নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 22/11/2020
রায়হান ভুঞা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করেছেন ২ বছর হল। কিন্তু এখনো পর্যন্ত নিজের ক্যারিয়ার গুছাতে পারছেন না। বিসিএস এর পেছনে না ছুটে তাই বিকল্প চাকরির কথা ভাবছেন রায়হান। কিন্তু কোনদিকে যাবেন। ব্যাংক, এনজিও নাকি বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠান বা ফার্মে জব নিবেন- বুঝতে পারছেন না রায়হান। শুধু রায়হান নয়, উচ্চ শিক্ষ শেষে কোন চাকরিতে যাওয়া উচিত; কি করা উচিত এমন ভাবনায় আছেন অনেকেই। তাই চলুন জেনে নেই কোন চাকরি করা উচিত এই রকম কিছু বিষয়ে।
এনজিও
একটা সময় দেশে সবচেয়ে আকর্ষণীয় চাকরির মধ্যে অন্যতম ছিল বিভিন্ন এনজিও ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের চাকরি। আন্তর্জাতিক গ্রেডে দেওয়া এই সমস্ত চাকরির বেতন ছিল অনেক বেশী। কিন্তু বর্তমানে এই চাকরিগুলো আর আগের মতো আকর্ষণীয় নেই। প্রচুর পরিমাণ দেশীয় এনজিও প্রতিষ্ঠান হওয়ায় বেতন গ্রেড অনেকাংশে কমে গেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে বাড়েনি। কিছু প্রতিষ্ঠানে দাতা সংস্থার তহবিল আগের চেয়ে কমে গেছে। আর একটি বিষয় হল ধীরে ধীরে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় ঢুকে পরছে। এতে করে অনেক সাহায্য সহযোগিতাই আর আগের মতো বা এখনকার মতো আসবে না। তাছাড়া, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সহ শিক্ষা কার্যক্রম সবকিছু মিলিয়ে এনজিও ও আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার চাকরিগুলো আর আগের মতো নেই।
বেসরকারি চাকরি
বেসরকারি চাকরি দেশে প্রচুর পরিমাণে বাড়বে। সামনের দিনগুলোতে দেশে প্রচুর পরিমাণ বিনিয়োগ হবে বলেই আশা করা হচ্ছে। কারণ পদ্মাসেতু ও দেশে চলমান মেগা প্রকল্পগুলো শেষ হলেই দেশি বিদেশী বিনিয়োগ অনেকাংশে বাড়বে। জিডিপির আকারও অনেক বড় হবে। ফলে বেসরকারি চাকরির বাজার অনেক বড় ও বিস্তৃত হবে। তবে একটা শঙ্কা থেকেই যাবে। আর তা হল প্রতিযোগিতা। বেসরকারি চাকরি গুলো হয় যোগ্যতার ভিত্তিতে। চাকরির ধরণের দিক থেকে এই চাকরিগুলো স্থায়ি নয়। তবে যোগ্যতা ও দক্ষতা দিয়ে আপনি অনেক উপরে উঠতে পারবেন। শুরুতে বেতন মন্দ হলেও একটা নির্দিষ্ট সময় পরে আশানুরূপের চেয়ে কম নয়। ফলে ক্যারিয়ারে যারা প্রতিযোগিতা পছন্দ করেন তাদের জন্য এ ধরণের চাকরি মন্দ নয়।
সরকারি চাকরি
সরকারি চাকরি নিয়ে তো কিছু বলারই নেই। এখন দেশের তরুণদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী যে ক্রেজিনেস কাজ করছে- তাহলো বিসিএস। বিসিএস কর্মকর্তা হওয়ার জন্য সবাই এখন উঠে পরে লেগেছে। তবে একটা বিষয় বলে রাখি- দেশের সরকারি চাকরি গুলো আর নচিকেতার গানের মতো নেই। ঢিলেমি করে দিন পার করে দিতে পারবেন, এমন প্রত্যাশা অন্তত ছেড়ে দেওয়াই ভালো। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে সরকারি অফিসগুলোও এখন কর্মীর দক্ষতা যাচাই ও মূল্যায়ন করছে। বর্তমান সময়ে চাকরির নিশ্চয়তা এবং সুযোগ-সুবিধা সবকিছু মিলিয়ে সরকারি চাকরির চাহিদাই বাড়ছে। মেধবিরা এখনে যেন হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। হয়তো একটা সময় পরে অন্য চাকরির গুলোতে মেধা শূন্যতা তৈরি হবে। তখন তারাও সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে দিবে। যাই হোক, জীবন আপনার। তাই সিদ্ধান্তও আপনার।
তবে একটা কথা, শুধু অর্থ বা সামাজিক মর্যাদার কথা ভেবে চাকরির সিদ্ধান্ত না নিয়ে নিজের মনকে জিজ্ঞেস করুন। চাকরি পেতে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় না গিয়ে আপনার কাছে কোন কাজটা ভালো লাগে, আপনার আত্মতুষ্টি কোথায় এটাকে গুরুত্ব দিন। তাহলে জীবন নিয়ে অন্তত হতাশ হবেন না। মনে রাখবেন আত্মিক সুখ চাকরি কিংবা জীবিকার চেয়ে অনেক বড়।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭