ইনসাইড বাংলাদেশ

আমলারা কি আইনের উর্ধ্বে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 04/03/2021


Thumbnail

জামালপুরের বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত সাবেক জেলা প্রশাসককে বিভাগীয় শাস্তি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বিভাগীয় শাস্তিতে তাকে এক গ্রেড পদাবনমন করা হয়েছে। একটি তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে তাকে এই শাস্তি দেয়া হয়। তার এই শাস্তির সুপারিশ রাষ্ট্রপতিও অনুমোদন দিয়েছেন।

আহমেদ কবীর ছিলেন জামালপুরের ডিসি। জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালনের সময় তিনি তার অফিসের এক নারী কর্মচারীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়ান। তার এবং ঐ নারীর অন্তরঙ্গ ভিডিও ফাঁস হলে সারাদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের ফৌজদারি কার্যবিধি এবং পেনাল কোড অনুযায়ী, এ ধরনের অনৈতিক যৌনাচার শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অথচ আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কোনো মামলা হয়নি। তার অনৈতিক কর্মকান্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাকে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর প্রত্যাহার এবং সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি। বিভাগীয় মামলার তদন্তে তাকে তিন বছরের জন্য এক গ্রেড নীচের বেতন স্কেলে নামিয়ে দেয়ার সুপারিশ করা হয়। উল্লেখ্য যে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ তে দুই ধরনের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। 

আহমেদ কবীরকে গুরুতর অপরাধে সবচেয়ে কম শাস্তি দেয়া হয়েছে। গুরুতর অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসর। আহমেদ কবীরের এরকম নৈতিক স্খলন জনিত অপরাধের পরও তিনি কিভাবে সরকারি চাকরিতে বহাল থাকেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এরকম একজন কর্মকর্তা জনগণকে কি ধরনের সেবা দেবেন, সে প্রশ্নও করা হচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে। শুধু আহমেদ কবীরের ঘটনা নয়, সম্প্রতিক সময়ে আমলাদের দায়মুক্তি দেয়ায় এক অনাকাঙ্ক্ষিত সংস্কৃতি শুরু হয়েছে। এর আগে সাবেক স্বাস্থ্য সেবা সচিব আসাদুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও তা এগোয়নি। প্রতারক শাহেদ গ্রেফতার হলেও সচিব থাকেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। একাধিক আমলার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ বাক্সবন্দী হয়ে আছে। অনেক ক্ষেত্রেই আমলাদের দুর্নীতি ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ উঠছে।

বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী আইন সকলের জন্য সমান। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে তা কি এখন প্রযোজ্য? আহমেদ কবীরের ঘটনার পর সংগত কারণেই এই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ একজন নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধ করে যদি শুধু এক পদ ডিমোশন পান, তাহলে আইন তাদের জন্য প্রযোজ্য কিনা সে প্রশ্ন উঠতেই পারে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭