নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 01/09/2017
পড়াশোনাকালীন সময়ে সবসময়ই ভালো রেজাল্ট করেছে সুমন। এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ ৫। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ। এই বিভাগেও অনার্সে ১ম শ্রেণি এবং মাস্টার্সে ১ম শ্রেণি অর্জন। পরিবারের ইচ্ছা তাঁদের ছেলে বিসিএস ক্যাডার হবে।
সবসময়ই ভালো রেজাল্ট করা সুমনও আত্মবিশ্বাসী অন্যান্য পরীক্ষার মত বিসিএসেও সে সফল হবে। তাই শুধুমাত্র বিসিএসের জন্যই সে পড়াশুনা করেছে। কিন্তু চারবার বিসিএস দিয়ে দুইবার লিখিততে টিকলেও এখনো চাকরি হয় নি সুমনের। পড়াশুনার জন্য এই সময়ে সুমন অন্য কোনো চাকরিতেও ঢোকে নি। তাই বিসিএস যদি না হয়, কী হবে তাঁর?
অনেক সকালে লাইব্রেরীতে যেয়ে পড়াশুনা, এক সঙ্গে গ্রুপ স্টাডি করা, আবার রাত জেগে পড়াশুনা। বিসিএস মানেই শুধু পড়াশুনা। কিন্তু এত পড়াশুনা করার পরও অনেকে বিসিএসের দৌড়ে টিকে থাকতে পারে না।
অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করার পর একজন চাকরি প্রার্থী সাধারণত সর্বোচ্চ সম্মানসূচক চাকরি পেতে চায়। বাংলাদেশে সেইরকম চাকরি বলতে বিসিএসের চাকরিগুলোকেই বোঝায়। বিসিএসের চাকরিগুলো শুধু সম্মানের দিক দিয়েই নয়, বর্তমানে বেতনের দিক দিয়েও ভালো। একজন চাকরি প্রার্থীর নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তাও নির্ভর করে এসব চাকরিতে। তাই গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্নকারীরা মুখিয়ে থাকে বিসিএসের চাকরির জন্য। কিন্তু সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু থাকায় এবং পরীক্ষার্থী অনুযায়ী সিট কম থাকায় বিসিএস ক্যাডার হওয়া কষ্টকর।
বিসিএস ক্যাডার হওয়া কিছুটা ভাগ্যের ওপরও নির্ভর করে। অনেক সময় দেখা যায় একজন চাকরি প্রার্থী একবার পরীক্ষা দিয়েই বিসিএস ক্যাডার হয়ে যায়। আবার অনেকের দুই তিনবার মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার পরও চাকরি হয় না। যাদের এতবার চাকরির কাছে যেয়েও চাকরি হয় না তাদের মধ্যে সীমাহীন হতাশা ভর করে। অনেক সময় এমনও হয় শুধু বিসিএস ক্যাডার হওয়ার নেশায় সরকারী অন্য কোনো চাকরিও হয় না তাঁদের।
নির্ধারিত ৩০ বছরের মধ্যে সরকারি চাকরি না হলে তখন হতাশাও চিন্তা তাঁদের উপর পুরোপুরি ভর করে। এতদিন বিসিএসের আশায় থেকে তারপর বেসরকারি চাকরি করতেও তাঁদের ইচ্ছা হয় না।
সাধারণত যারা চাকরি করে পড়াশুনা করে তাঁদের বিসিএস হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে ধারণা করা হয়। কারণ তাঁরা পড়াশুনা করার তেমন সময় পায় না। এজন্যই কষ্ট হলেও বেশিরভাগ চাকরি প্রার্থী বেসরকারি চাকরিতে না ঢুকে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য পড়াশুনা করে। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় তখন, যখন সেই স্বপ্ন পূরণ হয় না। বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তাদের সরকারি যেকোন চাকরির বয়স শেষ হয়ে যায়। এক কথায় বিসিএস তাঁদের প্রাণশক্তিও শুষে নিয়ে যায়।
বাংলাদেশে সরকারি চাকরি বিশেষ করে বিসিএসের যেমন নিরাপত্তা রয়েছে বেসরকারি চাকরিতে তেমন নিরাপত্তা নেই। তাই বেশিরভাগ চাকরি প্রার্থীরই লক্ষ্য বিসিএস ক্যাডার হওয়া। এক্ষেত্রে সরকার যদি বিসিএসের মতো অন্যান্য চাকরিতেও সমান নিরাপত্তা ও সম্মানের ব্যবস্থা করতে পারত তাহলে এই সংকট অনেকটাই কমে যেত।
বাংলা ইনসাইডার/এসএম/জেডএ
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭