে ত্রাণ দেয়া হয়েছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রতি পরিবারকে ২৫০০ টাকা করে ৫০ লক্ষ পরিবারকে এককালীন নগদ অর্থ পাঠানো হয়েছে। নন-এমপিওভুক্ত ৮১ হাজার শিক্ষক, ২৫ হাজার কর্মচারী ও ৪৬ হাজার গ্রাম পুলিশদের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শুধু আওয়ামী লীগেরই নেতা নন,  আজ দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছেন। সংগ্রাম, সাফল্য আর বর্ণাঢ্য জীবনের জীবন্ত কিংবদন্তি জননেত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘজীবী হোন। 

চলবে...পরবর্তী পর্ব আগামীকাল বাংলা ইনসাইডারে।

লেখক: ভেটেরিনারীয়ান, পরিবেশবিজ্ঞানী ও রাজনৈতিক কর্মী।

আগের পর্ব: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য র্কীতিসমূহ-২



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭