নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 01/03/2021
ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি, পবিত্র পতাকা। এদেশের সব মানুষই চেয়েছিলো মুক্তি। পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর শোষণ নিপীড়ন থেকে স্বাধীনতা। আর এ কারণেই জাতির পিতার ডাকে এদেশের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তিযুদ্ধে। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ আমাদের স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিল। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে গড়ে তুলেছিল মিত্রতা। এরাই রাজাকার, আলবদর, আল-শামস, দালাল। এদেশের গণহত্যা, ধর্ষণ, লুন্ঠন হয়েছিল এদের সহযোগিতায়। এই দালালরাই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে চিনিয়ে দিয়েছিলো। এরা তাই যুদ্ধাপরাধী। অথচ বাংলাদেশে ৭৫ এর পর বিভিন্নভাবে এই রাজাকার এবং যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন করা হয়েছিলো। বাংলাদেশে রাজাকারদের কারা কিভাবে পুনর্বাসন করেছে, তা নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের নতুন ধারাবাহিক-
১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের রক্তাক্ত অধ্যায়ের পর সবচেয়ে লাভবান ব্যক্তিটির নাম জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুর রক্তের উপর দিয়েই সেনাপ্রধান হন জিয়া। ৭ নভেম্বরে কর্ণেল (অব:) তাহেরকে দিয়ে একটি অভ্যুত্থান নাটক করে নির্মমভাবে হত্যা করেন, তার প্রতিপক্ষদের। যারা আসলে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এরপর জিয়া প্রধান আইন প্রশাসক হন। অস্ত্রের মুখে বিচারপতি সায়েমকে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে সরিয়ে নিজেই রাষ্ট্রপতির মসনদে বসেন। জিয়া ছিলেন বাংলাদেশে রাজাকার পুনর্বাসনের প্রধান ব্যক্তি। যুদ্ধাপরাধী রাজাকারদের পুনর্বাসনে তিনি যা করেছিলেন, তার ছোট্ট একটা ফিরিস্তি এখানে দেয়া যায়:
১. দালাল আইন বাতিল করেন।
২. রাজাকার-আলবদরদের বিচার বন্ধ করে দেন।
৩. দালাল আইনে আটক ও দণ্ডিত সকলকে জেল থেকে মুক্ত করেন।
৪. যুদ্ধাপরাধের শিরোমণি নরঘাতক গোলাম আযমকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।
৫. সংবিধানে সংরক্ষিত ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ থাকার বিধান বাতিল করেন।
৬. জামাত সহ সব স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে রাজনীতি করার সুযোগ দেন।
তবে জিয়ার রাজাকার পুনর্বাসনের সবচেয়ে বড় ঘটনা ছিলো রাজাকার প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ। ২৬ জুন ১৯৭৮ সাল ছিলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক কলঙ্কিত দিন। জিয়া ঐ দিন প্রধানমন্ত্রী করেন মশিউর রহমান (জাদু মিয়া) কে। জাদু মিয়া ছিলেন স্বাধীনতার বিরুদ্ধে। পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদারদের পক্ষে। ১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় অর্জনের ৬ বছরের মধ্যে একজন স্বাধীনতাবিরোধী প্রধানমন্ত্রী হওয়াটা ছিলো কলঙ্কের এবং লজ্জার। জাদু মিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ১৯৭৯ সালের ১৭ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন। এরপর জিয়া প্রধানমন্ত্রী করেন আরো বড় রাজাকারকে। মুসলীম লীগ নেতা শাহ আজিজুর রহমান রাজাকার নেতা ছিলেন। ১৫ এপ্রিল ১৯৭৯ সালে তাকে প্রধানমন্ত্রী করেন জিয়া। এরশাদের ক্ষমতা দখল পর্যন্ত রাজাকার শাহ আজিজুর রহমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
এভাবেই মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করেছিলেন জিয়া। পুনর্বাসন করেছিলেন রাজাকারদের।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭