নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 24/11/2020
ভ্যাকসিন আসার আগেই ভ্যাকসিন রাখার জন্য জায়গা, লোকবল এবং ভ্যাকসিন সংক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আগেই তৈরি করতে হবে। বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা: এবি এম আব্দুল্লাহ এসব কথা বলেন। পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজস্ব প্রতিবেদক জুয়েল খান।
ডা: এবি এম আব্দুল্লাহ বলেন, ভ্যাকসিন কেনার সময় অবশ্যই দেখেশুনে কিনতে হবে। বিশেষ করে যে ভ্যাকসিনটা বেশি কার্যকরি, আমাদের দেশের আবওহাওয়ার সঙ্গে মানানসই এবং পার্শপ্রতিক্রিয়াহীন। এছাড়া দামের দিক বিবেচনায় নিয়ে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে এমন ভ্যাকনসিন কিনতে হবে। কোনো দাতা সংস্থা যদি বিনামূল্যে দেয় তাহলে হয়তো নেয়া যেতে পারে, তবে টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই দামের বিষয়টা বিবেচনায় নিতে হবে।
তিনি বলেন, ভ্যাকসিন সংরক্ষণ জরুরি। ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য আগে থেকেই ব্যবস্থা করে রাখতে হবে। বিশেষ করে ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য একটা নির্দিষ্ট পরিমান তাপমাত্রার প্রয়োজন যা আগে থেকেই ব্যবস্থা করে রাখতে হবে। কোনো কোনো ভ্যাকসিনে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি আবার কোনোটিতে ২০ ডিগ্রি তাপমাত্রার প্রয়োজন পড়বে। এছাড়া ভ্যাকসিন পরিবহনের জন্য শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ির ব্যবস্থা আগে থেকেই করে রাখতে হবে। আর এসব কাজের জন্য প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি করতে হবে। কারণ ভ্যাকসিন যখন আসবে তখন ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। ভ্যাকসিন যেহেতু গ্রামে-গঞ্জে যাবে, ফলে নির্দিষ্ট পরিবহন ব্যবস্থা আগে থেকেই রাখতে হবে।
এই মেডিসিন বিশেষজ্ঞ জানান, সরকার ইতিমধ্যে ভ্যাকসিন আনার জন্য চুক্তি করেছে কিন্তু এই ভ্যাকসিনগুলো প্রথমে কারা পাবে সে বিষয়টা আগে থেকেই নির্ধারণ করে রাখতে হবে। অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো আগেই নির্ধারণ করতে হবে কারণ এতো মানুষকে একসাথে ভ্যাকসিন দেয়া যাবে না। এজন্য আগে থেকেই তালিকা করে রাখতে হবে যে এরা আগে ভ্যাকসিন পাবে।
যাদেরকে আগে ভ্যাকসিন দিতে হবেঃ
১. সম্মুখযোদ্ধা: ডাক্তার, নার্স এবং চিকিৎসা কাজের সাথে যারা জড়িত, তাদেরকে সবার আগে ভ্যাকসিন দিতে হবে। এজন্য হাসপাতালের তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদেরকেও ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে হবে।
২. যাদের ঝুঁকি বেশি: যেসব মানুষ শারীরিকভাবে অনেক বেশি ঝুঁকিতে আছে তাদেরকে সবার আগে ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষ করে যরা বয়স্ক, যাদের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা আছে যেমন, ডায়াবেটিস, হাঁপানি, লিভার, কিডনিসহ বার্ধক্যজনিত রোগীদেরকে সবার আগে ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. মাঠ প্রশাসন-নিরাপত্তাকর্মী: মাঠ প্রশাসন এবং নিাপত্তাকর্মীদেরকে প্রথম দিকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে হবে। বিশেষ করে মাঠ প্রশাসন, পুলিশ, র্যাব এবং বিভিন্ন নিরাপত্তার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে হবে।
৪. গণমাধ্যমকর্মী: বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। গণমাধ্যম কর্মীরা করোনা নিয়ে সংবাদ উপস্থাপন এবং জনসচেতনতার কাজে যুক্ত থাকে ফলে এদের স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেশি।
যদিও একটা পর্যায়ে সবাই হয়তো ভ্যাকসিনের আওতায় আসবে তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এদেরকে আগে ভ্যাকসিন দিতে হবে। এসব বিষয়গুলো আগে থেকে রেডি করে রাখতে হবে। অন্যথায় ভ্যাকসিন আসলে বিতরণে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। এক্ষেত্রে সরকারের উচিত হবে তাড়াহুড়ো না করে সবচেয়ে ভালো এবং কম দামের ভ্যাকসিন ক্রয় করতে হবে।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭