নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 26/02/2021
২০০১ সালের অক্টোবরের নির্বাচনে বিজয়ী হয় বিএনপি-জামায়াত জোট। এই বিজয়ের পেছনে ভারতের সমর্থন ছিলো বলে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে তারেক জিয়া দিল্লিতে গিয়ে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন এবং সেই বৈঠকে তিনি বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচনে বিজয়ী হলে ভারতের জন্য কি কি করবেন সে ব্যাপারে মুচলেকাও দিয়েছিলেন। আর এর প্রেক্ষিতেই ভারত ওই নির্বাচনে বিএনপিকে আসার ক্ষেত্রে সহযোগীতা করেছিলো।
আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার ভাষণে বলেছেন যে, ২০০১ এর নির্বাচনে ভারতের ‘র’ এর সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত জোট গোপনে আতাত করেছিলো। কিন্তু নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তারেক জিয়া ভিন্ন কৌশল গ্রহণ করেন। ভারতের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হলেও অর্থ এবং নানা কৌশলের জন্য তারেক জিয়া ভারতের পাশাপাশি ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের সঙ্গেও সম্পর্ক তৈরি করেন। অনেকে মনে করেন যে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর থেকে অর্থ প্রাপ্তির প্রেক্ষিতেই তারেক জিয়া ভারতের জঙ্গি এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীর সঙ্গে এক ধরণের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। আর সেই সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের ব্যাপক সমর্থন এবং আর্থিক সহায়তা ছিলো বলে জানা যায়।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তারেক জিয়ার প্রধান লক্ষ্য ছিলো বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন সেটা যেখান থেকেই হোক না কেন। আর জঙ্গি নেটওয়ার্ক এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সম্পর্ক স্থাপন করে তারেক জিয়া আর্থিকভাবে যেমন লাভবান হয়েছিলেন তেমনি আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে নির্মূল করার পরিকল্পনা করেছিলেন। তারেক জিয়ার ফর্মুলা ছিলো খুবই পরিস্কার যে বাংলাদেশে যদি জঙ্গি নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করা যায় তাহলে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করা যাবে এবং জঙ্গিদের দিয়ে আওয়ামী লীগকে আক্রমণ করলে সেটির দায়িত্ব বিএনপির ওপর পরবে না। এই সময় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র সরবরাহের এক মিশনে নামে হাওয়া ভবন এবং তারেক জিয়া। আর সেই মিশনে বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহৃত হতে থাকে। চট্টগ্রাম বন্দর এবং মোংলা বন্দরকে অস্ত্র চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়ে। আর এই অস্ত্র ধরা পরার ঘটনাটি ধরা পরে একজন সাহসী পুলিশ কর্মকর্তার উদ্যোগে। এই ঘটনায় বিএনপি বিব্রত হয়েছিলো এবং এর ফলে ভারতের সঙ্গে বিএনপির যে নির্বাচনী সম্পর্ক ছিলো সেই সম্পর্কে ছেদ পড়েছিলো। ২০০২ সাল থেকেই ভারত জেনেছিলো যে তারেক জিয়ার সঙ্গে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এবং বিচ্ছিন্নতাবদীদের পেছনে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার মদদ রয়েছে। এ নিয়ে ভারত বাংলাদেশের কূটনৈতিক অঙ্গনে একাধিকবার দেনদরবার হয়েছে কিন্তু বিএনপি এ বিষয়ে পাত্তা দেয়নি। হাওয়া ভবনের একটি ধারণা তৈরি হয়েছিলো যে তারা ক্ষমতায় আছে এবং যেকোনো প্রকারে তারা ক্ষমতায় চিরস্থায়ী করবে।
এখন ভারতকে চাপে ফেলতে হবে যাতে ভারত কখনও বাংলাদেশের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে না পারে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনা ছিলো হাওয়া ভবনের জন্য বিব্রতকর। এই অস্ত্র আটকের পরপরই বিএনপির ব্যাপারে একটি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ শুরু করে ভারত। অনেকেই মনে করেন যে, ১০ ট্রাক অস্ত্রের ঘটনাটি উন্মোচিত হয় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার কারণে। ভারত ওই অস্ত্র আমদানির বিষয়টি জেনেছিলো এবং ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে জানিয়েছিলো যে অস্ত্র আসছে ও ট্রাকগুলোকে পরীক্ষা করার জন্য। বিএনপি এই ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলো কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটি ধামাচাপা দিতে পারেনি। আর এর মধ্যে দিয়ে একটি বিষয় আন্তর্জাতিক মহলে প্রমাণিত হয়ে যায় সেটি হলো তারেক জিয়া অর্থের জন্য সবকিছু করতে পারে।
পর্ব-৬: দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেই চাকরি হারালেন খালেদা জিয়ার সচিব
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭