ইনসাইড আর্টিকেল

বিজয় মানেই বঙ্গবন্ধু

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 15/12/2020


Thumbnail

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দাঁড়িয়ে আছেন ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। তার সামনে হাজারো দিশেহারা বাঙালী, চোখে মুখে শুধু ভবিষ্যতের শঙ্কা। ১৮ মিনিটের ভাষণে অবশেষে বজ্রকন্ঠে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা, ‘যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’  

রমনার রেসকোর্স ময়দানের লাখ লাখ কণ্ঠে তখন ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হতে থাকে- ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’। ১৮ মিনিট স্থায়ী এই ভাষণে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদেরকে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে মুক্তির ঘোষণা দেন। প্রকৃত অর্থে সেটিই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা।

বঙ্গবন্ধুর ভাষণের প্রায় দুই সপ্তাহ পরেই শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। সর্বস্তরের মানুষ স্বাধীনতার সংগ্রামের জন্য ছাপিয়ে পরেন। জাতির পিতা যদি ঐদিন মুক্তিযুদ্ধের ডাক না দিতেন তাহলে বাংলার বুকে কখনই বিজয়ের লাল সূর্য উঠতোনা। 

তবে এই সংগ্রাম একদিনের না। বঙ্গবন্ধু আস্তে আস্তে তার প্রতিবাদের ভাষায় এই সংগ্রাম গড়ে তুলেছে।  

১৯৪৮-এর আন্দোলন
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানিয়ে আসছিল। পাকিস্তান সরকার এ যৌক্তিক দাবির সম্পূর্ণ বিরোধিতা করে ১৯৪৮ সালেই উর্দুকে একমাত্র সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা করে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান প্রতিবাদ চালাতে থাকেন বঙ্গবন্ধু।  

১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন
১৯৫২ সালে এ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত হয়। তার নেতৃত্বে সেই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষার দাবিতে ঢাকা বিশববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ছাত্ররা একত্রিত হয়। পুলিশ এ জনসমাবেশের উপর গুলি চালানোর ফলে রফিক, সালাম, বরকত, জববারসহ আরো অনেকে শহীদ হয়। এই ঘটনা আন্দোলনকে এক নতুন মাত্রা দান করে এবং রাজনৈতিক গুরুত্ব বহুমাত্রায় বাড়িয়ে দেয়।

১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট সাধারণ নির্বাচন
২১ দফার ভিত্তিতে যুক্তফ্রন্ট ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। যুক্তফ্রন্টের প্রতীক ছিল নৌকা এবং মুসলিম লীগের প্রতীক ছিল হারিকেন। ১৯৫৪ সালের ৭-১২ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মোট আসন ছিল ৩০৯টি। তার মধ্যে ৭২টি আসন পায় হিন্দু ও তফসিলি। ২৩৭টি মুসলমান আসন। ৯টি বাদে সব আসনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করে। পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে র্পূববঙ্গে যুক্তফ্রন্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করে। কিন্তু পাকিস্তান শাষকগোষ্ঠী বাঙালির এই আধিপত্য মেনে নিতে পারেনি। পাকিস্তান শাষকগোষ্ঠী যুক্তফ্রন্ট সাধারণ নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে আন্দোলন আরও তীব্র রুপ ধারণ করে। 

ছয় দফা দাবিসমূহ
ছয় দফা আন্দোলন বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা। ১৯৬৬ সালের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর এক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে “৬ দফা দাবি” পেশ করেন। ৬ দফায় শাসনতান্ত্রিক কাঠামো ও রাষ্ট্রের প্রকৃতি,কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা,  মুদ্রা বা অর্থ-সম্বন্ধীয় ক্ষমতা,রাজস্ব, কর, বা শুল্ক সম্বন্ধীয় ক্ষমতা, বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক ক্ষমতা,আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের ক্ষমতা এই বিষয়গুলো উত্থাপন করা হয়। এই ৬ দফা দাবি বাঙালি জাতির মুক্তিসনদ হিসাবে বিবেচিত হয়।

আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পাকিস্তান আমলে পূর্ব পাকিস্তানে দায়ের করা একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা। তৎকালীন পাকিস্তান সরকার আওয়ামী লীগ নেতা ও পরবর্তীকালে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৩৫জন বিশিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেছিল। ১৯৬৮ সালের প্রথম ভাগে দায়ের করা এই মামলায় অভিযোগ করা হয় যে, শেখ মুজিব ও অন্যান্যরা ভারতের সাথে মিলে পাকিস্তানের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এই মামলাটির পূর্ণ নাম ছিল রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান গং মামলা।

`৬৯ এর গণ-আন্দোলন
আমাদের জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে ঊনসত্তরের গণআন্দোলন এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। জাতির মুক্তিসনদ ছয় দফা দেওয়ার অপরাধে বঙ্গবন্ধু মুজিবসহ সর্বমোট ৩৫ জনকে ফাঁসি দেওয়ার লক্ষ্যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি করা হয় এবং নির্বিঘ্নে পুনরায় ক্ষমতায় আরোহণের এক ঘৃণ্য মনোবাসনা চরিতার্থে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করেন স্বৈরশাসক আইয়ুব খান। 

১৭ জানুয়ারি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের জমায়েত অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের বটতলায় এবং পূর্ব ঘোষিত ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা হয়। ঊনসত্তরের ১৭ জানুয়ারি যে আন্দোলন আমরা শুরু করেছিলাম, ২০ জানুয়ারি শহীদ আসাদের রক্তাক্ত জামা হাতে নিয়ে যে শপথ নিয়েছিলাম, ২৪ জানুয়ারি মতিউর-মকবুল-রুস্তম-আলমগীরের রক্তের মধ্য দিয়ে সেই আন্দোলন সর্বব্যাপী গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করেছিল। ৯ ফেব্রুয়ারি পল্টন ময়দানে শপথ দিবসে স্লোগান দিয়েছিলাম ‘শপথ নিলাম শপথ নিলাম মুজিব তোমায় মুক্ত করব; শপথ নিলাম শপথ নিলাম মা-গো তোমায় মুক্ত প্রিয় নেতা তাঁর যৌবনের প্রায় ১৪টি মূল্যবান বছর পাকিস্তানের কারাগারে কাটিয়েছেন। ২২শে ফেব্রুয়ারি` ৬৯, শেখ মুজিবর রহমানসহ অভিযুক্ত সকলেই ঢাকা সেনানিবাস থেকে মুক্তি লাভ করেন। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির একক এবং অবিসংবাদিত নেতা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন। করব।’১৯৬৯-এর ২৩ ফেব্রুয়ারি ইতিহাসের মহামানব জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পক্ষ থেকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছিল।

৭০ এর সাধারণ নির্বাচন
৭ই ডিসেম্বর থেকে ১৯শে ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে তফসিল ঘোষণা করা হয় এবং শান্তিপূর্ণভাবে দেশব্যাপী এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ ৬ দফা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের পক্ষে রায় প্রদান করে। এই নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদে ৩১০ আসনের মধ্যে ১৬৭ আসনে জয়লাভ করে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের ম্যান্ডেট লাভ করে।
`বাঙালির শাসন মেনে নেওয়া যায় না` এই নীতিতে পাকিস্তানি সামরিক শাসকগণ নির্বাচিত এই জন প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিবন্ধক হয়ে উঠে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলার জাতীয় নেতৃবৃন্দ এর প্রতিবাদে রুখে দাঁড়ায়। শুরু হয় অধিকারের সংঘাত। ছাত্র সমাজ এই আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে। ৭০ এ বঙ্গবন্ধু এক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে পূর্ব বাংলার ম্যাপ অংকিত একটি পতাকা প্রদান করেন। এই পতাকাই পরবর্তীতে বাংলাদেশের পতাকা হিসাবে গৃহীত হয়। ছাত্রদের এই সংগঠন প্রতিরোধ যুদ্ধের প্রস্ত্ততি গ্রহণ করে প্রতিটি জেলা ও মহকুমা শহরে শুরু হয় সামরিক প্রশিক্ষণের মহড়া। জাতীয়তাবাদী এই আন্দোলনে ছাত্র ও যুব সমাজের অংশগ্রহণ জন সমাজকে আরো উৎসাহিত করে তোলে।

৭১ এর অসহযোগ আন্দোলন
নির্বাচনে জয়লাভের পর পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সরকার গঠনে মত দিতে অস্বীকার করেন। একটি রাজনৈতিক দল জনগণের ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের ম্যান্ডেট পেয়েছে। তারা সরকার গঠন করবে, এটাই ছিল বাস্তবতা। কিন্তু সামরিক শাসকগণ সরকার গঠন বা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে এক আলোচনা শুরু করে। কিসের জন্য আলোচনা, এটা বুঝতে বাঙালি নেতৃবৃন্দের খুব একটা সময় লাগেনি। জাতীয় সংসদের নির্ধারিত অধিবেশন স্থগিতের প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু ১লা মার্চ ১৯৭১ দেশব্যাপী অসহযোগের আহবান জানান। সর্বস্তরের জনগণ একবাক্যে বঙ্গবন্ধুর এই আহবানে সাড়া দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের সমস্ত প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে অচল করে তোলে। 
২রা মার্চ ৭১ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের পতাকা প্রদর্শিত হয়। ৩রা মার্চ `৭১ এ রমনা রেসকোর্স (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে) `স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ` এর পক্ষ থেকে `স্বাধীনতার ইসতেহার` পাঠ করা হয়। এই ইসতেহারে `আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি` গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

৭ই মার্চের ভাষণ 
পাকিস্তান সামরিক বাহিনী পরিচালিত সরকার জাতীয় পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে কোন সমাধান না দেওয়ায়, ৭ই মার্চ ১৯৭১ বঙ্গবন্ধু রহমান রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) সমগ্র বাঙালি জাতিকে এক দিকনির্দেশনী ভাষণে সর্বপ্রকার পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্ত্তত হতে আহবান জানান। এই ভাষণে তিনি বলেন, ``আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি, তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইল, ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোল। ......... এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।`` বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ পৃথিবীতে উল্লেখযোগ্য নেতৃবৃন্দের ভাষণগুলির মধ্যে অন্যতম একটি হিসাবে বিবেচিত।
৭ই মার্চের এই ভাষণে বঙ্গবন্ধুর এই নির্দেশ কোন দলীয় নেতার নির্দেশ ছিল না। ছিল একজন জাতীয় নেতার নির্দেশ। এই নির্দেশ দেশের সর্বস্তরের ছাত্র, জনতা ও বুদ্ধিজীবীদের সাথে বাঙালি সামরিক, বেসামরিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী সকলকেই সচেতন করে তোলে। ৭১ থেকে পূর্ব বাংলার সমস্ত প্রশাসনিক কাজকর্ম চলতে থাকে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে।

২৫ মার্চ রাতে ইয়াহিয়া – টিক্কার লেলিয়ে দেয়া সেনাবাহিনী রাতের অন্ধকারে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র হাতে বাংলার নিরীহ নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা চালায় অগ্নিসংযোগ করে বস্তি উজার করে দেয়।

শেখ মুজিব ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন। পাকিস্তানী সৈন্যরা তাকে গ্রেফতার করে প্রথমে নির্মীয়মান সংসদ ভবনে আটক করে রাখে। তারপর করাচি বিমান বন্দর হয়ে লায়ালপুরে মিয়ানওয়ালী জেলে বন্দি করে রাখে। 

৪ এপ্রিল করাচি বিমানবন্দরে বসে থাকা ঐ বন্দি অবস্থার ছবি পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। জেনারেল ইয়াহিয়া ২৮ মার্চ রাতে এক ভাষনে তাকে ‘দেশদ্রোহী’ ও বিশ্বাসঘাতক’ বলে বিচারের কথা জানায়। মিয়ানওয়ালী জেলে থাকাকালে কোর্ট মার্শালে খুব দ্রুততার সঙ্গে তাঁর বিচার হয়। দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের কোন খবরই তাকে জানতে দেয়া হয়নি।

মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয় অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান কারাগার থেকে লন্ডন ও ভারত হয়ে দেশে ফিরে আসেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি। তিনি আত্মনিয়োগ করেন দেশ গড়ার কাজে। ওই বছরই ২৬ মার্চ প্রদত্ত বেতার ও টেলিভিশনের ভাষণে তিনি বলেন, ‘শ্মশান বাংলাকে আমরা সোনার বাংলা করে গড়ে তুলতে চাই।’ কিন্তু তার সে স্বপ্ন সফল হওয়ার আগেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে ঘাতকদের বুলেটের আঘাতে তিনি চিরদিনের মতো বিদায় নিলেন। বিবেকহীন এক প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের ষড়যন্ত্রে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তিনি শহীদ হলেন।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে চুয়ান্নর নির্বাচন, আটান্নর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদান সবকিছুই বঙ্গবন্ধুর সবল নেতৃত্বের জন্য সম্ভব হয়েছে। তার ত্যাগের বিনিময়ে বাঙালীর আজকের এই সোনার বাংলায়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭