ইনসাইড বাংলাদেশ

বাড়ছে `বিবাহিত ব্যাচেলর` আমলার সংখ্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 04/12/2020


Thumbnail

সদ্য সচিব থেকে অবসর নিয়েছেন একজন মেধাবী আমলা । তিনি একসময় পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ছিলেন । ছিলেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক)  চেয়ারম্যান । এরপর একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন শেষে অবসরে গেছেন । এই আমলা দেশে এক রকম ব্যাচেলর জীবন যাপন করেন । তার স্ত্রী ও পুত্র থাকেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে । স্ত্রী মাঝে মাঝে ঢাকায় আসেন বটে ।  বাংলাদেশে আমলাদের মধ্যে এরকম ব্যাচেলর জীবন যাপনের সংখ্যা বাড়ছে । উচ্চপদে আশা সরকারি কর্মকর্তাদের  বড় অংশ ক্রমশ ‌ দেশে একাকী জীবন যাপন করছেন । তাদের পরিবার পরিজন থাকছেন দূর দেশে ।

ছুটি পেলেই তারা পরিবার-পরিজনের কাছে যাচ্ছেন ঘুরে আসছেন ।অবসরের পর তারা ওই দেশে স্থায়ী আবাস গড়ছেন।  বাংলাদেশে গত এক দশকে অন্তত দেড় শতাধিক আমলা তাদের নিজেদের ভবিষ্যৎ ঠিকানা করছেন বিদেশে । হয় কানাডা না হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা লন্ডনে । বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের একজন আমলা যিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়ে ওই মন্ত্রণালয়েরই দায়িত্ব পালন করছেন ।  ওই আমলার স্ত্রী পুত্র থাকেন লন্ডনে । তিনি এখানে একাকী জীবন যাপন করেন ।

একই রকম ভাবে দেখা যায় যে ,  সচিব পর্যায়ে অন্তত দশ জন রয়েছেন যারা বাংলাদেশে ব্যাচেলর জীবন যাপন করছেন এবং তাদের স্ত্রী পুত্র সন্তান সন্তানাদিরা থাকছেন বিদেশে । একজন সচিব উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা । তার স্ত্রী-পুত্র বিদেশে থাকতেই পারেন । সেটির মধ্যে দোষের কিছু নেই । তাদের সন্তান সন্তানাদিরা উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পড়াশোনা করতেই পারেন ‌। কিন্তু প্রশ্ন হল যে, এই বিদেশে থাকা এবং পড়াশুনার খরচ এর অর্থের জোগান দিচ্ছেন কারা ? প্রশ্ন হচ্ছে তাদের জীবিকা নির্বাহের উৎস  নিয়ে? কারা এই আমলাদের সন্তান সন্তানাদির বিদেশে থাকার অর্থ  খরচের যোগানদাতা ? এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, অনেকেই বিদেশে কষ্টে জীবন যাপন করছেন  । অনেক আমলার স্ত্রী বিদেশে দুই শিফটে চাকরি করে খরচ নির্বাহ করছেন। কিন্তু প্রশ্ন হল যে উচ্চ পদস্থ একজন সরকারি কর্মকর্তার পরিবার কেন বিদেশে থাকবে ?বাংলাদেশকে নিয়ে তাদের কী ধরনের অনিশ্চয়তা এবং অস্বস্তি ? একজন সরকারি কর্মকর্তার প্রধান দায়িত্ব হলো যে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া , দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের রূপ পরিকল্পনা করা । সেই আমলারাই যদি বিদেশে থাকেন , সেই আমলারাই যদি তাদের পরিবার পরিজনদেরকে দেশে রাখতে না পারেন  , তাহলে তারা এদেশের মনুষ্যদেরকে কতটুকু নিরাপদে রাখবেন , সেটি একটি প্রশ্ন বটে ‌‌!

পাকিস্তানের সময় সচিবরা তাদের পরিবার পরিজনদের কে বিদেশে রাখতে পছন্দ করতেন এবং অধিকাংশ সচিবের সন্তান সন্তানাদিরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতেন বিদেশে । এখন আবার সে দ্বারা ফিরে আসছে ।   ইদানীং দেখা যাচ্ছে শুধু সচিব নয় অনেক উপ-সচিব এবং যুগ্ম সচিবের সন্তান সন্তানাদিরা বিদেশে যাচ্ছেন উচ্চ শিক্ষা নিচ্ছেন এবং সেখানে সুযোগ পেয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসও করছেন। বাংলাদেশে এখন বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সচিব রয়েছেন যাদের  ভবিষ্যৎ ঠিকানা হয়তো বিদেশ কারণ তাদের পরিবার পরিজন ওখানে থাকছেন। প্রশ্ন উঠছে এটা কি যৌক্তিক এবং নৈতিকতার মানদণ্ডে সঠিক? তাদের দুর্নীতি বা তাদের অর্থের উৎসের  ব্যাপারটি খতিয়ে না দেখেই বলা যায় যে, এটা কি বাংলাদেশের প্রতি সরকারি কর্মকর্তাদের আনুগত্যের যথাযথ  প্রকাশ !  



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭