ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বাইডেন আর যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক সম্পর্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/01/2021


Thumbnail

গেল ৪ বছরে ট্রাম্প প্রশাসন যে উদ্ধত দেখিয়েছে তা বলে শেষ করা যাবে না। ক্ষ্যাপাটে ট্রাম্প এমন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা বিশ্বের বহুদেশের জন্য চপেটাঘাত। সবশেষ করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারা, চীনকে দোষারোপ করা এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত, এসব ঘটনা আরও বেশি জটিলতার সৃষ্টি করেছে। এ ছাড়া, অভিবাসন নীতি, প্যারিস চুক্তি থেকে সরে আসা, শরণার্থী ইস্যু এসব বিষয়ে নানান জটিল সম্পর্ক বিরাজ করছে। মধ্যপ্রাচ্যে দখলদারিত্ব বাড়ানো, ইরানকে কোণঠাসা করা এসব নিয়েও বিস্তর ঝামেলা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্যদের।

বাইডেন এসব ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে গেল ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। আর এই বিষয়গুলো নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হলো তাঁর প্রধান কাজ। তাহলে হয়ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈশ্বিক সম্পর্কের জটিল সমীকরণ বদলে যেতে পারে। 

ডোনাল্ড ট্রাম্প নিরাপত্তা হুমকির কারণ দেখিয়ে প্রধানত যেসব মুসলিম দেশ থেকে আমেরিকায় ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন, সেগুলো প্রত্যাহার করে আবারও অনুমতি দেয়া, প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে আবারও যোগদান, করোনা মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সার্বিক সহযোগিতা করাই যুক্তরাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হওয়া দরকার বলে মনে করছেন অনেকে। 

বাইডেন অবশ্য শপথ নেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু উল্লেখযোগ্য নীতি পাল্টে দেয়ার কাজ শুরু করেছেন। শপথ নেয়ার পর হোয়াইট হাউসে যাওয়ার সময় তিনি টুইটে বলেন, "আমাদের সামনে যে সংকট রয়েছে সেটি সামাল দিতে অপচয় করার মতো কোন সময় নেই।"

কানাডার আলবার্টা প্রদেশ থেকে মনটানা আর সাউথ ডাকোটার মধ্যে দিয়ে টেক্সাস পর্যন্ত তেলের পাইপলাইন বসানোর এক বিতর্কিত প্রকল্পও তিনি ক্ষমতা হাতে নেয়ার কিছুদিনের মধ্যেই বাতিল করে দেবেন এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। কিস্টোন এক্সএল নামে তেল ও গ্যাস পাইপলাইন বসানোর এই প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নেবার জন্য ২০১৭ সালে একটি নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প সই করার পর থেকে বিরোধীরা এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করে আসছেন গত কয়েক বছর ধরে।

অভিবাসন নীতির ক্ষেত্রে বাইডেনের আরেকটি বড় প্রতিশ্রুতি হলো তিনি দায়িত্ব নেবার পর প্রথম দিকেই কংগ্রেসে একটি বিল উত্থাপন করবেন, যার মাধ্যমে নথিবিহীন এক কোটি দশ লাখের ওপর অভিবাসীকে নাগরিকত্ব দেবার পথ প্রশস্ত হবে।

নতুন প্রেসিডেন্ট বলেছেন আমেরিকার মিত্র দেশগুলোর সাথে তিনি দ্রুত যোগাযোগ করবেন, বিশেষ করে যাদের সাথে গতকয়েক বছরে আমেরিকার সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে এবং "আমেরিকা তাদের পেছনে রয়েছে" এই প্রতিশ্রুতি তাদের দেবেন।

বাইডেন বলেছেন আমেরিকা " আবার বিশ্বে নেতৃত্ব দেবার জন্য যে তৈরি সেটা তাকে প্রমাণ করতে হবে, শুধু ক্ষমতার দৃষ্টান্ত দেখিয়ে নয়, বরং দৃষ্টান্ত দিয়ে ক্ষমতাকে প্রমাণ করতে হবে।"

ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট মেয়াদের আরেকটি বহুল আলোচিত প্রকল্প - আমেরিকা আর মেক্সিকোর মাঝখানে দেয়াল তোলা- সেই নির্মাণ কাজও বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাইডেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি বলেছেন এই প্রকল্প "অর্থের অপচয়" এবং "যেখানে প্রকৃত হুমকি মোকাবেলায় অর্থের প্রয়োজন এই প্রকল্পের কারণে সেসব ক্ষেত্রে অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হচ্ছে না"। শপথ নেয়ার পরপরই জারি করা নির্বাহী আদেশে তিনি এই প্রকল্পের অর্থায়ন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন।

বাইডেনের হাত ধরেই এসব সঙ্কটের সমাধান হবে এমন আশা করছেন অনেকে। তাহলে হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্যান্য দেশগুলোর সম্পর্কের যে অবনতি হয়েছে তা আবার ফিরে আসবে। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭