ইনসাইড থট

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণঃ জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা নাকি রাজনৈতিক বিরোধীতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 26/11/2020


Thumbnail

ত্রি-মাত্রিক শিল্পকর্মকে ভাস্কর্য (Sculpture) বলে। অর্থাৎ, জ্যামিতিকশাস্ত্রের ঘণকের ন্যায় ভাস্কর্যকে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং গভীরতা সহ ত্রি-মাত্রিক হতে হবে (Sculpture is the branch of the visual arts that operates in three dimensions. It is one of the plastic arts.)। ভাস্কর্য একটি প্রাচীনতম শিল্পকলা। একটি জাতির ইতিহাস-ঐতিহ্য, শিল্পকলা, রুচিবোধের নিদর্শন হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়। এই ভাস্কর্য শিল্পের মাধ্যমে হাজার হাজার বছর পূর্বের বিভিন্ন সভ্যতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া আজ সহজ হচ্ছে। বাংলাদেশের ন্যায় বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশ ও বিশ্বের সর্বত্র বিভিন্ন ধরনের, বহুমূখী আকৃতির ভাস্কর্য দেখতে পাওয়া যায়। রেনেসাঁ এবং আধুনিককালে এটি ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছে। মানুষ কিংবা অন্য কোনও প্রাণীর অনুরূপ তূলা বা কাপড় অথবা অন্য উপকরণ দিয়ে তৈরি ক্ষুদ্রতর সংস্করণকে পুতুল বলে। পুতুল ভাস্কর্যের উদাহরণ।

ভাস্কর্য শিল্প বাংলাদেশের সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলাদেশে খ্রীস্টপূর্ব ৩য় শতকের ভাস্কর্যও আবিষ্কৃত হয়েছে যা থেকে বোঝা যায় সুদূর অতীতকাল থেকে এখানে ভাস্কর্য শিল্পের বিকাশ ঘটেছিল। প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে মূর্তি ও ভাস্কর্য বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির গৌরব বহন করে চলেছে।

ভাস্কর্য স্থাপনকে মূর্তি স্থাপনের সঙ্গে তুলনা করে এটাকে শিরক সংস্কৃতি বা বিজাতীয় সংস্কৃতি বলে আখ্যা দেওয়াকে মামা বাড়ির আবদার বলে আখ্যায়িত করেছে বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী জোট। বাঙালি সংস্কৃতি বিজাতীয় সংস্কৃতি নয়, এটি আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি। এ সংস্কৃতিতে যেসব কর্মকাণ্ড শিরক বা আল্লাহর সঙ্গে অংশীবাদিতার মিশ্রণ ছাড়াই পালিত হয়ে আসছে, সেটিকে হঠাৎ করে শিরক সংস্কৃতি বলা নোংরা রাজনীতি ছাড়া কিছুই নয়। মূর্তি বা ভাস্কর্য মানেই শিরকের উপকরণ নয়। যেসব ভাস্কর্য সৌন্দর্য্য চর্চা ও রুচিশীলতার পরিচয় বা ঐতিহাসিক কোনও ঘটনার স্মৃতিফলক হিসেবে স্থাপিত হয়, তা ইসলামি শিক্ষানুযায়ী নিষিদ্ধ নয়।

ভাস্কর্য এবং মূর্তির মাঝে অনেক বড় পার্থক্য আছে। ভাস্কর্য হলো সুন্দরের প্রতীক, কিন্তু মূর্তি হলো চেতনার প্রতীক। ভাস্কর্য ( Sculpture) এক ধরনের শিল্পকলা বিশেষ। সব মূর্তিই যেমন ভাস্কর্য নয়, তেমনি ভাস্কর্যকে মূর্তি বলা চলে না। অর্থাৎ ভাস্কর্য আর মূর্তি এক জিনিস নয়। তাহলে ভাস্কর্য কি? খুব সহজ করে যদি বলতে হয়, ভাস্কর্য হলো শিল্প। প্রসঙ্গক্রমে অনিবার্য প্রশ্ন, তাহলে শিল্প কী? নিউইয়র্কের ‘মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্ট’র আলফ্রেড বার মন্তব্য করেছেন, ‘শিল্পকলার সংজ্ঞা দেওয়া বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়’। লন্ডনের ‘ষ্টেট গ্যালারি’র প্রাক্তণ পরিচালক রথেনস্টাইনের মতে, ‘শিল্পীর ইচ্ছার উপর নির্ভর করে শিল্প’। জর্জ সায়ান্টানা মনে করতেন, শিল্পের কাজ হচ্ছে ‘মানুষকে আনন্দ দান করা’। মূলত শিল্প তাই, যা মানুষকে ভাবতে এবং সৌন্দর্য উপলব্ধি করাতে বাধ্য করে। 

প্রশ্ন হলো, ইসলাম ভাস্কর্যকে সমর্থন করলেও মূর্তিকে সমর্থন করে না কেন? কারণ হলো, কোনো অচেতন বস্তু কখনো কোনো চেতনার প্রতীক হতে পারে না। সুতরাং মূর্তি ও ভাস্কর্যের পার্থক্যটা কাঠামোগত নয়, বরং চেতনাগত। কোনো কিছুকে চেতনার প্রতীক মনে করলে, তার কাঠামো যাই হোক না কেন, সেটা মূর্তি। অন্যদিকে, কোনো কিছুকে সুন্দরের প্রতীক মনে করলে, এবং তার কাঠামো যদি নোংরা না হয়, তাহলে তা ভাস্কর্য। ইসলামে মূর্তি ও ভাস্কর্যের পার্থক্যটা কাঠামোগত নয়, বরং চেতনাগত। বুখারি শরিফের বিখ্যাত হাদিস, “ইন্নামাল আ‘মালু বিন্নিয়্যাত (অবশ্যই কর্মের ফলাফল নিয়তের উপর  নির্ভরশীল)"। কোন কর্মকান্ডে আপনার মনের ভিতর কি নিয়ত করলেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ। মহান আল্লাহ আপনার নিয়ত বা চিন্তা বিবেচনা করে বিচার করবেন।

একটি প্রতিকৃতিকে কেউ যখন বাচ্চার খেলনার মত মনে করবে, অথবা সৌন্দর্যের কোনো কাজে ব্যবহার করবে, তখন তা ভাস্কর্য হিসাবে গণ্য হবে। কিন্তু একই প্রতিকৃতিকে কেউ যদি তার চেতনা ও বিশ্বাসের প্রতীক মনে করে, তখন তা মূর্তি পূজা হিসাবে গণ্য হবে। 

হযরত সোলায়মান (আ) এর জমানায় প্রতিকৃতিকে মানুষ তখন সৌন্দর্যের প্রতীক হিসাবে ব্যবহার করত। ফলে, সোলায়মান (আ) নিজেই প্রতিকৃতি তৈরি করার জন্যে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সুতরাং, কেবল বাহিরের কাঠামোগত কোনো প্রতিকৃতির মধ্যে নয়, বরং মানুষের চিন্তার মধ্যেই শিরক থাকে। মানুষের চিন্তা ও চেতনার অঙ্গনেই শিরকের অসংখ্য মূর্তি গড়ে উঠে। আমরা বাইরের প্রতিকৃতি নিয়ে খুব সোচ্চার হলেও, ভিতরের মূর্তিগুলো দেখতে পাই না।

পৃথিবীর সকল দেশেই জাতির পিতা বা জাতীয়নেতা বা জাতীয় তারকাদের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়ে থাকে, তাদের সম্মান করার জন্য, স্মরনীয় রাখার জন্য-পূজা করার জন্য নয়। বাঙালীর জাতির পিতা, স্বাধীনতার মহানায়ক, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনের উদ্দেশ্য ঐতিহাসিক-তাকে পূজা করা নয়। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় অবদানের কথা বিবেচনা করে বঙ্গবন্ধুকে সম্মান জানানোর জন্য এবং পরবর্তী প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম স্বাধীনতার ইতিহাসকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের সঙ্গে মূর্তি পূজা করার কোনো সম্পর্ক নেই। অসংখ্য ইসলামি দেশের এরকম উদাহরণ আছে। যেমন- পাকিস্তানের জাতির পিতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর বিশাল সাইজের ভাস্কর্য আছে। বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বড় সাইজের এই ভাস্কর্যটি নিয়ে কিন্তু সে দেশে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। 

তুরস্কের বিভিন্ন স্থানে আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম প্রেসিডেন্ট কামাল আতাতুর্কের রয়েছে অগণিত ভাস্কর্য। একেকটি দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্যে একেক রকমভাবে আতাতুর্ক এবং তুরস্কের ইতিহাস, ঐতিহ্য বিবৃত করা হয়েছে। মালয়েশিয়ার সবচেয়ে বিখ্যাত ভাস্কর্য হলো ওয়াশিংটন মনুমেন্টের আদলে গড়া ন্যাশনাল মনুমেন্ট। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শহীদ হওয়া বীরদের স্মরণে ১৫ মিটারের এই ভাস্কর্যটি উন্মুক্ত করা হয় ১৬৬৩ সালে। প্রতীকীভাবে সাতজন বীরের প্রতিমূর্তির মাধ্যমে বিশ্বস্ততা, আত্মত্যাগ আর বন্ধুত্বের বিষয়টি এই ভাস্কর্যের মধ্য দিয়ে বোঝানো হয়েছে।

প্রচন্ড-রক্ষণশীল মুসলিম দেশ সৌদি আরবের বাণিজ্যিক রাজধানী জেদ্দা নগরীতে আছে উটের দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য। রাজধানী জেদ্দার উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্যের মধ্যে রয়েছে নগরীতে মুষ্টিবদ্ধ হাত, হাংরি হর্স, মানব চোখ, মরুর বুকে উটের ভাস্কর্য। অষ্টম শতকের সমরনায়ক আবু মুসলিম খোরাসানির ভাস্কর্যের গায়ে আফগানিস্থানের জঙ্গিরাও হাত দেয়নি। গজনীতে এখনো স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে সেই ভাস্কর্য। তাজিকিস্থানের রাজধানী দুশানবেতে মুসলিম দার্শনিক ও পন্ডিত ইবনে সিনার একটি বিশাল ভাস্কর্য আছে। মুসলিমপ্রধান ওই দেশের কোনো নাগরিক তো ভাস্কর্যটির গায়ে আঁচড়ও দেন না।

ইরান, মিসর, ইরাকের জাদুঘরে অসংখ্য ভাস্কর্য এবং প্রাচীন শাসক ও দেব-দেবীর মূর্তি তো রয়েছেই, সেসব দেশে উন্মুক্ত স্থানে রয়েছে অনেক ভাস্কর্য। ইরানে আছে একটি বিশাল স্বাধীনতাস্তম্ভ, যার নাম ‘আজাদী’। এ স্থাপত্যটির ডিজাইনার হোসেন আমানত একজন মুসলমান। মাশহাদ নগরীতে ভাস্কর্য সংবলিত নাদির শাহ সমাধিসৌধটি পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়। পিরামিডের জন্য দুনিয়াজোড়া খ্যাতি মিসরের। পাথরের তৈরি মূর্তি সংবলিত গিজা পিরামিড সারা দুনিয়ার পর্যটকদের অতি প্রিয়। কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে মাহমুদ মোখতারের বিখ্যাত ভাস্কর্য ‘মিসরের রেনেসাঁ’। 

পারস্যের কবি শেখ সাদী। উনি হচ্ছেন সেই মানুষ যার ‘নাত’-এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা মিলাদে সব সময় পাঠ করে থাকেন ‘বালাগাল উলা বি কামালিহি কাশাফাদ্দুজা বি জামালিহি’- এই শেখ সাদীর মাজারের সামনেই তার একটি মর্মর পাথরের ভাস্কর্য আছে। ইসলামি রাষ্ট্র ইরানে অবস্থিত কবি ওমর খৈয়াম ও মহাকবি ফেরদৌসির ভাস্কর্য নিয়ে কারো সমস্যা নেই। তেহরানে অজস্র মানুষের প্রতিকৃতি সম্বলিত ‘মূর্তি’ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। সমস্যা নেই সিরিয়ার ন্যাশনাল মিউজিয়ামের ‘মূর্তি’ নিয়েও। ইরাকেও আছে অনেক ভাস্কর্য। বাগদাদ বিমানবন্দরের সামনে ডানার ভাস্কর্যটি সবার নজর কাড়ে। বাগদাদের পাশে আল-মনসুর শহরে আছে মনসুরের একটি বিশাল ভাস্কর্য। আছে অনেক সাধারণ সৈনিকের ভাস্কর্য।
ইউরোপ ও এশিয়ার সংযোগস্থলে অবস্থিত বলে তুরস্কের ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিবর্তনে বিভিন্ন ধরনের প্রভাব পড়েছে। এককালের সারা মুসলিম জাহানের খলিফার দেশ সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হলেও বর্তমানে ক্ষমতায় রয়েছে ইসলামী দল। কামাল আতাতুর্কের ভাস্কর্য ছাড়াও তুরস্কের উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্য হলো : মর্মর সাগর তীরে পোতাশ্রয়ে অপূর্ব মর্মর মূর্তি, আঙ্কারাতে ইন্ডিপেনডেন্স টাওয়ারের পাদদেশে তুরস্কের জাতীয় সংস্কৃতির ধারক তিন নারী মূর্তি ও আন্তালিয়ায় এডুকেশন অ্যাক্টিভিস্ট তুরকান সায়লানের মূর্তি।

পাকিস্তানে রয়েছে আরোও অনেক ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মূর্তি; রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য শিল্প।  উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্য হলো— লাহোরে বাদশাহি মসজিদের পার্শ্বে মেরি মাতার মূর্তি, পাঞ্জাবের জং শহরের রাস্তায় ঐতিহ্যবাহী ঘোড়সওয়ারের মূর্তি, লাহোরে ন্যাশনাল কলেজ অব আর্টস প্রাঙ্গণের নানা মূর্তি।

মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। মালয়েশিয়ার ভাস্কর্য শিল্প সনাতন ও আধুনিক ধারার এক স্বতন্ত্র মেলবন্ধন। মালয়েশিয়ার উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্য হলো: বাতু কেভসের বিখ্যাত মুরুগান মূর্তি, কুচিং হলিডে ইন হোটেলের সামনে মার্জার মূর্তি এবং কনফুসিয়াসের মূর্তি।

বাংলাদেশে ১৯৫২ সালের ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনার, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে নির্মিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে নির্মিত শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এবং সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের নামে স্থাপিত স্মৃতি ভাস্কর্যের সামনে গিয়ে যখন বাংলাদেশের ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, তখন তারা কেউই সেখানে ইবাদতের নিয়তে বা প্রার্থনার নিয়তে যান না। সেখানে জাতীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও শহীদদের ত্যাগের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয় মাত্র।’  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য দেশের স্বাধীনতা ও ইতিহাসের অংশ৷ এই প্রজন্ম ভাস্কর্য দেখে শিখবে৷ ইতিহাস জানবে৷ এটা মূর্তি কেন হবে? এখানে তো কেউ পূজা করতে যাবে না৷`` তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ৷ মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে কোনোভাবে আশকারা দেওয়া ঠিক হবে না৷``

একই প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, "সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে ধর্মান্ধ গোষ্ঠী ধর্মীয় মাতম করছে, যারা সব সময় বাংলাদেশের ক্ষতি চায়। এই ধর্মান্ধ গোষ্ঠী সব সময় প্রগতিশীল বাংলাদেশের বিপক্ষে কাজ করেছে। তাদের চিন্তা-চেতনা বাংলাদেশকে পিছিয়ে নিয়ে যাওয়া। এই জ্ঞানপাপীরা চোঁখ থাকতেও অন্ধ। তার কারণ হলো তারা জানে না যে, বিশ্বে বহু মুসলিম দেশে এ ধরনের ভাস্কর্য রয়েছে। সেসব মুসলিম দেশে খ্যাতিমান ব্যক্তিদের ভাস্কর্য স্থাপন এবং সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু তারপরও বিশ্বের দিকে না তাকিয়ে তারা উগ্রসাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে"। 

কোন ইস্যু না পেয়ে বিএনপি-জামায়াত ইসলামী দলগুলোর ব্যানারে ভাস্কর্য‘কে ইস্যু হিসেবে তৈরি করছে। সূরা সাবা-র ১৩ নম্বর আয়াতের তামাসিলা (ভাস্কর্য) এবং সূরা ইব্রাহিমের ৩৫ নম্বর আয়াতের আসনাম (প্রতিমা পূজা)—এই দুটি শব্দের অর্থকে বিকৃত করে ওরা একই অর্থে মূর্তিকে ভাস্কর্য বানাতে চাচ্ছেন, তাদের বলবো অনুগ্রহ করে কোরআনের শব্দের অর্থকে ভুল ব্যাখ্যা করে বঙ্গবন্ধুকে হেয় করার অপচেষ্টা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী জনগন রুখবেই। কারণ এ দেশের মানুষ ‘৭১ সালেও ধর্মব্যবসায়ীদের চিনতে ভুল করেনি, এখনও করবে না। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে, বুকের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন করেছে। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারীদের মানবতা বিরোধী অপরাধে বিচার হয়েছে। তেমনিভাবে স্বাধীন বাংলার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হেয় প্রতিপন্ন করার ষড়যন্ত্রকারীদেরও চিহ্নিত করা উচিত, তাদের বিচার করা উচিত।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭