ইনসাইড টক

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতা মূর্খতা ও অজ্ঞতার অংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 26/11/2020


Thumbnail

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধের দাবিকে মুর্খতা ও অজ্ঞতার অংশ হিসাবে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ । সাম্প্রতিক সময়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন নিয়ে মৌলবাদিদের বিরোধিতা, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় মাহবুব উল আলম হানিফ একথা বলেন।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধের দাবি ও এই দাবি করা দলটির নেতৃবৃন্দের আচরণ চরম উদ্ধত্যপূর্ণ।আওয়ামী লীগ সরকার ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী জনগণ এমন আচরণ বরদাশ করবে না। আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন “খুব শীঘ্রই আমরা এই ইস্যুকে নিয়ে আলোচনা করবো এবং সুমচিত জবাব দিবো।”

তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে সরকার তাদের এই দাবির জবাব দিতে উদ্যোগ নিয়েছে। এবং এই সব ধর্ম ব্যবসায়ীদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য কোন মূতি নয়। এটাকে পূজা করা হবে না। বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মানুষকে জানানোর জন্যই এই উদ্যোগ। এসব বন্ধের দাবি করছে তারা আদতে মূর্খতা ও অজ্ঞতার অংশ।

ধর্মের কোথাও ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে কথা নেই। বিশ্বের অনেক ইসলামিক দেশেই ভাস্কর্য আছে। এমনকি ইসলামিক দেশ হিসাবে পরিচিত পাকিস্তানেও কায়েদ আজম জিন্নাহের ভাস্কর্য আছে। সেখানকার কোন রাজনৈতিক দল আজ পর্যন্ত এই ভাস্কর্যের বিরোধিতা করেনি, দাবি হানিফের।

আফগানিস্তানে তালিবান সরকার এবং আইএস সদস্যরা ইসলাম বিরোধী দাবি করে হাজার বছরের পুরাকীর্তি ও ভাস্কর্যকে গুড়িয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের কয়েকটি তথাকথিত ইসলামিক দলেরও দাবি  তেমনই। এরা সংস্কৃতি বোঝে না, বোঝে না ইসলামও।কেবলমাত্র নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য ইসলামের নামে ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছে।

হানিফ বলেন, খেলাফত মজলিসের এই দাবির পিছনে অন্য কোন ইস্যু আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা উচিত।দলটি ইসলামের নামে দেশে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির বিপক্ষে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কি না তা দেখতে হবে। একই সাথে তাদের এই দাবি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের কারণ হতে পারে। 

ধর্মান্ধ এসব গোষ্ঠীদের অন্য কোন অসৎ-অশুভ উদ্যেশ্যে রয়েছে। এর পেছনে অবশ্যই রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আছে।বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করার জন্যই এই অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। 

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে বিতর্ককে কোন রাজনৈতিক রুপ দেওয়া উচিত নয় বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, `এটিকে দেখতে হবে মুক্তিযুদ্ধ, সংস্কৃতির আলোকে।’

বাংলাদেশের বহু স্থানে বঙ্গবন্ধুর এবং মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত ভাস্কর্য রয়েছে। এসব ভাস্কর্য আমাদের সংস্কৃতির অংশ।কারো বিরোধিতায় ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধ হবে না।

আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক বলেন, “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর আজীবন ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমেই আমরা বাংলাদেশ পেয়েছি। যারাই বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে, তাদের বাংলাদেশে থাকারই কোন অধিকার নেই।”

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতা আসছে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধিতাকারীদের কাছ থেকে।যারাই মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করে না, তারাই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য কোন রাজনৈতিক বিষয় নয়। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য আমাদের সংস্কৃতিই অংশ। এছাড়া হাজার বছর ধরেই ভাস্কর্য আমাদের সংস্কৃতিতে বিদ্যমান।

আজ যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলছে তারাই দুদিন পর দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা মুক্তিযুদ্ধের সব ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলার দাবি করতে পারে, বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতার মতে, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের ইতিহাসে সমার্থক শব্দ। একটিকে বাদ দিয়ে আরেকটি চিন্তা করা যায় না। সামনের বছরেই বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীর সমাপ্তি ও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি।এই সময়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ করার দাবি আদতে বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধকেই অস্বীকার করা। 

জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হলে সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে দাবি করে হানিফ বলেন, “বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতা করার অর্থ বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে যে সমৃদ্ধিশালী দেশে পরিণত করার সংগ্রামে লিপ্ত তাকেই অস্বীকার করা। ধর্ম ব্যবসায়ী এসব দল জনগণকে ধর্মের নামে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তারা যদি তাদের দাবি থেকে সরে না আসে, তবে বাংলাদেশের জনগণই তাদেরকে বাংলাদেশ থেকে বের করে দেবে।”



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭