ইনসাইড আর্টিকেল

বঙ্গভবন কী করছে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 24/08/2017


Thumbnail

প্রধান বিচারপতির সঙ্গে নির্বাহী এবং আইন বিভাগের টানাপোড়েনের মধ্যে সবার দৃষ্টি এখন বঙ্গভবনের দিকে। দেশের শীর্ষ ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি। সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহে রাষ্ট্রপতি এখনো নীরব। ১৬ আগস্ট রাতে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময়ে তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মাহাবুবে আলম। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী সংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায় নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সর্বসম্মত রায়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। ৭৯৯ পৃষ্ঠার এই রায়ে বেশ কিছু মন্তব্য এবং পর্যবেক্ষণ আপত্তিকর বলে আওয়ামী লীগ অভিযোগ করে আসছে। প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের এক সপ্তাহ পর বঙ্গভবন থেকে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। এই প্রেক্ষাপটে গত ২৩ আগস্ট দলের দুজন সিনিয়র নেতা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করেন। শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এবং বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়েই কথা হয়েছে।

আজ থেকে এক মাস ২০ দিনের ছুটিতে গেছে সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ৮ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট খুলবে। বঙ্গভবনের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন সময়ে উদ্যোগ নেবেন রাষ্ট্রপতি। গত ২২ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভীর সঙ্গে বৈঠকে প্রধান বিচারপতি রায় নিয়ে তাঁদের আপত্তি রিভিউ পিটিশন আকারে করার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রধান বিচারপতিকে বিশ্বাস করতে পারছে না। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রিভিউ যদি খারিজ হয়ে যায়, তাহলে সরকারের কিছুই করণীয় থাকবে না। এজন্য সরকার রিভিউ আবেদনের ব্যাপারে দ্বিধা দ্বন্দ্বে আছে। বরং আওয়ামী লীগের ভেতর প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিই ক্রমশ: জোরালো হচ্ছে। তবে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ড. গওহর রিজভীর সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠকে প্রধান  বিচারপতি স্বেচ্ছায় পদত্যাগে অনীহা জানিয়েছেন। বরং তিনি এরকম মনোভাব জানিয়েছেন, ‘যত চাপই আসুক’ তিনি পদত্যাগ করবেন না। এরকম প্রেক্ষাপটে প্রধান বিচারপতিকে অপসারণে রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলকে তদন্তের নির্দেশ দিতে পারেন। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পর এই ক্ষমতা এখন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ তিন বিচারপতির। এই কাউন্সিল প্রধান বিচারপতির অপসারণের তদন্তে কতটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন তা এক বিবেচ্য বিষয়। তাছাড়া সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল যদি তদন্তে প্রধান বিচারপতিকে নির্দোষ ঘোষণা করে, সেটি হবে সরকারের জন্য আরেকটি বিপর্যয়। এর বাইরে রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করে ‘প্রধান বিচারপতিকে দায়িত্ব পালনে’ অসমর্থ ঘোষণা করে অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি হিসেবে কাউকে নিয়োগ দিতে পারেন। রাষ্ট্রপতির এরকম সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যদি প্রধান বিচারপতি প্রকাশ্যে অবস্থান নেয়, সেটি হবে আর এক অঘটন।

বঙ্গভবনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতি সবগুলো বিষয়ই বিবেচনা করছেন। রাষ্ট্রপতি এবং সরকারের ভাবনার মত পার্থক্য খুবই কম। সরকার চাইছে, প্রধান বিচারপতি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করুন। রাষ্ট্রপতিও মনে করছেন, প্রধান বিচারপতি যদি নিজেই সরে যান তাহলে সবচেয়ে ভালো। এজন্যই একটি ক্ষেত্র প্রস্তুত করে রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতিকে বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানাতে চাইছেন। এসব বিষয় গুলো স্পষ্ট হবে, আরও কয়েকদিন পর।

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭