ইনসাইড বাংলাদেশ

অপ্রতুল ত্রাণ, বাড়ছে রোগ-বালাই

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 12/09/2017


Thumbnail

নির্যাতনের শিকার হয়ে ভিটে মাটি ছেড়ে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে শরণার্থী হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে লাখো রোহিঙ্গা। নিরন্তর চলছে টিকে থাকার লড়াই। থাকার পর্যাপ্ত জায়গা নেই, নেই বিশুদ্ধ পানি এবং স্যানিটেশনের সুবিধা। প্রাদুর্ভাব ঘটেছে নানা রোগ-ব্যাধির। মানবেতর দিন পার করছে তারা। টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রইক্ষ্যংয়ের পুটিবনিয়ায় পাহাড়ি ভূমিতে সদ্য গড়ে ওঠা রোহিঙ্গা শিবিরের দৃশ্যটা এমনই। 

রইক্ষ্যংয়ের পুটিবনিয়ার নতুন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অন্তত ১০ হাজার রোহিঙ্গা পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে পয়ঃনিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। তারা যত্রতত্র খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগ করছে রোহিঙ্গারা। এতে পরিবেশ নষ্টের সঙ্গে সঙ্গে নানা রোগ-ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় সেখানে পর্যাপ্ত স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করা খুবই জরুরি হয়ে পরেছে। বিশুদ্ধ পানিরও ব্যবস্থা করা দরকার। 

ইতিমধ্যে পানি বিশুদ্ধ সরবরাহের কাজ করতে দেখা গেছে রেডক্রিসেন্টের কর্মীদের। সংগঠনটির সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান গনমাধ্যমকে বলেন, তারা দিনে ১০ হাজার লিটার পানি বিশুদ্ধ করছেন। আর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র দিচ্ছে দিনে ৭ হাজার লিটার। ফলে এ দুই সংস্থা যে পানি রইক্ষ্যং শিবিরে দিচ্ছে তা মাথাপিছু ২০০ মিলিলিটারের মতো। বেশিরভাগ পরিবার এই পানি পাচ্ছে না। 

রেডক্রিসেন্টের যুব সদস্য সানাউল করিম বলেন, এখানে পানি এত দুষ্প্রাপ্য যে, তারা পানি সরবরাহ করতে এসে নিজেরাই পান করতে পারিনি দিনের অর্ধেক সময়। 

এদিকে, বিশুদ্ধ পানি ও স্যনিটেশন ব্যবস্থা বাদে, সবচেয়ে বড় যে সমস্যায় ভুগছে রোহিঙ্গারা তা হল ত্রাণের অপ্রতুলতা। ইতিমধ্যে প্রায় চার লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা, তবে এদের জন্য যে পরিমান ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে তা অনেক কম। বিভিন্ন সংগঠন থেকে ত্রাণ ততপরতা চালান হলেও তা পোষাচ্ছে না। মালয়েশিয়া প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে। 

এছাড়া তুরস্ক সরকারের পাঠানো এক হাজার টন ত্রাণ কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের দেখে বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনে এরদোয়ান। মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ১০ হাজার টন ত্রাণ পাঠানোর কথা রয়েছে তুরস্কর। 

আবার, ডেনমার্ক সরকার জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)-কে ২৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ডব্লিউএফপি ও জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর মাধ্যমে ডেনিস ত্রাণ সহায়তা শরণার্থীদের কাছে পৌঁছাবে। ইরান থেকেও খুব শিগগিরই তারন পাথানোর কথা রয়েছে। কিন্তু এগুলো যথাযথভাবে বন্টন না হলে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সমস্যা দূর হবে না। অনেক এইসব ত্রাণ সহয়তা লুটপাট হতে পারে বলেও সনহকায় রয়েছেন। 

রোহিঙ্গা শরণার্থী পরিস্থিতি দেখতে কক্সবাজারের উখিয়ায় গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৯টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকা থেকে রওনা হয়ে সোয়া ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার পৌঁছান। তারপর সেখান থেকে সড়কপথে উখিয়ায় কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে যান। 

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং ত্রাণসামগ্রী বিতরণের কথা প্রধানমন্ত্রী। সেখানে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা, অস্থায়ী নিবাস তৈরি, সাময়িক পুনর্বাসন, ভবিষ্যত করণীয় এবং তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনাও করবেন বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে, মিয়ানমারকে তাদের নাগরিক ফেরত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলা ইনসাইডার/আরএ/জেডএ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭