ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

চীনের সম্প্রসারণবাদ রুখতে অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা চাইলো তাইওয়ান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 04/12/2020


Thumbnail

চীন ও অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যিক ইস্যু, দ্বীপসহ বিভিন্ন বিষয়ে উত্তেজনার মধ্যেই তাইওয়ান, সীমান্তে চীনের আক্রমণের হুমকি ও গণতন্ত্র ধরে রাখতে সহযোগিতা চাইলো ক্যানবেরার কাছে, এমন খবর জানা গেছে বৃহস্পতিবার। 

তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ উ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব বেড়ে গেছে এই মূহুর্তে কারণ তাওয়ান সীমান্তে চীনের আগ্রাসন ও কর্তৃত্ব আগের চেয়ে বহুগুণে বেড়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদ মাধ্যম এবিসি জানিয়েছে এসব তথ্য। 

এবিসি’তে দেয়া সাক্ষাৎকারে জোসেফ বলেন, তারা যে কোনও সময় চীনের সামরিক হামলার মুখে পড়তে পারেন, চীনের সম্প্রসারণবাদ তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। জোসেফ উ সবধরণের তথ্য পেতে অস্ট্রেলিয়ার গোয়েন্দা সহযোগিতাও চেয়েছেন।

চীন এরইমধ্যে নিরাপত্তার অজুহাতে নতুন আইন প্রয়োগ করে হংকংকে কোণঠাসা করে রেখেছে। পূর্ব চীন সাগরে এরই মধ্যে নৌ সক্ষমতা বাড়িয়েছে তারা। দক্ষিণ চীন সাগরেও আগ্রাসন চালানোর চেষ্টা চালাচ্ছে দেশটি। ভারতের সঙ্গেও সীমান্ত বিরোধে জড়িয়েছে চীন। 

তাইওয়ানের গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় চীনের সামরিক মহড়ার অভিযোগ করেন জোসেফ। তাদের বিমান উড়তে দেখা যায় মাঝে মাঝে, এমনটাও জানান তিনি।

করোনাভাইরাস মহামারি কীভাবে শুরু হল, তা নিয়ে অনুসন্ধানের আহ্বানে অস্ট্রেলিয়া নেতৃত্ব দেবার এবং অস্ট্রেলিয়ার বিষয়ে চীনের নাক গলানোর অভিযোগ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে আলোচনা শুরু হবার পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে।

কয়েক মাসে, চীন বেশ কয়েকটি বাণিজ্য বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে যা অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতির জন্য বড় রকমের ধাক্কা। এসবের মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ওয়াইন, বার্লি এবং গরুর মাংসসহ প্রায় বারোটি পণ্য চীনে আমদানি করার ওপর শুল্ক আরোপ এবং কিছু পণ্যের আমদানি বন্ধ করে দেয়া।অস্ট্রেলিয়া চীনের এই পদক্ষেপকে "অর্থনৈতিক জবরদস্তি" বলে বর্ণনা করেছে। 

বলা চলে চীনা আগ্রাসনের কবলে এখন অস্ট্রেলিয়াও। অভিযোগ আছে, পর্যটনের নামে লিজ নিয়ে তাদের একটা দ্বীপই বাগিয়ে নেওয়ার ফন্দি আঁটছে চীন। ভারত মহাসাগরে ভারতের সঙ্গে মহড়া দেওয়া নিয়ে আগেই বেজিংয়ের বিরাগভাজন হয়ে উঠেছিল অস্ট্রেলিয়া। তার মধ্যে দ্বীপ নিয়ে টানাপড়েন দু’দেশের তিক্ততায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

অস্ট্রেলিয়ার উত্তরপূর্বে অবস্থিত কুইন্সল্যান্ড প্রদেশটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত বিশ্বে। সেখানকার দ্য গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ বিশ্বের বৃহত্তম প্রবাল প্রাচীর। এ ছাড়াও বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণী, ডেনট্রি বৃষ্টি অরণ্যের জন্য সারাবছর পর্যটকের ভিড় লেগে থাকে সেখানে।

এই কুইন্সল্যান্ডের ম্যাকে শহরের ৩৪ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে রয়েছে কেসউইক দ্বীপ। ২০১৯ সালে কেসউইক দ্বীপের একটি বড় অংশ ৯৯ বছরের লিজে কিনে নেয় চিনা সংস্থা ‘চায়না ব্লুম’। তখনই ঝামেলার সূত্রপাত। অভিযোগ, চীনা সংস্থার হাতে দ্বীপটি আসার পর থেকেই ওই একখণ্ড ভূস্বর্গে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের প্রবেশ বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও বসতি ছেড়ে উঠে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত হুইটসানডেজ ওয়েসিসকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া সরকার। উদ্যানের ২০ শতাংশ চীনা সংস্থার লিজ নেওয়া অংশে পড়ে। ওই এলাকায় কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে শুধু কুইন্সল্যান্ডের কেসউইকই নয়, সেন্ট বিজ, ডে ড্রিমের মতো অস্ট্রেলিয়ার আরও বেশ কিছু দ্বীপ বিভিন্ন চীনা সংস্থার হাতে রয়েছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭