টেক ইনসাইড

দুনিয়া বদলানো টোস্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 26/08/2017


Thumbnail

তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ১৯৯০ সালে পার করছিল শৈশব। মাত্র ৩০ লাখ মানুষের কাছে তিন লাখ কম্পিউটার ছিল। ইটের সমান মোবাইল ফোনে তখন মাত্র এক ঘণ্টা কথা বলা যেত। তাতে না ছিল রং, না গতি এবং তথ্য। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের বয়স ছিল মাত্র ছয়, গুগলের সের্গেই ব্রিন মাত্র হাই স্কুলে ভর্তি হলেন। টিম বার্নার্ড লি কেবল ওয়ার্ল্ড ওয়াইড নিয়ে চিন্তা শুরু করেছিলেন।

সেই সময় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান হোসেতে ইন্টারটপ নামে একটি কনফারেন্স হচ্ছিল। ইঞ্জিনিয়ার জন রোমকি ও সিমন হ্যাকেট ভবিষ্যতের ইনটারনেটের ধারণা দিয়েছিলেন একটি টোস্টারের মাধ্যমে। উপস্থিত যারা ছিলেন তারা শুধুই তারের জট দেখতে পাচ্ছিলেন। যন্ত্রটিতে শুধু অফ ও অন করার সুইচ ছিল। পরে সেখানে পাউরুটিকে দাঁড় করানোর জন্য বিজ্ঞানীরা ক্রেন যোগ করেন। এটি ছিল দূরবর্তী স্থান থেকে পাঠানো নির্দেশে চালানো প্রথম ব্যাববহারিক যন্ত্র টোস্টার। এর মাধ্যমে দেখানো হয় দুনিয়ার যে প্রান্তেই থাকুক না কেন মানুষ বৈদুত্যিক নির্দেশ পাঠিয়ে চালাতে পারবে কোনো ব্যবহারিক যন্ত্র। ওই ধারণাই আজকের ইনটারনেটকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করেছে। দৈনন্দিন ব্যবহারিক যন্ত্রে যে এখন ইনটারনেটের যে চল তা সেখান থেকেই এসেছে।

বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তি এতো বেশি এগিয়েছে যে ফ্যাক্টরির মেঝে থেকে শহরের পথে পথে, স্মার্টঘড়ি থেকে থার্মোস্ট্যাটে ছড়িয়ে পড়েছে। এখন আপনি খুব দ্রুত আপনার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন। এমনকি শহরের ট্রাফিক লাইটও বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে জানিয়ে দিতে পারে রাস্তার অবস্থা।

তথ্যপ্রযুক্তির এই অগ্রগতির পেছনে রয়েছে লম্বা ইতিহাস। বহু পথ পাড়ি দিতে হয়েছে তাকে। একবার ভাবুন, নিল আর্মস্ট্রং যখন চাঁদে নেমেছিলেন তাঁর সঙ্গে ছিল মাত্র ৬৪ কিলোবাইট মেমোরির কম্পিউটার। যার ওজন ছিল ৩২ কেজি। আর এখন একটি আইফোনের মেমোরি ২৫৬ গিগাবাইট। যা আর্মস্ট্রংয়ের কম্পিউটার থেকে মিলিয়ন গুণ বড়। কিন্তু ওজন মাত্র ২০০ গ্রাম। কীভাবে সব যন্ত্র হাতের মুঠোয় চলে আসলো?

তথ্যপ্রযুক্তির আবির্ভাবের প্রথম দিকে যন্ত্রের আকার ও ওজন ছোট রাখা ছিল বিজ্ঞানীদের জন্য একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ। যতদিন পর্যন্ত সিলিকন চিপ আবিষ্কার হয়নি বিজ্ঞানীদেরকে ভারী ভারী কম্পিউটার দিয়েই কাজ চালাতে হতো। কিন্তু এখন তাইওয়ানের সেমিকন্ডাক্টার ম্যনুফ্যাকচার কোম্পানি তৈরি করছে এ১০ চিপ। যা ৩.৩ বিলিয়ন ট্রানজিস্টরকে মাত্র ১২৫ বর্গমিলিমিটারের মধ্যে নিয়ে এসেছে। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন ভবিষ্যতের মেমোরি চিপ হয়তো আরও বেশি ছোট হবে।

এ মুহূর্তে দ্রুত গতিসম্পন্ন ইনটারনেট ইঞ্জিনিয়ার ও বিজ্ঞানীদের কাজকে আরও সহজ করে দিয়েছে। আশা করা হচ্ছে ২০২৫ সালে ইউরোপের প্রতিটি গ্রামে ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধা দেওয়া হবে। যার গতি হবে ১০০ এমবিপিএস। হাসপাতাল, রেলস্টেশনে থাকবে ইনটারনেটের সেবা। সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়া হবে পঞ্চম প্রজন্মের ইনটারনেট সেবা।

আগামী পাঁচ বছরে হয়তো এখনকার ছোট ছোট স্মার্টফোন হাস্যকর হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। ডট কম ও ইকমার্স তখন হয়ে উঠবে হাসির বিষয়। সেসময় অগ্রদূত হিসেবে কে নিবে আমাজনের জেফ বেজোসের জায়গা? কে জানে?   

 বাংলা ইনসাইডার/আরএইচবি/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭